
লক্ষ্মীপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়নের বাসায় ফের ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
বুধবার (১অক্টোবর) বিকেলে শহরের মহিলা কলেজ সংলগ্ন এলাকায় নয়নের বাড়িতে কয়েকজন যুবক এসে ‘জুলাই যোদ্ধা’ পরিচয়ে আসবাবপত্র ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। এ সময় সংস্কার কাজ চলমান থাকায় একটি নিরাপত্তা দেয়ালও ভেঙে দেওয়া হয়। ঘটনা শুরুর দেড় ঘন্টা পর সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
এদিকে অগ্নিকাণ্ডের সময় বাড়ির মালামাল লুটপাটের ভিডিও ধারণ করায় স্থানীয় সাংবাদিকদের হেনস্তা করা হয়। রাত ৮ টার দিকে জানতে চাইলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাবেক মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মুরাদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সাবেক অবৈধ এমপি ও ছাত্র হত্যা মামলার আসামি সন্ত্রাসী নয়নের বাসায় দীর্ঘদিন ধরে গোপনে সংস্কার কাজ চলছিল। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা আজ বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে তারা বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কয়েকজন জুলাই যোদ্ধা বলেন, জেলার আহত ও শহীদদের হত্যার বিচার হয়নি। কয়েকজন গ্রেফতার হলেও অধিকাংশ আসামী এখনো বাইরে ঘুরেছেন। আহতরা যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। শহীদ পরিবারের সদস্যদের কান্না থামেনি। অথচ, হত্যাকারী নয়নের বাড়ি সংস্কার হচ্ছে। বহুতল ভবন ভাড়ায় পুনরায় দেশ ও জুলাই যোদ্ধাদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করবে। এটি হতে দেওয়া যায় না।
সংস্কার কাজে যুক্ত নির্মাণ শ্রমিক আবদুল মাজেদ বলেন, “আমরা সংস্কার কাজ করছিলাম। বিকেল ৫টার দিকে কয়েকজন যুবক এসে কাজ বন্ধ করতে বলে। পরে তারা একটি দেয়াল ভেঙে ফেলে এবং আসবাবপত্রে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
স্থানীয় সংবাদ কর্মী সাগর ওয়াহিদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে নিউজ কাভারেজ করতে গেলে জুলাই যোদ্ধা পরিচয়ে দুইজন আমাকে সহ সহকর্মীদের বাধা প্রদান সহ হেনস্তা করে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার সাইফুল ইসলাম রাজু বলেন, ওই বাড়ীটিতে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর সহযোগীতায় আমরা আগুন নিভিয়ে দিয়েছি।
মালামাল লুটপাট ও সাংবাদিক হেনস্তার প্রশ্নে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন লক্ষ্মীপুর জেলা শাখার সাবেক মুখ্য সংগঠক সাইফুল ইসলাম মুরাদ বলেন, জুলাই যোদ্ধারা ঘটনাস্থল ত্যাগের পর খুনি নয়নের বাড়ির মালামাল লুটের বিষয়টি শুনেছি। লুটপাটের সঙ্গে জড়িতদের কেউ আমাদের সহযোদ্ধা নয়।
এছাড়া সাংবাদিক হেনস্তার ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এটা একটা ভুল বুঝাবুঝি ছিল। পরে ডেকে এনে সাংবাদিকের সাথে মিমাংসা করে দেয়া হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেজাউল হক বলেন, আগুন দেওয়ার বিষয়টি জানা নেই।
মন্তব্য করুন