
		গত কোরবানি ঈদে মুক্তি পাওয়া আলোচিত ছবি ‘এশা মার্ডারঃ কর্মফল’ ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে বৈশাখী অনলাইনের মুখোমুখি হয়েছিলেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কান চলচ্চিত্র উৎসবের বহুল আলোচিত বাংলাদেশি ছবি ‘রেহানা মারিয়াম নুর’সহ আরও কিছু প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দিয়েছেন এই অভিনেত্রী। আজ প্রকাশিত হচ্ছে বৈশাখী আলাপ’ এর প্রথম পর্ব।
বৈশাখী অনলাইন-‘এশা মার্ডারঃ কর্মফল’ এর শুরুর গল্পটা বলুন।
আজমেরী হক বাঁধনঃ শুরুটা সাত আট বছর আগে। সানী সারোয়ার ভাই অন্য একটা গল্প নিয়ে যোগাযোগ করেছিলেন। সেটা সহযোগি চরিত্র ছিল। কিন্তু নারী প্রধান বা মূল চরিত্র ছিল না। আমি একটা অনুরোধ করেছিলাম। সেই ছবিটা করা না হলেও অনুরোধটা রেখেছিলেন তিনি অনেকদিন পর। অনুরোধটা ছিল ক্যারেকটার পোট্রেট করতে কোনো বাধা যেন না পাই। আমি চেয়েছিলাম নারী প্রধান বা ভিন্নধর্মী গল্পের ছবি ঈদে মুক্তি পাক। এমন গল্পের ছবি দিয়েই আসলে বাংলা ছবির জগৎটা বদলে দেয়া সম্ভব। বানিজ্যিকভাবে সফল হলে আরও ভালো।
বৈশাখী অনলাইন-এশা মার্ডার কর্মফল তো গত ঈদে মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল? নারী প্রধান চরিত্র বা গল্পের আইডিয়াটা কী ‘রেহানা মারিয়াম নুর’ থেকে পাওয়া?
আজমেরী হক বাঁধন-হ্যা। এশা মার্ডার ঈদেই মুক্তি পেয়েছে তবে এ বছর। মুক্তিরও কিছু যন্ত্রণা থাকে না? আবার আলোচিত হবারও যন্ত্রণা থাকে। আমি চাই নি রেহানা মারিয়াম নুরের মধ্যে আটকে থাকতে। রেহানা মারিয়াম নুর পঞ্চাশ বছরে একটাই হয় যা কান চলচিত্র উৎসবে অফিশিয়ালি সিলেক্ট হয়। রেহানা মারিয়াম নুরে আটকে না থেকে আমি বিখিন্ন ধরনের ছবি করেছি। ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেন নি’ বা ‘খুফিয়া’র মতো ছবি করেছি,‘গুটি’র মতো সিরিজও করেছি।
বৈশাখী অনলাইন-রেহানা মারিয়াম নুর নিয়ে আলোচনা বা যন্ত্রণার কথা না হয় বুঝলাম। মুক্তির যন্ত্রণাটা একটু ভেঙ্গে বলুন।
আজমেরী হক বাঁধন- পরিচালক সানী সানোয়ার কিংবা প্রযোজককে সবাই চেনেন। রাজনৈতিক বাস্তবতার কারণে তারা সামনে আসতে পারেন নি। এশা মার্ডার কর্মফল ছবির কোনো প্রচারণাও হয় নি। যা করেছি আমরা মানে ছবির অভিনেতা অভিনেত্রীরা করেছি। শুটিংয়ে এবং প্রচারণায় এত বেশি হেল্প পেয়েছি সহকর্মীদের যা ভোলার নয়।
বৈশাখী অনলাইন-পরিচালক সানী সানোয়ার পুলিশে ছিলেন,এশা মার্ডারে আপনি এএসপি লীনার চরিত্রে অভিনয় করেছেন। বাস্তবের পুলিশ আর পর্দার পুলিশের পার্থক্য কতটা? আপনার ব্যক্তিজীবনে পুলিশী অভিজ্ঞতা কী বলা সম্ভব?
আজমেরী হক বাঁধন-আমার জীবনে পুলিশী অভিজ্ঞতা খুবই খারাপ, জঘন্য,আজীবন বয়ে বেড়ানোর মতো এক ট্রমা বা দুঃস্বপ্নের নাম। আমার প্রাক্তন স্বামী যিনি সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্খায় যার ব্যাচমেটরা ছিল তিনি কী না করেছেন? পুলিশ আমাদের হুমকি দিয়েছে, আমাকে গ্রেফতারের ভয় দেখিয়েছে। আমার ভাইদের ড্রাগ দিয়ে ধরিয়ে দেবার কথা বলেছে। এসব ২০১৪ সালের ঘটনা। এরপর হয়তো আমি ক্ষমতার কাছাকাছি আসতে পেরেছি, আমার ফোন করতে পারার মতো সামর্ধ্য হয়েছে মানে আমাদের যেমন ‘ফোন কালচার’ আছে। তখন পুলিশকে আমিও বলতে পেরেছি।
আর জুলাই আন্দোলনের যে পুলিশ তারা তো ভয়াবহ কুৎসিৎ। আমি চাই না পুলিশ কোনো বাহিনী বা রাজনৈতিক দল বা ক্ষমতাসীনদের দ্বারা প্রভাবিত হোক। আমাদের টাকায় যে বুলেট কেনা হয়েছে জুলাইতে সেটা আমাদের দিকেই ছোঁড়া হয়েছে। রাষ্ট্র নিজেই যখন সন্ত্রাসী হয়, যখন খুন করতে শুরু করে মানে খুনী হয় পুলিশকে আমরা সেই জায়গাতেও দেখেছি। তাদের কর্ম দিয়ে মানুষের আস্থা পুনুরুদ্ধার করতে হবে। আমরা চাই পুলিশ মানুষের বন্ধু হোক আমাদের প্রতিপক্ষ না হোক
মন্তব্য করুন