
		উপমহাদেশের অমর সঙ্গীতশিল্পী মোহাম্মদ রফির প্রয়াণ দিবস আজ। ১৯৮০ সালের ৩১ জুলাই আজকের দিনে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশে জন্মগ্রহণকারী ভারতীয় সঙ্গীতশিল্পী মোহাম্মদ রফি।
ব্যতিক্রমী কণ্ঠের কারণে একসময় তিনি সমগ্র উপমহাদেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব ছিলেন। তিনি সঙ্গীত ভুবনে সুদীর্ঘ চার দশক সময়কাল অতিবাহিত করেন। সঙ্গীতকলায় অসামান্য অবদান রাখায় শ্রেষ্ঠ গায়ক হিসেবে জাতীয় পদক এবং ৬-বার ফিল্মফেয়ার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন মোহাম্মদ রফি। এছাড়াও, ১৯৬৭ সালে ভারত সরকার প্রদত্ত পদ্মশ্রী সম্মানেও অভিষিক্ত হয়েছেন তিনি।
প্রায় চল্লিশ বছর সময়কাল ধরে সঙ্গীত জগতে থাকাকালীন ছাব্বিশ হাজারেরও অধিক চলচ্চিত্রের গানে নেপথ্য গায়ক বা প্লেব্যাক সিংগার হিসেবে সম্পৃক্ত ছিলেন মোহাম্মদ রফি। তিনি বহুবিধ গানে অংশ নেয়ার বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন। তন্মধ্যে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, দেশাত্মবোধক গান, বিরহ-বিচ্ছেদ, উচ্চ মার্গের প্রেম-ভালবাসা, কাওয়ালী, ভজন, গজলসহ বিভিন্ন গোত্রের গানে দক্ষতা ও পারদর্শিতা দেখিয়েছেন সমানভাবে। বিশেষ করে হিন্দি এবং উর্দু ভাষায় সমান দক্ষতা থাকায় তার গানগুলোতে বৈচিত্র্য এসেছে সমধিক। হিন্দিসহ কোনকানি, উর্দু, ভোজপুরী, উড়িয়া, পাঞ্জাবী, বাংলা, মারাঠী, সিন্ধী, কানাড়া, গুজরাতি, তেলুগু, মাঘী, মৈথিলী, অহমীয়া ইত্যাদি ভাষায় তিনি গান গেয়েছেন। এছাড়াও আরও গান গেয়েছেন - ইংরেজি, ফরাসি, স্প্যানিশ এবং ওলন্দাজ ভাষায় ।
দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া পত্রিকায় ২০১০ সালের ২৪ জুলাই প্রকাশিত প্রতিবেদনে তার চমকপ্রদ কণ্ঠস্বরকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা হয়। ‘আমি তোমাকে ভালবাসি’ বা (আই লাভ ইউ) বাক্যটিকে যদি ১০১ প্রকারে গান আকারে গাইতে বলা হয়, মোহাম্মদ রফি ঐ ১০১ প্রকারে তার সবটুকুই করতে পারতেন। প্রায় চার দশকের গানের ভুবনে অসাধারণ অবদানের জন্য মোহাম্মদ রফি তাই সকল সময়ের, সকল কালের ও সকল বিষয়ের শিল্পী হিসেবে পরিগণিত হয়ে আছেন। তার শেষ গানটি ছিল ‘আস পাস’ ছবির ‘শ্যাম ফির কিউ উদাস হ্যায় দোস্ত’। লক্ষ্মীকান্ত-প্যায়ারে লালের রচনায় এ গানটি রেকর্ড করার কয়েক ঘণ্টা পরেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি। তাঁকে জুহু মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়।
মন্তব্য করুন