
ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে হঠাৎ ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত জনজীবন। এখানে বৃষ্টিতে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৪৬ জন নিহত হয়েছেন। এতে ২০০ জনের বেশি নিখোঁজ বলে জানিয়েছে গণামাধ্যম। ১৪ আগষ্ট বৃহস্পতিবার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। হিমালয় অঞ্চলে এক সপ্তাহেরও একটু বেশি সময়ের মধ্যে এটাই দ্বিতীয় বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়।
জম্মু-কাশ্মীরের কিশতওয়ার জেলার ছাসোটি শহরে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটেছে। তীর্থযাত্রা পথে অনেক তীর্থযাত্রী এখানে বিরতি নিয়ে থাকেন। মাত্র এক সপ্তাহ আগে হিমালয় অঞ্চলের উত্তরাখণ্ড রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা ও ভূমিধসে একটি গ্রাম পুরোপুরি ভেসে গিয়েছিল।
কর্মকর্তারা বলেন, বন্যায় তীর্থযাত্রীদের জন্য তৈরি কমিউনিটি কিচেন ও নিরাপত্তা পোস্ট ভেসে যায়। এটি ছিল মাচাইল মাতার মন্দিরগামী পথে বিরতির জায়গা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, অনেক তীর্থযাত্রী দুপুরের খাবারের জন্য জড়ো হয়েছিলেন। তাঁদের প্রায় সবাই পানির স্রোতে ভেসে গেছেন। হিমালয়ের উঁচুভূমিতে অবস্থিত মাচাইল মাতার মন্দির তীর্থযাত্রীদের একটি জনপ্রিয় স্থান। এই মন্দিরে যেতে তীর্থযাত্রীদের ছাসোটি থেকে হাঁটতে হয়। কারণ, সেখান থেকে যানবাহন যাওয়ার আর কোনো সড়ক নেই।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ লিখেছেন, খবরটি দুঃখজনক ও সত্য। তবে যেখানে ক্লাউডবার্স্ট (প্রবল বৃষ্টি) হয়েছে, সেখান থেকে সঠিক তথ্য আসতে সময় লাগছে। টেলিভিশনের ফুটেজে দেখা গেছে, গ্রামে পানি ঢুকে পড়ায় তীর্থযাত্রীরা আতঙ্কে কাঁদছেন।
কিশতওয়ার জেলার ডিভিশনাল কমিশনার রমেশ কুমার সংবাদ সংস্থা এএনআইকে বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিপর্যয়টি ঘটে। স্থানীয় পুলিশ ও দুর্যোগ প্রতিরোধকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে গেছেন। রমেশ কুমার আরও বলেন, সেনা ও বিমানবাহিনীকে সক্রিয় করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চলছে।
ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের ভাষ্যমতে, ক্লাউডবার্স্ট হলো হঠাৎ অতি প্রবল বৃষ্টি। ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের (৪ ইঞ্চি) বেশি বৃষ্টি, যা পাহাড়ি অঞ্চলে আকস্মিক বন্যা, ভূমিধস ও ব্যাপক ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। বিশেষ করে বর্ষাকালে এমনটা দেখা যায়।
শ্রীনগরের স্থানীয় আবহাওয়া অফিস গতকাল কাশ্মীরের কয়েকটি অঞ্চলে, বিশেষ করে কিশতওয়ারে, প্রবল বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে। তারা বাসিন্দাদের সতর্ক করে বলেছে, নড়বড়ে স্থাপনা, বৈদ্যুতিক খুঁটি ও পুরোনো গাছ থেকে যেন দূরে থাকে। কারণ, কাদামাটির ঢল ও আকস্মিক বন্যার ঝুঁকি রয়েছে।
মন্তব্য করুন