
প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের পর গত ৪৮ ঘণ্টা সরকারহীন অবস্থায় রয়েছে নেপাল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। বালেন্দ্র শাহ্-এর পর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী ঠিক করার তুমুল আলোচনার স্রোতে এবার উঠে এল সুশীলা কার্কি-র নাম।
গতকাল বুধবার একটি ভার্চুয়াল বৈঠকে দেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান নিয়ে প্রায় ৫ হাজার বিক্ষোভকারী আলোচনা করেন। বালেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তিনি সাড়া দেননি বলে জানান তারা। এখন তার বদলে সুশীলা কার্কিকে দেশের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
দেশের বিভিন্ন বিষয়ে বেশ আলোচনায় আসা সুশীলা কার্কি হলেন ইতিহাস গড়া নেপালের প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি। ২০০৪ সালে সাম্ভব কানুন পুরস্কারসহ একাধিক সম্মাননা পেয়েছেন কার্কি। তিনি নারী অধিকার ও মানবাধিকারভিত্তিক সংগঠনের সক্রিয় সদস্য ছিলেন দীর্ঘদিন।
তার বিচারিক সময়ে ট্রানজিশনাল জাস্টিস এবং নির্বাচনী বিরোধ সংক্রান্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রায় দেন তিনি। তবে মাত্র এক বছরের মধ্যে ২০১৭ সালে তার বিরুদ্ধে সংসদে অভিশংসন প্রস্তাব আনা হয়েছিল, যা ব্যাপক জনদাবি ও আদালতের নির্দেশে পরে প্রত্যাহার করা হয়।
তিনি সর্বশেষ আইন বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এর পূর্বে ১৯৭২ সালে মহেন্দ্র মরাং ক্যাম্পাস থেকে বিএ ডিগ্রি এবং ১৯৭৫ সালে ভারতের বারাণসীর বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন। সেখানেই তার পরিচয় ঘটে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়া কংগ্রেস নেতা দুর্গা প্রসাদ সুবেদীর সঙ্গে।
১৯৫২ সালে নেপালের বিরাটনগরে জন্ম নেয়া সুশীলা কার্কি একই শহরে আইন পেশায় যাত্রা শুরু করেন ১৯৭৯ সালে। পরে ১৯৮৫ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ২০০৭ সালে সিনিয়র অ্যাডভোকেট হিসেবে স্বীকৃতি পান। এরপর ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের অ্যাড-হক বিচারপতি এবং ২০১০ সালের ১৮ নভেম্বর থেকে স্থায়ী বিচারপতির দায়িত্ব পালন শুরু করেন।
২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি এবং এরপর ১১ জুলাই ২০১৬ থেকে ৭ জুন ২০১৭ পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতির দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
সুশীলা কার্কির পাশাপাশি আরও কয়েকজনের নাম এ ভার্চুয়াল বৈঠকে ওঠে এসেছে। যারমধ্যে দেশটির বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রধান কুলমান ঘিসিং, তরুণ নেতা সাগর ঢাকাল এবং ধারান শহরের মেয়র হার্কা সামপাংকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
মন্তব্য করুন