
		দেখতে দেখতে দীর্ঘ ৭ বছর আইয়ুব বাচ্চুবিহীন কাটাল বাংলাদেশের সংগীতাঙ্গন। ‘এই রুপালি গিটার ছেড়ে একদিন চলে যাব দূরে’—নিজের এই গানের মতো আসলেই চলে গেলেন তিনি। বলছিলাম বাংলা ব্যান্ড সংগীতের জাদুকর আইয়ুব বাচ্চুর কথা। ২০১৮ সালের আজকের এই দিনে হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মাত্র ৫৬ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নেন এই শিল্পী।
১৯৬২ সালের ১৬ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরে ব্যান্ড লিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চুর জন্ম। ১৯৭৬ সালের দিককার কথা। সেই সময় ‘আগলি বয়েজ’ নামের এক ব্যান্ড গঠনের মাধ্যমে সংগীতজগতে পথচলা শুরু হয় এই গানের জাদুকরের। এরপর আরও বেশ কিছু ব্যান্ডের সঙ্গে কাজ করেন আইয়ুব বাচ্চু। পরে ১৯৯১ সালে গঠন করেন নিজের ব্যান্ড ‘এলআরবি’। এই ব্যান্ড থেকে দর্শকদের উপহার দেন ‘কষ্ট পেতে ভালোবাসি’, ‘চলো বদলে যাই’, ‘সেই তুমি’, ‘এখন অনেক রাত’–এর মতো কালজয়ী সব গান।
গিটার বাজানোয় তাঁর দক্ষতা ছিল অসাধারণ। শুধু গায়কই নয়, আইয়ুব বাচ্চু ছিলেন গিটার লেজেন্ড, সংগীত পরিচালক ও সুরকারও। বাংলা রক সংগীতকে জনপ্রিয় করে তোলায় তাঁর ভূমিকা অনন্য। নিজস্ব স্টাইল, কণ্ঠের গভীরতা ও গানের কথার আবেগ তাঁকে আলাদা পরিচিতি দিয়েছে। তাঁর সঙ্গীতে ভালোবাসা, সংগ্রাম, আশাবাদ এবং জীবনের বাস্তবতার অনন্য মেলবন্ধন পাওয়া যায়।
তার প্রথম গাওয়া গান ‘হারানো বিকেলের গল্প’। আর প্রথম একক অ্যালবাম ‘রক্তগোলাপ’। তবে গানের জগতে সফলতা পান তার দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘ময়না’-এর মাধ্যমে।
দীর্ঘ ৪০ বছরের ক্যারিয়ার জীবনে অসংখ্য গান ভক্তদের উপহার দিয়ে গেছেন তিনি। গায়কী জীবনে ১২টি ব্যান্ড, ১৬টি একক ও বহু মিশ্র অ্যালবাম প্রকাশ হয়েছিল তার।
তার সব কালজয়ী গান গাওয়ার সময় তিনি নিজে যেমন দরদ দিয়ে গান গেয়েছেন, তেমনি দর্শকও কেঁদেছে অঝোর ধারায়। আবেগী এসব গানে সুখ, দুঃখ বেদনা, প্রেম, ভালোবাসা, কষ্ট সব অনুভূতিই আলাদা এক মাত্রা পেতো তার কন্ঠে।
জীবনের সব আয়োজন ফেলে দরজার ওপাশে চলে গেলেও দরজার এপাশে তিনি রেখে গেছেন তার জন্য কোটি ভক্তের অশ্রুসিক্ত চোখ।
মন্তব্য করুন