
		বাংলাদেশ এবং পশ্চিমবঙ্গে এই নামে (নীল আকাশের নীচে) একাধিক ছবি হয়েছে। তবে এদেশে নীল আকাশের নীচে জনপ্রিয় হয়েছে মূলতঃ গান এবং ছবির কাহিনীর কারণে।ছবির বিখ্যাত সেসব গান হচ্ছে-
‘নীল আকাশের নীচে আমি রাস্তায় চলেছি একা/ঘন সবুজের শ্যামল মায়ায় দৃষ্টি পরেছে ঢাকা’ এবং‘হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়/ভাবনা কী আর তাতে ক্ষতি বলো কার/সেই যে ভালো যাহা মন চায়’..।
এছাড়াও আছে- ‘প্রেমেরই নাম বেদনা সেকথা বুঝি নি আগে’ কিংবা ‘গান হয়ে এলে’..
ভিন্ন ধারার নির্মতারা যারা প্রচলিত বা বানিজ্যিক ছবি (এটাও ঠিক সব ছবির আড়ালেই একটা বানিজ্যের গন্ধ বা ইচ্ছে থাকে) থেকে নিজেদের দূরে রাখেন, তারা বলেন যে ‘গান হিট তো ছবি হিট’ এটাও একটা ‘ফর্মূলা’!
ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৬৯ সালের ১০ অক্টোবর। ছবির পরিচালক ছিলেন নারায়ণ ঘোষ মিতা এবং সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন সত্য সাহা। ছবিতে অভিনয় করেছিলেন রাজ্জাক,কবরী, রোজী,আনোয়ার হোসেন.কবিতা,আলতাফ,খান জয়নুল প্রমুখ।
সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন সত্য সাহা। গান লিখেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান। ‘হেসে খেলে জীবনটা যদি চলে যায়’ গানটা গেয়েছিলেন মোহাম্মাদ আলী সিদ্দিকী আর ‘নীল আকাশের নীচে আমি’ গেয়েছিলেন খন্দকার ফারুক আহমেদ। গান দুটি লিখেছিলেন গাজী মাজহারুল আনোয়ার। ‘প্রেমের নাম বেদনা’ ও ‘গান হয়ে এলে’ লিখেছিলেন মোহাম্মাদ মনিরুজ্জামান এবং গান দুটি গেয়েছিলেন মাহমুদুন্নবী ও ফেরদৌসি রহমান।
গরীব ধনীর প্রেম নিয়ে প্রচুর ছবি হয়েছে। নীল আকাশের নীচে ছবিটাও এরচেয়ে খুব আলাদা নয়। আনোয়ার হোসেন ট্যাক্সি চালাতেন। সংসারের অভাব অনটন আর তার অসুস্থতার কারণে একদিন গাড়ি নিয়ে পথে নামে রাজ্জাক। তার গাড়িতে চড়ে পার্কে আসা বড় লোকের এক কন্যা কবরীকে তার কথিত বয়ফ্রেন্ডের লালসার হাত থেকে বাঁচায় রাজ্জাক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজ্জাক আর কবরীর দেখা হলে প্রেম হয় তাদের মধ্যে। এরপর টাণাপোড়েন আর বেদনার গল্প শেষে তাদের প্রেম পরিনতি পায়। তারপরও এই ছবিতে মিষ্টি মেয়ে কবরী আর লাভার বয় রাজ্জাকের উপস্থিতি ছিল উজ্জ্বল।
ঢাকা শহরের রাস্তা,ট্যাক্সি ড্রাইভারদের আড্ডা,আনন্দ আর বেদনা সব নিয়ে ছবিটা তুমুল জনপ্রিয় হয়েছিল,গানগুলো আজও সমান জনপ্রিয়। নায়ক রাজ্জাক এক স্মৃতিচারণে বলেছিলেন-‘ফুটবল খেলার অভিজ্ঞতা থেকে দৌড়ঝাপ আর আনন্দ ঢেলে দিয়েছিলাম সেই গানে-নীল আকাশের নীচে আমি রাস্তায় চলেছি একা’!
ছবি আর গান বেঁচে থাকুক অনাদিকাল!
মন্তব্য করুন