
		ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কলেজের সামনে ওষুধের দোকান উচ্ছেদ নিয়ে সংঘাতের ঘটনায় জেলা শহরে অনির্দিষ্টকালের জন্য ওষুধ বিক্রি বন্ধ ঘোষণা করেছে ব্যবসায়ীরা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজের সামনে সীমানা প্রাচীর ও দৃষ্টিনন্দন প্রধান ফটক নির্মাণের দাবিতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পক্ষে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের প্রতিবাদে এই সিদ্ধান্ত নেয় ব্যবসায়ীরা।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) ভোর থেকে জেলা শহরের সব ফার্মেসি বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন, বিশেষ করে রোগী ও তাদের স্বজনরা। বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার আহ্বানে এই কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মহিলা কলেজের সামনের দোকানগুলো তৎকালীন বেসরকারি কলেজ থাকাকালীন কলেজ প্রশাসনের অনুমোদন নিয়ে স্থাপন করা হয়েছিল এবং দীর্ঘদিন ধরে বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছে। হঠাৎ করে কলেজ কর্তৃপক্ষ তাদের অবৈধ ঘোষণা করে উচ্ছেদের উদ্যোগ নিয়েছে, যা ব্যবসায়ীদের জীবিকার ওপর আঘাত।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতি পৌর শাখার সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, “১৯৮৩ সাল থেকে আমরা কলেজের আশপাশের দোকান ভাড়া নিয়ে নিয়মিত ভাড়া পরিশোধ করছি। অথচ এখন আমাদের অবৈধ আখ্যা দিয়ে জোরপূর্বক উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা অন্যায় ও অবৈধ। আমরা অবিলম্বে উচ্ছেদ বন্ধ ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের ন্যায়সংগত সমাধান দাবি করছি। সমাধান না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।”
অন্যদিকে কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, সীমানা প্রাচীর ও প্রধান ফটক নির্মাণ, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং ক্যাম্পাসের পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে কোনো বাণিজ্যিক দোকান থাকতে পারবে না।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হান্নান খন্দকার বলেন, “কলেজের মূল ফটকের সামনে থাকা দোকানগুলো কলেজের জায়গা দখল করে আছে। আমরা নিরাপত্তা ও সৌন্দর্য রক্ষার স্বার্থে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছি। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা হবে।”
এদিকে কলেজ শিক্ষার্থীরা দোকান উচ্ছেদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দাবি, ফটকের সামনে দোকান ও ভিড়ের কারণে মেয়েদের চলাচলে বিড়ম্বনা সৃষ্টি হয়, পরীক্ষার সময় হয়রানির ঘটনাও ঘটে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা কলেজের স্বার্থের বিপক্ষে নন, বরং প্রশাসনের মাধ্যমে আলোচনার পথেই সমাধান চান। বিকেল পর্যন্ত উভয় পক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে অনড় রয়েছে। এ ঘটনায় শহরের ওষুধের দোকান বন্ধ থাকায় জরুরি ওষুধ না পেয়ে সাধারণ মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
মন্তব্য করুন