
জেমস গান পরিচালিত ‘সুপারম্যান’ সুপারহিরো চরিত্রের এক সতেজ ও হৃদয়গ্রহী প্রত্যাবর্তন হিসেবে সমালোচকদের প্রশংসা কুড়িয়েছে। ডেভিড কোরেনসওয়েট অভিনীত এই ছবিটি সুপারম্যানের মূল সত্ত্বাকে তুলে ধরেছে, যা সাম্প্রতিক সময়ের অন্যান্য কঠোর ও অকৃত্রিম চিত্রায়ণ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন।
চলচ্চিত্রটি প্রমাণ করে সুপারম্যানের ক্ষমতা অকল্পনীয় হলেও এর আসল সারমর্ম একজন সত্যিকারের ভালো মানুষ যদি এই ক্ষমতা পেত তবে কী হতো। নিভা হাওয়েল এবং প্রুইট টেলর ভিন্স অভিনীত মা ও পা কেন্টের চরিত্রগুলি ক্লার্ককে একজন সৎ ও সহানুভূতিশীল মানুষ হিসেবে গড়ে তুলেছে, যিনি নিরীহদের বাঁচানোকে ভিলেনদের পরাজিত করার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন।
ছবিটিতে সুপারম্যানকে ‘মানবতার প্রতীক’ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে, যা আজকের বিশ্বে প্রায় অমানবিক মনে হতে পারে এমন এক ধরনের বিশ্বাস ও দয়াকে উপস্থাপন করে।
সাম্প্রতিক সুপারহিরো চলচ্চিত্রগুলোর ব্যর্থতার ভিড়ে ‘সুপারম্যান’ তার নিজস্ব সততায় বিশ্বাস রাখার সাহস দেখিয়েছে। এটি কোনো বিপ্লবী চলচ্চিত্র না হলেও এটি সুপারম্যান চরিত্রটিকে কেন এত প্রিয় এবং প্রভাবশালী করে তোলে তার মূল শিকড়ে ফিরে গেছে। কোরেনসওয়েট ক্লার্ক কেন্ট/সুপারম্যান চরিত্রে অনবদ্য অভিনয় করেছেন।
নিকোলাস হল্টের লেক্স লুথর চরিত্রটিও সমানভাবে প্রশংসিত হয়েছে, যা দীর্ঘকাল পর একজন প্রকৃত ‘হেটার-কোডেড’ ভিলেনের অভাব পূরণ করেছে। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিকটি হলো, ছবিতে ফিলিস্তিন-ইসরায়েল সংঘাতের স্পষ্ট উল্লেখ। বোরাভিয়া নামের একটি ইউরোপীয়ান ধাঁচের সামরিক শক্তিধর দেশ জারহানপুর নামের একটি আরব রাষ্ট্রকে ‘স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত করার’ অজুহাতে আক্রমণ করে, যদিও তাদের আসল উদ্দেশ্য ছিল ভূমি দখল করে লেক্স লুথরের সাথে ভাগ করে নেওয়া। ছবিতে এই সংঘাতের সরাসরি দৃশ্যপট এবং শিশুদের দুর্দশার চিত্র গাজার ওপর আক্রমণের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। যদিও এই স্পষ্ট রাজনৈতিক বার্তা চলচ্চিত্রটির প্রচার বাড়িয়েছে, এর পেছনের উদ্দেশ্য নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে।
তবুও, ‘সুপারম্যান’ একটি চলচ্চিত্র হিসেবে প্রশংসার যোগ্য যা তার মূল্যবোধের প্রতি কোনো দ্বিধা বা লজ্জা প্রকাশ করে না। এটি এমন একটি সুপারহিরো চলচ্চিত্র যা সত্যিই যত্নশীল হতে লজ্জাবোধ করে না।
মন্তব্য করুন