
		খুলনার একটি হাসপাতালে মায়ের সঙ্গে সাত দিন ধরে বন্দি থাকার পর ১১ দিনের এক নবজাতককে মায়ের সঙ্গে কারাগারে যেতে হয়েছে। মানবপাচার মামলায় গ্রেপ্তার তার মা শাহজাদী রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে আদালতে হাজির হন।
আদালতে তার পক্ষে কেউ উপস্থিত ছিলেন না, ছিল না কোনো আইনজীবী বা জামিন আবেদন। শুনানি ছাড়াই আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। শিশুটির দেখাশোনার কেউ না থাকায় তাকেও খুলনা জেলা কারাগারে নেওয়া হয়।
গত ১১ সেপ্টেম্বর খুলনার রূপসার একটি হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন শাহজাদী। এটি তার পঞ্চম সন্তান। ছেলে সন্তানের প্রত্যাশা পূরণ না হওয়ায় স্বামী সিরাজুল ইসলাম তাকে হাসপাতালে ফেলে চলে যান এবং আর খোঁজ নেননি।
মানসিক চাপে পড়ে চার দিন পর একই হাসপাতাল থেকে আরেক প্রসূতির ছেলে নবজাতক চুরি হয়। পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে নবজাতক উদ্ধার করে শাহজাদীর মা নার্গিস বেগমের কাছ থেকে। আটক হওয়ার পর তিনি দাবি করেন- মেয়ের সংসার টিকিয়ে রাখতেই তিনি এই কাজ করেছিলেন।
এ ঘটনায় শিশুর বাবা মো. মির্জা সুজন মানব পাচার আইনে মামলা করেন। মামলায় শাহাজাদী ও তার মা দুজনকেই আসামি করা হয়। বর্তমানে নার্গিস বেগম কারাগারে আছেন। রবিবার আদালতে হাজিরা শেষে শাহাজাদীকেও কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট।
ওই হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো. ইনামূল হক বলেন, ১০ সেপ্টেম্বর শিশুর বাবা ও মামা রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে দুই হাজার টাকা জমা দেন। পরদিন সিজারিয়ানের মাধ্যমে কন্যাসন্তানের জন্ম হয়। এর পর থেকে বাবা সিরাজুল ইসলাম আর হাসপাতালে আসেননি। আজ দুপুরে শিশুটির মামা বকেয়া পরিশোধ করে দিয়েছেন।
দুপুরে পুলিশের প্রহরায় শিশু ও তার মাকে আদালতে নেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সদর থানার এসআই শাহীন বলেন, আসামিরা হাতেনাতে ধরা পড়েছেন। অপহৃত শিশু উদ্ধার হয়েছে। চুরি যাওয়া শিশুটির বাবা মানব পাচার আইনে মামলা করেছেন। আজ মা ও শিশুটিকে আদালতে পাঠানো হয়।
তবে বাদী মির্জা সুজন জানান, আমি সন্তানের খোঁজে পুলিশের সাহায্য নিয়েছিলাম। সন্তান ফিরে পাওয়ার পর অভিযোগ রাখিনি। তবু মামলা হয়ে গেছে। ওই নারীও কষ্টে আছেন, আমার সন্তানকে বুকের দুধও খাইয়েছেন। তাই মামলাটা চালিয়ে যেতে চাই না।
মন্তব্য করুন