
আমরণ অনশনরত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শিক্ষার্থীদের ৪ জন অসুস্থ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। টানা ৪৫ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে তারা অনশন করছেন। গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে সাত দফা দাবিতে নয়জন শিক্ষার্থী এ কর্মসূচি শুরু করেন।
তাদের মধ্যে সুমাইয়া সিকদার, ধ্রুব বড়ুয়া, জশদ জাকির ও সুদর্শন চাকমা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। সুদর্শন চাকমাকে অনশনের স্থানে স্যালাইন দেওয়া হয়েছে ও বাকি তিনজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছেন।
তাদের অনশন ভাঙানো ও আলোচনায় বসতে চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক কামাল উদ্দিন, ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনসহ কয়েকজন শিক্ষক দেখা করেন। কিস্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনশন স্থগিত করবেন না বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বাংলা বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের অনশনরত শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র বলেন, ‘অনশনের ৪৫ ঘণ্টা কেটে গেল। চিকিৎসকরা বললেন, আর অনশন চালিয়ে নেওয়া খুব ঝুঁকিপূর্ণ হবে। ইমিডিয়েট কিছু খেতে বললেন। জশদ জাকিরের হার্টে সমস্যা আছে। তাকে দ্রুত অনশন ভাঙতে বলেছে। বাকিদের অবস্থাও ভালো না, স্যালাইন চলছে। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। অনশন শুরুর সময় কথা দিয়েছিলাম, দাবি আদায় না হলে লাশ হয়েই ফিরব। প্রশাসনে দায়িত্বরতরা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল। তারা এখনও আমাদের দাবি মেনে নেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের অনশনের কথা শুনে আমি, উপ-উপাচার্য ড. কামাল উদ্দিনসহ ৫-৬ জন শিক্ষক তাদের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছি। তাদের সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা আলোচনা করার পরেও তাদের অনশন ভাঙাতে পারেনি। আমরা বলেছি আগামী রবিবার তোমাদের সঙ্গে বসে তোমাদের সকল দাবি দাওয়া শুনবো। আমরা তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। তদন্তের রিপোর্টে যদি প্রক্টর দোষী হয় তাহলে অবশ্যই তাকে অপসারণ করা হবে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটা মানে নাই। তারা তাদের কথার ওপর অটল আছে।’
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের আট সংগঠন। তারা প্রশাসনের উদাসীনতার সমালোচনা করে দ্রুত শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
অনশনরত ৯ শিক্ষার্থী হলেন- বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ওমর সমুদ্র, সংগীত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি জশদ জাকির, স্পোর্টস সায়েন্স বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক রাম্রা সাইন মারমা, ইংরেজি বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর রাজনৈতিক শিক্ষা ও সংস্কৃতি সম্পাদক আহমেদ মুগ্ধ, একই বিভাগের দপ্তর সম্পাদক নাইম শাহ জান, বাংলা বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী ও গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমন্বয়ক ধ্রুব বড়ুয়া, মার্কেটিং বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও নারী অঙ্গনের সংগঠক সুমাইয়া শিকদার, সংগীত বিভাগের ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী ও বিপ্লবী ছাত্র যুব আন্দোলনের সংগঠক ঈশা দে এবং বাংলা বিভাগের ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চাকমা।
মন্তব্য করুন