
		প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বৃহত্তম ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে। প্রায় আড়াইশ বছরের পুরনো এ মাঠে এবার ছিল ঈদুল আযহার ১‘শ ৯৮ তম জামাত। জামাত শুরু হয় সকাল ৯টায়। এর আগে ভোর থেকে মুসল্লিরা দলে দলে আসতে থাকেন ঈদগাহের দিকে। দেশের দূর-দূরান্তের মুসল্লিরা শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে অংশ নেন। তবে কোরবানির আনুষ্ঠানিকতার কারণে এবার শোলাকিয়ায় মুসল্লির সমাগম ছিল কম। জামাতে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বয়ান করেন মাওলানা আবুল খায়ের মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ। বিশাল এ মাঠে ইমামতিও করেন তিনি।
ঢাকা রেঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ কাজিম উদ্দিন জানান, জামাত নির্বিঘ্ন করতে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়, নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মাঠের বিভিন্ন প্রবেশ পথে বসানো হয় ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। ছিল বিজিবি, র্যাব ও পুলিশের নিরাপত্তা চৌকি। নামাজ শুরুর আগে পুরো মাঠ তল্লাশী করা হয়, মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে। জামাত নির্বিঘœ করতে প্রশাসনের উদ্যোগে নেওয়া হয় নানা পদক্ষেপ।
জনশ্রুতি আছে, কোন এক ঈদের জামাতে সোয়া লাখ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেছিলেন। সেই থেকে এ মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখিয়া’ । যা এখন শোলাকিয়া নামেই পরিচিত। প্রায় ৭ একর আয়তনের এ মাঠে প্রতিবছর লাখ লাখ মুসল্লির ঢল নামে। দিন দিন এখানে বাড়ছে দেশ-বিদেশের মুসল্লির সংখ্যা। ১৯৫০ সালে শোলাকিয়া ইদগাহের জন্য জমি ওয়াকফ করেন, ঈশাখার বংশধর দেওয়ান মান্নান দাদ খান। তারও দুইশ বছর আগে থেকে শোলাকিয়ায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।
নামাজ শেষে আল্লাহর দরবারে বিশ্ব শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। এ সময় মহান আল্লাহর সান্নিধ্য লাভ ও পার্থিব জগতের গুনাহ মাফের জন্য আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন অনেকে।
বছরের এই একটি দিন শোলাকিয়ায় যে আনন্দ আর ভ্রাতৃত্বের বন্ধন বয়ে যায়, তা টিকে থাকবে প্রতিটি দিন- আজকের খুশির দিনে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
মন্তব্য করুন