
বিউটি সমাদ্দার : চিকিৎসা এবং শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে ভোলার মাঝের চরের পঞ্চাশ হাজার বাসিন্দারা। এখানে তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও ডাক্তার আসেন মাত্র একজন। অন্যদিকে, উচ্চবিদ্যালয় না থাকায় প্রাইমারি পাশ করেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় শিক্ষার্থীদের।
ভোলার কাচিয়া, দৌলতখান, মদনপুর, হাজিপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের কিছু অংশ ভেঙ্গে মেঘনার বুকে জেগে উঠেছে মাঝের চর। জেলাশহর থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দুরত্বে জেগে উঠা এই চরে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের বসবাস। অথচ এই বিশাল জনগোষ্ঠীর জন্য এখানে নেই সুচিকিৎসার ব্যবস্থা। নামমাত্র তিনটি কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও একজন ডাক্তার সপ্তাহে একদিন এসে চিকিৎসা সেবা দেন। প্রায়ই সুচিকিৎসার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় রোগীদের। সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যুও হয় রোগীদের। বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় গর্ভবতী নারী, শিশু এবং বৃদ্ধদের।
সন্ধ্যা বা রাতে কেউ অসুস্থ হলে তাকে সুচিকিৎসার জন্য নদী পর হয়ে ভোলা সদরে নেওয়ার ব্যবস্থাও নেই এখানে। বিকেলের পর নদী পরাপারের জন্য কোন ট্রলার বা নৌকার থাকে না। চিকিৎসার জন্য এই চরের বাসিন্দাদের অধিকাংশ সময় নির্ভর করতে হয় পল্লী চিকিৎসকের উপর।
শুধু চিকিৎসা নয় উচ্চ শিক্ষার সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে এই চরের শিক্ষার্থীরা। মাঝের চরে একটি মাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সেটিও চলছে ধুকে ধুকে। চার পাঁচজন শিক্ষক থাকলেও তারা ভোলা থেকে এসে নিয়মিত ক্লাস নেয় না। কোন রকম প্রাথমিকের গন্ডি পেরোলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা চালিয়ে নেয়ার জন্য ভোলা সদরের উপর নির্ভর করতে হয়। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঝড়ে পরে মেয়ে ও দরিদ্র শিক্ষার্থীরা।
ভোলা সদরের উপজেলার নির্বাহী অফিসার সজল চন্দ্র শীল জানিয়েছেন প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রবণ হওয়ায় ভোলার চরগুলোতে এখনো কাঙ্খিত সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। সমস্যার সমাধান কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
চিকিৎসা এবং শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করারসহ সরকারি ব্যবস্থাপনায় বিনামূল্যে নদী পারাপারের ব্যবস্থা করার দাবিও জানিয়েছে মাঝের চরের বাসিন্দারা।
মন্তব্য করুন