বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

এদেশে ভিন্নমত সহ্য করার রেওয়াজ নেই

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ আগস্ট ২০২৫, ০৪:৪০ পিএম
আপডেট : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ১১:২৫ এএম

নাট্যকার,পরিচালক ও অভিনেতা কচি খন্দকারের পরিচালনায় শুরু হচ্ছে নতুন ধারাবাহিক নাটক ‘তেল ছাড়া পরোটা’। বৈশাখী অনলাইনের পক্ষ থেকে তাকে পাঁচটি প্রশ্ন করা হয়েছিল। উত্তরে তিনি যা বললেন-

বৈশাখী অনলাইন: খাবার হোটেলে তেল ছাড়া পরোটা কথাটা জনপ্রিয়। কিন্তু বাস্তব জীবনে তেল ছাড়া চলে না আমাদের। গানের কথায় আছে ‘তেল ছাড়া চলে না রেলগাড়ি’। তেল ছাড়া পরোটার গল্পটা কেমন?

কচি খন্দকার: তেল ছাড়া পরোটা’র সাথে আমাদের ‘তৈলাক্ত’ জীবনের মিল নেই। তেলবাজি করে এই সমাজে অযোগ্যরাই টিকে থাকে। তেল ব্যবহার করেই সিঁড়ি ভাঙ্গে জীবনের,উপরে উঠতে চায়। প্রয়োজনীয় যে তেল সেটা গাড়ির হোক আর রান্নার হোক তা তো লাগবেই । অযোগ্যদের যে তেলবাজি, ‘তেল ছাড়া পরোটা’র গল্পে দর্শক সেটা খুঁজে পাবে।

বৈশাখী অনলাইন: ছবি বানানোর কথা ছিল। না করতে পারার কারণ?

কচি খন্দকার: যে যাই বলুক নিজের ছবি বানানোর পেক্ষাপট বা স্বাধীনতা কী এখনও আছে? এদেশে ভিন্নমত সহ্য করার রেওয়াজ নেই। যুক্তির ভেতর কেউ থাকতে চায় না নিজের মতকেই আসল মত বা সবচেয়ে ভালো মত মনে করে। এটা একটা বিশাল সমস্যা। নিজের ছবি বানানোর পেক্ষাপট বা স্বাধীনতা তৈরি হয় নি, কখনো হবে কি না আমি জানি না।সিনেমা করার কথা ছিল। সিনেমা করার প্রবল আকাঙ্খা এখনও আছে। তিন চারটা চিত্রনাট্যও লিখে রেখেছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্য শুটিংয়ে যাওয়া হয় নি। দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতার কারণেই সেটা হয় নি।

বৈশাখী অনলাইন: বই লিখেছেন,পান্ডুলিপি বা চিত্রনাট্য লিখেছেন, পরিচালনা করেছেন। আবার অভিনয়‌ও করছেন। কোন পরিচয়টা আপনার প্রিয়? আপনার লেখা প্রিয় নাটক আপনার পরিচালনায় প্রিয় নাটক এবং আপনার অভিনীত সিনেমার কথা বলুন।

কচি খন্দতার: আমার লেখা অনেক নাটকই আমার প্রিয়। আমার পরিচালনায় ‘খসরু প্লাস ময়না’,‘বাই সাইকেল’,‘লিটল ম্যাগ’,‘ম্যাও’ এবং ‘জুতা আবিষ্কার’ আমার সবচেয়ে প্রিয়। ‘ভূগোল’ ও ‘ক্যারাম’ ছাড়া আমার পরিচালনা ও অনুভূতিতে সবচেয়ে প্রিয় হচ্ছে ‘অফ দি ফুটবল,ফর দি ফুটবল,বাই দি ফুটবল’।কোনো নতুন ধারণা বা ভাবনাই আমাকে তাড়িত করে, তাই লেখালেখিতেই আমি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি। লেখালেখিটা যদি আমি নিজে ইমপ্লিমেন্টেশান করতে চাই তখন কেমন দাঁড়াবে? আমার লেখা পুরোপুরি বোঝা ও ভিজুয়ালি ফুটিয়ে তোলার দায় থেকেই পরিচালনায় আসা। মনে হয় লেখা ও পরিচালনার সবটা আমার। নাট্যকার,পরিচালক ও অভিনেতা এই দিন পরিচয়ের মধ্যে লেখাটাকেই এগিয়ে রাখবো। তবে আমি সবচেয়ে আগে অভিনয় শুরু করেছি। পাঁচ ছয় বছর বয়সেই এটা শুরু করি। একই চরিত্রে বার বার অভিনয় করতে হয়েছে। একারণে মাঝে মাঝে অভিনয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলি। হয়তো মূল্যায়নও হয় নি ! সিনেমাতেও অভিনয় করেছি।

বৈশাখী অনলাইন: গত এক বছরের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এদেশের নাটক সিনেমা কেমন আছে?

কচি খন্দকার: দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি ও বাস্তবতার কারণেই গত একবছরের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নাটক বা সিনেমা নিয়ে তেমন ভাবি নি। পরিবর্তন হয়তো হয়েছে কিন্ত আমি তৃপ্ত না।

বৈশাখী অনলাইন: থিয়েটার দিয়ে আপনার জীবনের শুরু। ছেড়ে আসা থিয়েটার আপনাকে কতটা স্মৃতিতাড়িত করে? কেমন আছে চিত্রা থিয়েটার? একুশে ফেব্রুয়ারিতে লাখো মোমবাতি জ্বালানোর রেওয়াজ কী এখনো আছে?

কচি খন্দকার: থিয়েটার আমার জীবন ও জীবনের শেষ। মরমী সাধক লালন সাই বা রবীন্দ্রনাথের স্মৃতি বিজড়িত কুষ্টিয়ায় আমার জন্ম যেখানে জাগরনের সাহিত্যিক যাকে ভাবি সেই মীর মোশাররফ হোসেন ‘বিষাদ সিন্ধু’ লিখেছেন। কারবালার সেই ঐতিহাসিক বর্নণা এমন করে আর কী কেউ লিখতে পারতেন? নবীজির চুমুর কারণে সীমারের তরবারি দাগ কাটতে পারে নি।কুষ্টিয়া আমার অনুপ্রেরণার নাম। ব্যক্তিজীবনে আমি কুষ্টিয়ায় একটি থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেছি, ‘চিত্রা’ খিয়েটারও আমি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম নড়াইলে। আমি ঢাকায় থিয়েটার করি নি করেছি মফস্বলে। আ্রর কেউ মনে হয় আমার মতো দুটো থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করে নি। চিত্রার সাথে আমার আত্মিক যোগাযোগ তৈরি হয়েছে। প্রতিবছর একুশ ফেব্রুয়ারি এখানে আমি লক্ষ মোমবাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করি, টেলিভিশন এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে ছাব্বিশ বছর ধরে। একটা শিশু যখন মোমবাতি জ্বলার এই দৃশ্য দেখে তারও তখন আলোতে আসার ইচ্ছে হয়,সবার ভাষা বা সংস্কৃতির প্রতিও তাদের শ্রদ্ধা জাগে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নির্মাণ হলো বিশেষ নাটক 'স্বামীর আদর'
নির্মাণ হলো বিশেষ নাটক 'স্বামীর আদর'
বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষ কে এই জনাথন বেইলি
বিশ্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় পুরুষ কে এই জনাথন বেইলি
বিএনপির দুঃসময়ের সাথী, স্বৈরাচারের জম রুমিন ফারহানা আপা: হিরো আলম
বিএনপির দুঃসময়ের সাথী, স্বৈরাচারের জম রুমিন ফারহানা আপা: হিরো আলম
যে ধরণের পুরুষ পছন্দ মালাইকার
যে ধরণের পুরুষ পছন্দ মালাইকার