
		শিল্পকলা একাডেমিতে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চলছে ৯ দিনব্যাপী মনসুন রেভ্যুলেশন স্পিরিট উপজীব্য ‘জুলাই পুনর্জাগরণ নাট্যোৎসব ২০২৫’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত নাট্য উৎসবের দ্বিতীয় দিন আগষ্ট শনিবার সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালার মূল হলে মঞ্চস্থ হয় নাটক ‘শুভঙ্কর হাত ধরতে চেয়েছিল’। ‘তিরন্দাজ রেপার্টরী’র পরিবেশনায় নাটকটির রচনা ও নির্দেশনা দিয়েছেন দীপক সুমন।
নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নিলয় কুমার বিশ্বাস, সারাহ মীম, সাগর মৈত্রী, ফারজানা মেহেজাবীন, কৌশিক আহমেদ, মাহিমা সাদিক লিমা, সাদিয়া শাহীন অন্তু, মানসিফ তাজরিয়ান, বাপ্পি হায়দার, সোনালি কবির, মো. আবদুল্লাহ আল নোমান, মো. সাজাওয়ার হোসেন অরণ্য, সানজিদ ইসলাম তূর্য, সামিয়া চৌধুরী, আল ওয়ালীদ জিয়ান, বাপ্পী হায়দার, দীপক সুমন।
নাটকের নির্দেশকের মতে, এই নাটকের বিভিন্ন চরিত্রের মধ্য দিয়ে আমরা শুধু স্মৃতিকে স্মরণ করতে চাইনা, বিজয়কে উদযাপন করতে চাইনা। আমরা মনে করিয়ে দিতে চাই, সকল হারিয়ে যাওয়া জীবনের প্রতি আমাদের দায় আছে। সেই দায় আমরা পালন করবো।
‘শুভঙ্কর হাত ধরতে চেয়েছিল’ নাটকে তুলে ধরা হয় জুলাই! এক দুঃসহ সময় আমাদের একত্রিত করেছিলো। আবু সাঈদের প্রসারিত দুইহাত থেকে অজপাড়াগায়ের হৃদয় তরুয়ার শহীদি মৃত্যু মানুষকে নতুন করে স্বপ্ন দেখিয়েছে, যার কারণে স্বৈরাচারের বিশাল পাথর দেশ থেকে নামাতে পেরেছে। সেরকমই এক জীবন নাটকের শুভঙ্করের। সেও এই একই ভোগবাদী সমাজের স্বপ্ন ও বাস্তবতার বিস্তর ফারাক নিয়ে বড় হয়ে উঠা একজন নতজানু নাগরিক। যেই জীবনের বেশীরভাগ জুড়েই আছে সয়ে যাওয়ার ইতিহাস, আছে না পাওয়ার দীর্ঘশ্বাস। সেই জীবন শুভঙ্কর ও তার পিতামাতাকে হতাশ করে-তাদের স্বপ্ন থেকে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে। তবুও শুভঙ্কর স্বপ্ন দেখতো এক বৈষম্যবিহীন সময়ের। সে অনুভব করতো সেই সময় নির্মাণ এমনি এমনি হয়না- তার জন্য লড়াইটাও করতে হয়।
সময়ের প্রয়োজন যখন উপস্থিত হয়, শুভঙ্কর ঠিকই হাজির হয় রাজপথে। অনেক না পাওয়ার গ্লানি ও অসংখ্য আকাঙ্ক্ষার জমিনে দাঁড়িয়ে শুভঙ্কর অন্যদের মতোই স্বৈরাচারের গুলির সামনে স্লোগানে কণ্ঠে জোর লাগায় এবং যুদ্ধের চিরাচরিত নিয়ম সম্ভবত এই যে, কেউ পুড়ে যায় বলেই কেউ আলো পায়। আর সেই নিয়মেই সম্ভবত ভিড়ের ভেতর শুভঙ্কর হয়তোবা হারিয়ে যায়। আর যারা হারায়না তারা হয়ত সময়ের পরিক্রমায় শুভঙ্করদের নিয়ে বিস্মৃত হয়। তবুও কেউ কেউ থাকে, যারা বিস্মৃত হয়না- যারা স্মৃতিকে আঁকড়ে ধরে জীবন্ত রাখে শুভঙ্করদের। তেমনই এক স্মৃতি আঁকড়ে আছে নাটকের আরেক চরিত্র নীলা।
মন্তব্য করুন