
		অনলাইনে তিন দিন ধরে আলোচনার কেন্দ্রে কনটেন্ট ক্রিয়েটর রিপন মিয়া। মঙ্গলবার এক বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তিনি বাবা-মায়ের খোঁজখবর রাখেন না এবং স্ত্রী ও সন্তানদের অস্বীকার করেন। এ সংবাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) ঢাকায় হাজির হন রিপন মিয়া, সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা, স্ত্রী ও দুই সন্তান। সেদিনের পুরো ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কখনো মুচকি হেসেছেন, আবার কখনো পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে আবেগে কেঁদেছেন।
এ বিষয়ে রিপন বলেন, ‘কী থাইক্যা কী হইল, কিছুই বুঝতেছি না ভাই। ঘুম থেকে উঠে চা খাইতে গেছিলাম, হঠাৎ কয়েকজন সাংবাদিক আইসা ক্যামেরা ধরল। মজা করতে বলল, আমি ছন্দ ধরে মজা করছিলাম।
কিন্তু এক পর্যায়ে ওরা আমার পরিবার নিয়ে নানা উল্টাপাল্টা প্রশ্ন করতে থাকে। আগে জানায়নি, তারা আমার বাড়ি গিয়েছিল। পরে টিভিতে দেখি, কথাগুলো কেটে কেটে দেখানো হয়েছে। আমি তো সব বলছিলাম, কিন্তু ভিডিওতে সবটা রাখে নাই।
বাবা–মাকে না দেখার অভিযোগের বিষয়ে রিপনের দাবি, তিনি নিজেই তাদের জন্য আধাপাকা ঘর বানাচ্ছেন। ‘তিনটা রুম করছি-একটায় আমি বউ–বাচ্চা নিয়া থাকব, আরেকটায় আব্বু–আম্মু থাকবেন। আমি কেমনে দেখি না উনাদের? কোন মাসে টাকা দিই নাই, এইটা জিজ্ঞেস করলে ভালো হইত,’ বলেন তিনি।
স্ত্রী-সন্তান অস্বীকারের অভিযোগ প্রসঙ্গে রিপন বলেন, দেড় বছর আগে ভাইসাবের ভিডিওতে বিয়ের বিষয় নিয়ে কথা বলেছি। কিন্তু সাংবাদিকরা বারবার একই প্রশ্ন করলে আমি তৎক্ষণাৎ বলেছিলাম, ‘আমি বিয়ে করিনি’। কে জানত এত আলোড়ন হবে!
পেশায় কাঠমিস্ত্রি রিপন আরও জানান, পেশা নয়, শখে ভিডিও বানান। কনটেন্ট ক্রিয়েশন না করলেও তাঁর জীবন চলবে। ‘আমি কাঠমিস্ত্রি মানুষ, আল্লাহর রহমতে সব পারি। প্রয়োজন হলে আর ভিডিও বানাব না, সংসার চলবে।’
তাঁর মা ফাতেমা বেগমও সেদিন ঠিক কী হয়েছিল, তা তুলে ধরেন। এমন সময় মা ও সন্তান একজন আরেকজনকে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
ফাতেমা বেগম বলেন, প্রতিবেশীদের প্ররোচনাতেই ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হয়েছে। অনেকে বলেন, ‘তোমার ছেলে লাখ লাখ টাকা কামায়, তোমাকে কী দিয়েছে।’ আমি ভাবছিলাম সাংবাদিকরা সাহায্য করতে এসেছে, কিন্তু তারা উল্টো সমস্যা সৃষ্টি করেছে। লোভে পড়ে আমার ছেলের কষ্ট হয়।
তিনি আরও জানান, রিপন একা নয়, তাঁর অন্যান্য সন্তানরাও বাবা-মায়ের খোঁজ রাখেন। আমরা গরিব মানুষ, হের বাপ কাজ করতে পারে না। তিন সন্তান না দেখলে আমরা চলতে পারব না।
মঙ্গলবার দুপুরে রিপন মিয়াকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে একটি চ্যানেল। সেখানে রিপনের মা অভিযোগ করেন, ‘খুব কষ্ট করে মানুষ করছি, কিন্তু এখন পরিচয় দেয় না। আমরা গরিব। পরিচয় দিলে যদি ওর মানসম্মান না থাকে!’ এরপরই শুরু হয় আলোচনা-সমালোচনা।
মন্তব্য করুন