
সাইকেল চালাতে চালাতে মাথায় ফুটবল ভারসাম্য রেখে একটানা ২০ দশমিক ২০ কিলোমিটার (১২ দশমিক ৫৫ মাইল) পথ অতিক্রম করে চতুর্থবারের মতো গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লিখিয়েছেন মাগুরার আব্দুল হালিম (৪৯)।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি মাগুরা ইনডোর স্টেডিয়ামে এই রেকর্ড গড়েন তিনি। যাচাই-বাছাই শেষে গত শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) গিনেস কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে রেকর্ডটির স্বীকৃতি দেয়। তবে তিনি পাননি কোনো রাষ্ট্রীয় সম্মাননা।
মাগুরার শালিখা উপজেলার শতখালী ইউনিয়নের ছয়ঘরিয়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল হালিম। ছোটবেলায় এক গোলকিপারের বলের ওপর নিয়ন্ত্রণ দেখে অনুপ্রাণিত হন। এরপর প্রায় ৩৩ বছর ধরে ফুটবল নিয়ে নানা কসরত শিখে আসছেন। এটিকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন। তবে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে অর্থকষ্টই তার বড় বাধা।
মাথার ওপর ফুটবল রেখে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা ১৯ মিনিট পর্যন্ত টানা ১ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট সাইকেল চালান তিনি। এ সময় একবারও বল পড়েনি বা হাত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করেননি।
গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস অনুযায়ী, ‘দ্য গ্রেটেস্ট ডিসট্যান্স ট্রাভেল্ড অন এ বাইসাইকেল ব্যালান্সিং এ ফুটবল অন দ্য হেড’ শিরোনামে এই কৃতিত্ব এখন হালিমের দখলে। এর আগে ঢাকায় ২০১৭ সালের ৮ জুন মাথায় ফুটবল নিয়ে ১৩ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়ে রেকর্ড করেছিলেন হালিম। প্রায় সাত বছর সেই রেকর্ড তার দখলেই ছিল।
আব্দুল হালিম প্রথমবার গিনেস বুকে নাম তোলেন ২০১১ সালে, ঢাকার জাতীয় স্টেডিয়ামে মাথায় বল রেখে ১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার হেঁটে। এরপর ২০১৫ সালে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রোলার স্কেটিং করে ২৭ দশমিক ৬৬ সেকেন্ডে ১০০ মিটার অতিক্রম করেও গড়েছিলেন বিশ্ব রেকর্ড।
হালিম জানান, “গিনেস রেকর্ড করে দেশের সুনাম বাড়িয়েছি। কিন্তু এর বিনিময়ে তেমন কিছুই পাইনি। একটা রেকর্ড করতে অনেক সময়, শ্রম ও অর্থ ব্যয় হয়। পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া আমার মতো মানুষ এটা কিভাবে করবে?”
হালিম চান, নতুন প্রজন্মকে এই দক্ষতা শেখাতে। তার ইচ্ছে, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা কৌশলগুলো শিখে নতুন নতুন রেকর্ড গড়ে মাগুরা তথা দেশের সুনাম বয়ে আনবে।
মাগুরা জেলা ক্রীড়া সংগঠক সৈয়দ বারকী আনজম বলেন, আব্দুল হালিম মাগুরার কৃতি সন্তান চতুর্থবারের মতো যে গিনিস বুকে রেকর্ড করেছে তাকে স্বাগত জানাই। স্পোর্টসে আব্দুল হালিম যে স্কিল গুলো করে ফুটবলে আমাদের এই নতুন প্রজন্ম দারুণ ভাবে উদ্ভুদ্ধ হবে। ফুটবলকে জাগ্রত করার জন্য আব্দুল হালিমের এই কৃতিত্ব দারুণ ভাবে প্রভাব ফেলবে।
মন্তব্য করুন