
মার্ভেল স্টুডিওসের সাম্প্রতিক চলচ্চিত্র ‘দ্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর: ফার্স্ট স্টেপস’ বিশ্বব্যাপী এখন পর্যন্ত ২১৮ মিলিয়ন আয় করলেও তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় বড় ধরনের পরিবর্তন আসছে। বিশেষ করে চীনের বাজার থেকে কাঙ্খিত আয় না হওয়ায় মার্ভেল এখন খরচ কমানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে যার প্রভাব পড়বে আসন্ন ‘এক্স-মেন’ রিবুটে।
২৫শে জুলাই মুক্তি পাওয়া ‘দ্য ফ্যান্টাস্টিক ফোর: ফার্স্ট স্টেপস’ এর ২১৮ মিলিয়ন ডলার আয়ের ১০০ মিলিয়ন এসেছে বিদেশি বাজার থেকে। তবে চীনের বাজার থেকে মাত্র ৪.৫ মিলিয়ন আয় করা মার্ভেলের জন্য এক বড় ধাক্কা। ২০১৯ সালে যেখানে ‘অ্যাভেঞ্জার্স: এন্ডগেম’ শুধু চীন থেকেই ৬১৪ মিলিয়ন আয় করেছিল সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি অনেকটাই ভিন্ন।
একজন শীর্ষ এজেন্ট মন্তব্য করেছেন- ‘হিট’ এর সংজ্ঞা বদলে গেছে। চীন, ডিজনিপ্লাস এর প্রসার এবং কোভিড-পরবর্তী পরিস্থিতিতে এখন আর ১ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব হচ্ছে না, বিশেষ করে সুপারস্টার ছাড়া। ভেতরের সূত্র মতে ‘সেই দিনগুলো আর কখনো ফিরে আসবে না’।
এই বাস্তবতা মার্ভেল প্রধান কেভিন ফাইগির পরিকল্পনায় পরিবর্তন এনেছে। ‘এক্স-মেন’ চলচ্চিত্রের জন্য মার্ভেল এখন কম বয়সী অভিনেতাদের খুঁজছে যাতে ‘খরচ কমানো যায়’। একজন এজেন্ট জানিয়েছেন এ-লিস্টারদের পরিবর্তে নতুন ও তরুণ প্রতিভাদের সুযোগ দেওয়া হবে। জুলাই ২৩, ২০২৭ এ একটি নামহীন ছবির মুক্তির তারিখ ধার্য থাকলেও সূত্র জানিয়েছে এটি ‘এক্স-মেন’ হবে না।
পেড্রো প্যাসকেল অভিনীত ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’ এর বাজেট ২০০ মিলিয়নের বেশি রাখা হয়েছে যা তুলনামূলকভাবে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিল। কারণ প্যাসকেল একজন জনপ্রিয় টিভি তারকা হলেও বড় পর্দার ‘এন্ডগেম’ অভিনেতাদের মতো বিশাল পারিশ্রমিক নেননি।
তবে ‘অ্যাভেঞ্জার্স: ডুমসডে’ ছবিতে রবার্ট ডাউনি জুনিয়র (ডক্টর ডুম হিসেবে) এবং ক্রিস হেমসওয়ার্থ (থর হিসেবে) এর জন্য মোটা অঙ্কের পারিশ্রমিক দিতে হবে। সূত্রমতে ডাউনি জুনিয়র সাতটি মার্ভেল চলচ্চিত্র এবং তিনটি ক্যামিও থেকে ৫০০-৬০০ মিলিয়ন আয় করেছেন এবং ‘ডুমসডে’র জন্য কোনো ছাড় দেবেন না। পেড্রো প্যাসকেলের চরিত্রটি গুরুত্বপূর্ণ হলেও তিনি ছবির মূল আকর্ষণ নন। এই ছবিটি ২০২৬ সালের ১৮ই ডিসেম্বরে মুক্তি পাবে।
আগামী এক বছরে মার্ভেল সিনেমা নিয়ে খুব বেশি বিশ্লেষণ করার সুযোগ নেই। পরবর্তী মার্ভেল চলচ্চিত্র ‘স্পাইডার-ম্যান: ব্র্যান্ড নিউ ডে’ এরপর ডিসেম্বরে ‘ডুমসডে’ এবং ২০২৭ সালের ডিসেম্বরে ‘অ্যাভেঞ্জার্স: সিক্রেট ওয়ার্স’। শিল্পজুড়ে সুপারহিরো চলচ্চিত্রের প্রতি আগ্রহ কমার কারণে ‘ব্লেড’ রিবুট বা নতুন ‘ডেডপুল’ চলচ্চিত্রের ব্যাপারে মার্ভেলের তেমন তাড়াহুড়ো নেই। তবে রায়ান কুগলার পরিচালিত ‘ব্ল্যাক প্যান্থার ৩’ নিয়ে অভ্যন্তরীণভাবে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
মার্ভেল এই কারণে খুশি যে তারা ‘ফ্যান্টাস্টিক ফোর’ এর মতো একটি জটিল সম্পত্তিকে সফলভাবে ফিরিয়ে আনতে পেরেছে। এই ছবিটি দর্শকদের কাছ থেকে ‘এ-’ সিনেমাস্কোর পেয়েছে যা ভক্তদের ইতিবাচক সাড়ার ইঙ্গিত দেয়। এর আগের দুটি সংস্করণ বক্স অফিসে তেমন সাড়া পায়নি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন সুপারহিরো ঘরানা এখন তার নতুন ছন্দ খুঁজে নিচ্ছে। বক্স অফিস থিওরির শন রবিন্স বলেন- আমার মনে হয় আমরা একটি ভিন্ন সময়ে বাস করছি সুপারহিরো চলচ্চিত্র মুক্তির জন্য।
মন্তব্য করুন