
প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার রূপ যেন তুলে ধরা হয়েছে নাটকে। যেখানে রাষ্ট্র ও সমাজের অন্তর্নিহিত অসাম্য, বিশৃঙ্খলা, দূর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং মানুষের মধ্যে এক বিকৃত প্রতিযোগিতাকে তুলে আনা হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা নাটকে সংলাপের চেয়ে অধিকতর বলিষ্ঠ এক মাধ্যম শরীরের ভাষা। এখানে সংলাপ নয়, দেহ কথা বলে। প্রতিটি ভঙ্গিমা, প্রতিটি নৈঃশব্দ্য একেকটি হাহাকার।
বলা হচ্ছে ‘দ্রোহের রক্ত কদম’ নাটকের কথা। মনসুন রেভ্যুলেশনের স্পিরিটকে উপজীব্য করে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতা এবং বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির আয়োজনে নতুন নতুন নাট্যপ্রযোজনা মঞ্চায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে ২ আগস্ট শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় প্রতীকধর্মী ও প্রতিবাদী প্রযোজনা ‘দ্রোহের রক্ত কদম’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়। চট্টগ্রামের নাট্যসংগঠন ‘এথেরা: অব্যক্ত প্রতিধ্বনি’ নাটকটি পরিবেশন করেন। নাটকটির নির্দেশনা ও নাট্য ভাবনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইরা আহমেদ।
‘দ্রোহের রক্ত কদম’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন রাসিফ বিন ফাহিম, জেরিন আকতার নোশ্নি, সুমাইয়া তাবাসসুম, মো. মাহামুদুল ইসলাম বাঁধন, মো. মেহেদী হাসান মুন্না, পার্থ সেন, মো. শাহ্রিয়া শাকিল, ফাইরুয সাদেক, তানজীলা আক্তার এবং মো. মেহেদী হাসান সাদী। নাটকের সহকারী নির্দেশনায় ছিলেন বিশ্বনাথ ভৌমিক, আলোক পরিকল্পনায় আসলাম উদ্দিন, মঞ্চ ও সংগীত পরিকল্পনায় ছিলেন ইন্দ্র জিৎ শীল।
‘দ্রোহের রক্ত কদম’ প্রযোজনাটি প্রসঙ্গে নাট্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন এটি কেবল একটি নাটক নয়, রাষ্ট্রযন্ত্র যখন তার শক্তির বলয় দিয়ে জনগণের কণ্ঠরোধ করে, শাসকের দমননীতি যখন মানুষের স্বপ্ন, বাকস্বাধীনতা ও ন্যায্যতার পথ রুদ্ধ করে তখনই মানুষের ভেতরে পুঞ্জীভূত হতে থাকে ক্ষোভ। জেগে ওঠে এক অন্তর্লীনদ্রোহ। এছাড়াও এ নাটকে মানুষের মধ্যেকার এক অন্তর্দ্বন্দ্ব ফুটিয়ে তুলা হয়েছে, যেখানে একজনকে বাধা দিয়ে নিজে উপরে উঠার অসুস্থ ব্যাধি এ সমাজে প্রথা হিসেবে প্রচলিত আছে।
‘দ্রোহের রক্ত কদম’ নাটকের সমাপনী আয়োজনে উপস্থিত ছিলেন নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের পরিচালক ফয়েজ জহির। এছাড়া আজ ৩ আগস্ট রোববার জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তনে সন্ধ্যা ৭টায় ফোর্থ ওয়াল থিয়েটারের পরিবেশনায় মঞ্চস্থ হবে নাটক ‘৪০৪: নাম খুঁজে পাওয়া যায়নি’। নাটকটি রচনা ও নির্দেশনায় লাহুল মিয়া । প্রদর্শনীটি সকলের জন্য উন্মুক্ত ।
মন্তব্য করুন