
অন্ধত্ব কখনও বাধা হতে পারেনি। জীবনে হয়েছেন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। কিন্তু হার মানেননি অন্ধত্বের কাছে। পৃথিবীর আলো দেখতে না পেলেও গড়ে তুলেছেন এক অনন্য ইতিহাস। জন্মের পর স্বাভাবিক জীবন যাপন করলেও শিশুকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে দু'চোখের দৃষ্টি হারান। বলছি টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের শিশিরচালা গ্রামের আব্দুল গফুরের কথা।
পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে চিকিৎসার অভাবে পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। তবে অন্ধত্বকে প্রতিবন্ধকতা মনে করে থেমে যাননি গফুর। সংসারের হাল ধরতে কৃষিকাজসহ যুক্ত হয়েছেন নানা কাজে।
ভেটেরিনারি চিকিৎসক মোস্তাফিজুরের পরামর্শে মুরগির খামার বদলে দিয়েছে তার জীবনের মোড়। দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েও সফল লেয়ার মুরগির খামারি গফুর এখন সবার কাছে অনুকরণীয়।
প্রাণী সম্পদ চিকিৎসকের পরামর্শে ২০১৫ সালে গড়ে তুলেন মুরগির খামার। মুরগির খাবার দেয়া থেকে শুরু করে ডিম তোলা সবই করেন নিজ হাতেই। পাশাপাশি নিখুঁতভাবে করেন কৃষিকাজ। গফুরের সংগ্রাম ছিল দীর্ঘ। মুরগির খামার শুরু করে তিনি শুধু নিজের জীবনই বদলাননি, বদলে দিয়েছেন তার পরিবারের জীবনও।
৯ বছর বয়সেই টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হয়ে দু’চোখের দৃষ্টি হারালেও পরিবারের বোঝা হতে না চাওয়া গফুরের উপার্জনে চলে সংসার। সমাজের কাছে এখন সে আইডল।
গফুরকে সরকারি মেডিসিন বরাদ্দের পাশাপাশি সার্বিক সহযোগিতার করা হচ্ছে বলে জানান প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা।
দশ বছর আগে গফুরের সংগ্রামের কথা শুনে তাকে খামার করার পরামর্শ ও সহযোগিতা করেন তৎকালীন উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা। অনেক খামারী ঝরে গেলেও সফলতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন গফুর।
স্বপ্ন দেখার সাহস এবং সেই স্বপ্ন পূরণের জন্য লড়াই করার মানসিকতা থাকলে, কোনো বাধাই বড় নয়, গফুরের সফলতা যেন এই শিক্ষায় দিচ্ছে সবাইকে।
মন্তব্য করুন