
কিংবদন্তী সুরকার আলাউদ্দীন আলীর প্রয়াণ দিবস আজ। ২০২০ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।
তাঁর মৃত্যুর পর একজন লিখেছিলেন-‘পাখি,আকাশ,বাতাস,নদী,হাটের কোলাহল,সমুদ্রের ঝড়,গর্জন,পশুর ডাক,পাখির ডানা ঝাপটানো,মানুষের হাসি বা কান্নার রং,আকাশের রূপ থেকে সুর সংগ্রহ করে মানুষকে দিতে পারতেন। সুরের রঙ মেখে হোলি খেলা শেষ করে সেই অজানা অচেনা সাম্পানে চড়ে কোথায় যে চলে যান তারা! আলাউদ্দীন আলীও চলে গেছেন,কোথায় গেছেন আমরা কেউ জানি না। শুধু সুর ছড়িয়ে দিয়ে গেছেন যা থামছে না’।
তাঁর করা পাঁচটি গানের নতুন সঙ্গীত আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছেন তাঁর কন্যা সংগীতশিল্পী আলিফ আলাউদ্দীন ও তাঁর স্বামী কাজী ফয়সাল আহমেদ। এই গানগুলো গাইবেন –মাইলস খ্যাত হামিন আহমেদ,এলিটা করিম,ওয়ারফেইজের পলাশ,পুষ্পিতা এবং পেন্টাগন ব্যান্ডের সদস্যরা। ফেসবুক,ইউটিউব সহ সব ডিজিটাল প্লাটফর্মে এই গান প্রকাশ পাবে। এই পাচঁ গান হচ্ছে-
‘শেণ করো না শুরুতে খেলা’,
‘হারানো দিনের মতো হারিয়ে গেছ তুমি’,
‘তোমাকে দেখলে একবার মরিতে পারি শতবার’,
‘আমায় গেঁথে দাও না একটা পলাশ ফুলের মালা’ এবং
‘যদি কোনোদিন মুক্তির কথা লিখতে হয়’
১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর তিনি মুন্সিগঞ্জের টঙ্গিবাড়ি উপজেলার বাঁশবাড়ি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। দেড় বছর বয়সে মুন্সিগঞ্জ থেকে ঢাকায় চলে আসলেও মাটির গন্ধ মাখা সুরের শেকড়টা কখনো ভোলেন নি। বাবা জাদব আলী আর চাচা সাদেক আলীর কাছ থেকেই পেয়েছিলেন সুর। খুব সুন্দর বেহলা বাজাতে পারতেন। ছোটকালেই তাঁর এই বেহালার মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরেছিল চারিদিকে। ছোটকালে বেহালা বাজিয়ে পুরষ্কার জিতেছিলেন। পরবর্তীকালে আটবার জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন। জাতীয় পুরষ্কার পেয়েছেন গীতিকার হিসেবেও।
তিনি পাঁচ হাজারের বেশি গানে সুর করেছেন। আলাউদ্দীন আলী ও চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেনের সাথে যুগলবন্দী হয়ে সৃষ্ট গানগুলো ছিল অন্যরকম। যেমন-
‘একবার যদি কেউ ভালোবাসতো’
‘জন্ম থেকে জ্বলছি মাগো’
‘আমি আছি থাকবো-ভালোবেসে মরবো’
‘এমনও তো প্রেম হয়-চোখের জ্বলে কথা কয়’
‘হায়রে কপাল মন্দ-চোখ থাকিতে অন্ধ’
‘কেউ কোনদিন আমারে তো কথা দিল না’
‘বাবা বলে গেল আর কোনদিন গান করো না’
‘এই দুনিয়া এখন তো আর সেই দুনিয়া নাই’
তার জনপ্রিয় গানের তালিকায় আরও আছে..
‘ যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়’,
‘ভালোবাসা যতো বড় জীবন তত বড় নয়’,
‘তুমি আরেকবার আসিয়া,যাও মোরে কান্দাইয়া’
যে কোন বিচারে এই গানগুলো ভিন্নমাত্রার,বাংলা গানের ইতিহাসে এই গানগুলো কালজয়ী আর স্বর্নালী দিনের গান হিসেবেই বেঁচে থাকবে।
মন্তব্য করুন