
		যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোড়ন তুলতে যাচ্ছে ইলন মাস্কের নতুন উদ্যোগ। বিশ্লেষকদের ধারণা মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল এখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথা ব্যাথার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রোববার যুক্তরাষ্ট্রে ‘আমেরিকা পার্টি’-র আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন ইলন মাস্ক। এর ঠিক একদিন আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তার আলোচিত বাজেট ‘বিগ, বিউটিফুল বিল’ স্বাক্ষর করেন।
এদিকে আরেক দু:সংবাদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য। ‘মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন’ আন্দোলনের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও রক্ষণশীল রাজনৈতিক কর্মী লরা লুমার ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন, ট্রাম্পের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হওয়া তিন প্রভাবশালী মার্কিনি ইলন মাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল ‘আমেরিকা পার্টি’-তে যোগ দিতে পারেন। এই তিনজন হলেন- সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ভাষ্যকার টাকার কার্লসন, কংগ্রেস সদস্য মার্জোরি টেইলর গ্রিন এবং রিপাবলিকান আইনপ্রণেতা থমাস ম্যাসি।
ঘোষণার পরপরই লুমার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছেন, ‘আমি ভবিষ্যদ্বাণী করছি, টাকার কার্লসন, এমটিজি (মার্জোরি টেইলর গ্রিন) এবং থমাস ম্যাসি নতুন ‘আমেরিকা পার্টি’-তে যোগ দেবেন- প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে বেকায়দায় ফেলতেই।’
লুমার অতীতে টাকার কার্লসনকে ‘নকল ট্রাম্প সমর্থক’ বলে অভিহিত করেছিলেন। অন্যদিকে, মার্জোরি টেইলর গ্রিনও ট্রাম্পের রোষানলে পড়েন, কারণ তিনি বিতর্কিত বিল ইস্যুতে ইলন মাস্কের অবস্থানকে সমর্থন করেন। মাস্কের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত থমাস ম্যাসি ছিলেন দুইজন রিপাবলিকানের একজন, যিনি পুরো হাউজ ডেমোক্রেটিক ককাসের সঙ্গে একযোগে ট্রাম্পের ব্যয় বিলের বিপক্ষে ভোট দেন। এ কারণে ট্রাম্প তাকে একবার ‘দু:খজনক ব্যর্থ ব্যক্তি’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন।
২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্পের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক অনুদানদাতা ছিলেন টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান এবং বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক। কিন্তু পরবর্তীতে দুজনের মধ্যে সম্পর্কের চরম অবনতি ঘটে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের ব্যয় কমাতে এবং সরকারি চাকরি হ্রাসে গঠিত ‘ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট এফিশিয়েন্সি’র প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে মাস্ক ট্রাম্পের ঘরোয়া ব্যয়ের পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। তার দাবি ছিল, এই পরিকল্পনা দেশকে মারাত্মক ঋণে নিমজ্জিত করবে। পরবর্তীতে মাস্ক ঘোষণা দেন, যারা এই বিল সমর্থন করেছেন, তাদের হারাতে তিনি সর্বশক্তি দিয়ে লড়বেন। সেই লক্ষ্যেই তিনি গঠন করেছেন ‘আমেরিকা পার্টি’।
নতুন দল ঘোষণার সময় মাস্ক এক্স-এ লেখেন, ‘অপচয় ও দুর্নীতির মাধ্যমে আমাদের দেশকে দেউলিয়া করে তোলার বিষয়ে যখন কথা আসে তখন আমরা আসলে একদলীয় শাসনের মধ্যেই বাস করি। এটি কোনো গণতন্ত্র নয়। আজ আমেরিকা পার্টি গঠিত হলো- আপনাদের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিতে।’
তিনি আরও জানান, ৪ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতা দিবসে তিনি একটি জরিপ পরিচালনা করেন, যেখানে প্রশ্ন ছিল: ‘আপনি কি দুই-দলীয় (বা অনেকে যাকে ‘ইউনিপার্টি’ বলেন) ব্যবস্থার হাত থেকে স্বাধীনতা চান?’ এই জরিপে অংশ নেন ১২ লাখেরও বেশি মানুষ এবং ফলাফল অনুযায়ী, ২:১ অনুপাতে মানুষ নতুন রাজনৈতিক দলের পক্ষে রায় দেন।
এর প্রেক্ষিতে শনিবার মাস্ক ঘোষণা দেন, আপনারা নতুন একটি রাজনৈতিক দল চেয়েছেন- আর তা আপনারা পেয়ে গেছেন!’ তিনি এক্স-এ একটি মিমও পোস্ট করেন, যেখানে একটি দুই-মাথাওয়ালা সাপের ছবি দিয়ে লেখা ছিল, ‘ইউনিপার্টির অবসান ঘটাও।’
মন্তব্য করুন