
একাধারে নৃত্যশিল্পী, কোরিওগ্রাফার, ইনফ্লুয়েন্সার রুহুল আমিন। নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেছেন প্রায় একশোরও অধিক সিনেমায়, কোরিওগ্রাফার হিসেবে একশোর কাছাকাছি বিজ্ঞাপনে কাজ করেছেন । সাম্প্রতিক সময়ের ভাইরাল ‘তান্ডব’ সিনেমার ‘লিচুর বাগান’ গানে কোরিওগ্রাফার হিসেবেও যৌথভাবে কাজ করেছেন ভারতের বাবা যাদবের সাথে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ফ্যান-ফলোয়ারের সংখ্যাও ঈর্ষণীয়, প্রায় দুদশক ধরে আছেন নাচের সাথে, পেরিয়েছেন নানা চরাই-উৎরাই। তার সাথে আলাপ-
বৈশাখী অনলাইন-শুরুটা হয়েছিলো কিভাবে?
রুহুল আমিন-স্টেজে পারফরম্যান্স দিয়েই আমার শুরু, আমি মূলত বিয়ে বাড়ির অনুষ্ঠানে নাচ করতাম, একদিন এক বড় ভাই আমার নাচের ব্যাপক প্রশংসা করে ড্যান্স গ্রæপ ‘ঈগল’ এর সাথে যোগাযোগ করতে বললো। এরপর তাদের সাথে কাজ শুরু করি, এভাবেই এই পথে পথচলা, তারপরও তো নিয়মিতই কাজ করছি, এখনো চলছে। নাচের জন্য আমাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে, অনেক কষ্ট করেছি।
বৈশাখী অনলাইন-সিনেমা, নাটক, বিজ্ঞাপন, মিউজিক ভিডিও, স্যোশাল ইনফ্লুয়েন্সার ভার্সেটাইল এক্সপেরিয়েন্স আপনার, এখন পর্যন্ত কতগুলো কাজ করেছেন?
রুহুল আমিন--সংখ্যা তো ওভাবে মনে নাই তবে একশোর অধিক সিনেমায় নৃত্যশিল্পী হিসেবে কাজ করেছি, এখন তো নিজেই কোরিওগ্রাফার, সে হিসেবে এবছরও বেশকিছু সিনেমায় কাজ করেছি। সংখ্যায় বিজ্ঞাপনও একশ হবে, নাটক, মিউজিক ভিডিওতে নিয়মিতই কাজ করছি। চরকি, বঙ্গ, হৈচৈ তাদেরও অনেক প্রোমোশন আমি করে দিয়েছি, সংখ্যাটা মনে রাখা হয়নি। নতুন কাজ হলেই মাঝে মাঝে ওনারা আমাকে নক দেন, আমি করে দেই।
বৈশাখী অনলাইন-‘লিচুর বাগান’ গানের কোরিওগ্রাফার ছিলেন, আপনার সাথে যৌথভাবে ভারতের একজনও ছিলো, কেমন ছিলো অভিজ্ঞতা?
রুহুল আমিন--আসলে সিনেমায় ভালো বাজেট হলে ভালো কাজ করা যায় তার প্রমাণ ‘লিচুর বাগান’। রাফি ভাইয়ের এই কাজে ভারতের বাবা যাদবের সাথে কাজ করেছি। এর আগেও রাজ ভাইয়ের ‘ওমর’ সিনেমায় ‘ভাইরাল বেবি’ গানটিও ভারতের ম্যাক এর সাথে যৌথভাবে করেছি। ভারতীয়রা আসলে খুব প্রফেশনাল ওরা কাজটাকে খুব ভালোবাসে। বলে রাখি আমি কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট সুপারস্টার বিরাট কোহলির সাথেও কাজ করেছি, ওটা রয়েল চ্যালেঞ্জার ব্যাঙ্গালুরু-র একটা প্রমোশন ছিলো। ভারতের অনেক টিমের সাথেই আমি কাজ করেছি। তবে আমাদের সিনেমায় অনেক সময় বাজেটের স্বল্পতার কারণে ভালো কাজ হয়না, সেক্ষেত্রে বিজ্ঞাপন ভালো, বাজেট ভালো কাজও ভালো হয়।
বৈশাখী অনলাইন-নৃত্যশিল্পী বলেন, কোরিওগ্রাফার বলেন কাজের ক্ষেত্রে আপনাদের চ্যালেঞ্জ কেমন?
রুহুল আমিন-অনেক চ্যালেঞ্জ এগুলা বলে শেষ করা যাবে না। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ এসব কাজে প্রফেশনালিজমের খুব অভাব। বাজেট সীমাবদ্ধতা। সবাই শুধু কম টাকায় কাজ করতে চায়। বলেন, কম টাকায় কি ভালো কাজ হয়, থিম নিয়ে ভাবতে হয়, নতুন মুদ্রার কথা চিন্তা করতে হয়, রির্হাসেল করতে হয়, কস্টিউমের ব্যাপার-স্যাপার আছে, লাইট-ক্যামেরা মাথায় রাখতে হয়, সেট নিয়ে ভাবতে হয়। অনেক চ্যালেঞ্জ ভাই।
বৈশাখী অনলাইন-তারমানে পর্যাপ্ত বাজেট পেলে আপনারা ভালো কাজ করতে পারবেন?
রুহুল আমিন-অবশ্যই। আমাদের কাজ ভাবা, ভেবে ভেবে নতুন কিছু তৈরি করা। অর্থনৈতিক কারণে অনেক সময় অনেক কিছু করা সম্ভব হয়না। আমাদের ছোট করে ভাবতে হয়, দর্শকরা ভাবে আমরা পারিনা। আসলে বিষয়টা এমন না। কয়েক মাস আগেই গ্রামীন ফোনের ‘একের মধ্যে অনেক’ প্রিতম হাসানের সাথে কাজ করলাম। আমরা আসলে চেষ্টা করি।
বৈশাখী অনলাইন-আপনি ড্যান্স ইন্সফ্লুয়েন্সার হিসেবেও কাজ করছেন?
রুহুল আমিন--হ্যাঁ, সেলিব্রেটি অনেকেই আসে তাদের প্রমোশনের জন্য। এআইয়ের যুগে নতুন কাজের নতুন নতুন ক্ষেত্র তৈরি হচ্ছে, ভালই লাগে।
বৈশাখী অনলাইন-আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?
রুহুল আমিন--ভাবছি, কাজ তো অনেক করলাম, আমি একটি সিনেমা বানাতে চাই, সেখানে নাচকে কেন্দ্র করেই পুরো সিনেমার গল্প আবর্তিত হবে। যে টাইপের সিনেমা আমাদের এখানে খুব কম হয়, আমি এমন কিছু করতে চাই।
বৈশাখী অনলাইন-ভালো থাকবেন, ধন্যবাদ।
রুহুল আমিন--আপনাকে ধন্যবাদ।
মন্তব্য করুন