
		বাংলাদেশের বরেণ্য অভিনেত্রী মিলি বাশার। বাংলা টিভি নাটক ও চলচ্চিত্রে প্রধানত মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করে থাকেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দেশের অরেক গুণী অভিনেতা ফখরুল বাশার মাসুমের স্ত্রী। সাম্প্রতিক সময়ে অনেক জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী এক সময় ঢাকা থিয়েটারের সক্রিয় কর্মী ছিলেন । তিনি ১৯৭৭ সালে ঢাকা থিয়েটারে যুক্ত হন। সেখানে ১৯৭৯ সালে নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর নির্দেশনায় ‘শকুন্তলা’ নাটকে অভিনয়ের মধ্য দিয়ে তারা যাত্রা শুরু হয়। তবে এর পর দীর্ঘ সময় সৌদি আরবে অবস্থান করেন। তবে ২০১২ সালে দেশে ফিরে আবারও নাটকে কাজ শুরু করেন।
নাটকের অভিনয়শিল্পী হলেও মিলি বাশার সিনেমাতেও অভিনয় করেছেন। মিলি বাশার অভিনীত উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্র ‘যদি একদিন’ (২০১৯) ‘অরিত্রীর মা’, ‘রূপসা নদীর বাঁকে’ (২০২০) ,‘খাঁচার ভেতর অচিন পাখি’ (২০২১) ‘রেহানা বেগম’, ওয়েব চলচ্চিত্র, ‘কালবেল (২০২১), ‘দামাল’ (২০২২), পরাণ (২০২২), ‘তালাশ’ (২০২২), ‘যাও পাখি বলো তারে’ (২০২২), ‘মেঘ রোদ্দর খেলা’ (২০২২), ‘দাগ’ (২০২২) ‘ওয়েব চলচ্চিত্র লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ প্রভৃতি (২০২৩) । মিলি বাশার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নাফিসের মা‘ শ্রাবণ জোৎস্নায় (২০২৪) আগন্তুক (২০২৪), ‘বালাপ’ (২০২১), ‘মারকিউলিস’ (২০২৩) ‘জয়িতার মা’ প্রভৃতি।
অভিনয় শুরুর দিকে অপূর্বর সঙ্গে নিয়াজ কামরান আবিরের পরিচালনায় একটি নাটকে অভিনয় করেন মিলি বাশার। এরপর থেকে নাটকে অভিনয়ে তার ব্যস্ততা বাড়তেই থাকে। এরই মধ্যে তিনি রুবেল হাসানের পরিচালনায় একটি নাটকের কাজ শেষ করেছেন। নাটকের পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয় করেও তিনি দর্শকের ভালোবাসা পেয়েছেন। মিলি বাশার অভিনীত রায়হান রাফী পরিচালিত ‘নূর’ সিনেমাটিও রয়েছে মুক্তির অপেক্ষায়।
এছাড়া মুক্তিপ্রাপ্ত বেশিরভাগ সিনেমাতেই তিনি একজন মায়ের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। মিলি বাশার বলেন, সত্যি বলতে কি, সিনেমায় কাজ করার বিষয়টা একটু অন্যরকম। বিশাল ক্যানভাসের ব্যাপার, যখন শুটিং হয় তখন লোকেশনে বিচিত্রতা আসে। যে কারণে সিনেমায় অভিনয় করার ব্যাপারটা একটু বেশিই ভালোলাগা কাজ করে। আর নাটকে অভিনয় করার বিষয়টা তো আমার কাছে আমার ঘর-সংসারের মতো। এখানে সবাই আমার আপনজন, প্রিয়জন। যাদের সঙ্গে দেখা না হলে ভালো লাগে না। সিনেমায় অভিনয় করেও আমি দর্শকের যে ভালোবাসা পেয়েছি, তাতে সত্যিই মুগ্ধ আমি। দর্শকের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। সেসব পরিচালকের প্রতিও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা, যারা আমাকে নিয়ে নাটক সিনেমায় কাজ করেছেন।
মিলি অভিনীত মঞ্চনাটকের মধ্যে সেলিম আল দীনের রচনায় ও নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চুর নির্দেশনায় ‘শকুন্তলা’, ‘মুনতাসির ফ্যান্টাসি’ এবং প্রফেসর আবদুস সেলিম অনূদিত ও হুমায়ূন কবির হিমুর নির্দেশনায় ‘আউয়ার কান্ট্রিস গুড’ প্রভৃতি।
১৯৮২ সালের ৩০ জুলাই মাসুম বাশার ও মিলি বাশার বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। পরে তারা একই সময়ে দেশের বাইরে চলে গেলেও ২০১২ সালে আবারও একসঙ্গেই দেশে ফিরে আসেন। সে সময় বরেণ্য অভিনেতা, নির্মাতা আফজাল হোসেনের পরামর্শে এবং সহযোগিতায় মাসুম ও মিলি দুজন আবারও অভিনয় শুরু করেন।
এদিকে জন্মদিন উপলক্ষে মিলি বাশারকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তার জীবনসঙ্গী মাসুম বাশার। সামাজিক মাধ্যমে তিনটি ছবি পোষ্ট করে তিনি লেখেন ‘আজ ১৭ অগাস্ট, আজ তার জন্মদিন। সারাজীবন এমনই হাসিমুখেই থেকো...’। তাঁদের দুই সন্তান। বড় মেয়ে নাবিলা বাশার কানাডায় থাকেন। ছোট মেয়ে নাজিবা বাশার দেশের একটি প্রতিষ্ঠিত দৈনিকের সহসম্পাদক হিসেবে কর্মরত।
মন্তব্য করুন