
		শিক্ষার্থীদের উপর স্থানীয়দের হামলার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রক্টরিয়াল বডির পদত্যাগসহ সাত দফা দাবিতে মশাল মিছিল ও প্রক্টর অফিসের সামনে লাল রং ছিটিয়ে প্রতিবাদ জানান চবি শিক্ষার্থীরা। ‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’র ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিল, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রী, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, নারী অঙ্গনের নেতা-কর্মী ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে জড়ো হন তারা। এরপর মশাল জ্বালিয়ে মিছিল নিয়ে কাটাপাহাড় হয়ে ‘দফা এক দাবি এক, প্রশাসনের পদত্যাগ’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত- বৃথা যেতে দেব না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দিতে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে অবস্থান নেন।
মশাল মিছিল শেষে আহতদের রক্তের প্রতীক হিসেবে লাল রঙ নিক্ষেপ কর্মসূচি পালন করেন তারা। প্রতীকী প্রতিবাদ শেষে পরদিনের কর্মসূচি ঘোষণা করে তাদের কর্মসূচি সমাপ্ত ঘোষণা করা হয়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী সুজান কবীর বলে, প্রক্টর অফিসের সামনে লাল রঙ নিক্ষেপ করা হয়েছে। এটা মূলত আমাদের ভাইদের জন্য। দুই নম্বর গেটে ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসীদের হামলায় শিক্ষার্থীরা আহত হয়েছেন। আমাদের শিক্ষার্থীদের যে এত রক্ত ঝরেছে, সেই রক্তের প্রতীক হিসেবে আমাদের এ কর্মসূচি। আমাদের প্রশাসন দেখেও দেখছে না। তারা যাতে দেখতে পারে এই কারণে মূলত আমাদের এই প্রতীকী কর্মসূচি।’
‘অধিকার সচেতন শিক্ষার্থীবৃন্দ’-এর সাত দফা দাবিগুলো হলো-
স্থানীয়দের হামলায় শিক্ষার্থী আহতের ঘটনায় প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে প্রক্টরিয়াল বডিকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ, আহত শিক্ষার্থীদের পূর্ণ তালিকা প্রকাশ, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা প্রদান, নিরাপত্তাহীন অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য অবিলম্বে মানসম্মত ভ্রাম্যমাণ আবাসনের ব্যবস্থা, আবাসনচ্যুত শিক্ষার্থীদের মালামাল উদ্ধারে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ, উদ্ভূত পরিস্থিতিকে ঘিরে বিশেষভাবে চিহ্নিত শিক্ষার্থীদের সকলপ্রকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। এ ছাড়া তারা সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনা এবং নিরাপরাধ এলাকাবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা, বৈপরীত্যমূলক দ্বন্দ্ব-সংঘাত নিরসনে উভয়পক্ষের অন্তর্ভুক্তিমূলক সমন্বয় কমিটি গঠন করা এবং ন্যূনতম তিন মাস পরপর মিটিং করা, সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং নিরাপদ ক্যাম্পাসের রোডম্যাপ প্রকাশ ও বাস্তবায়ন করার দাবি জানান।
জানা যায় সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত ২২০ জন আহত হয়েছেন যার মধ্যে প্রায় ২০০ জনই শিক্ষার্থী। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। একজনকে এখনো লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে।
ঘটনার পর থেকে বুধবার পর্যন্ত ক্যাম্পাসে ১৪৪ ধারা জারি ও সেনাবাহিনীর টহল থাকলেও আগামী ৭ সেপ্টেম্বর রবিবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসহ সকল অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চবি রেজিস্টার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম অনুরোধ জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন