
		ভারতে ভয়াবহ আকস্মিক বন্যায় অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। এতে ৫০ জনের বেশি নিখোঁজ রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার বরাতে আন্তর্জাতিক একাধিক গণমাধ্যম জানায় ভারতে উত্তরাখন্ড রাজ্যের উত্তরকাশী জেলার ধারালি গ্রামে হঠাৎ প্রবল বর্ষণে খির গঙ্গা নদীর উজানে ভয়াবহ বন্যা দেখা দেয়। মঙ্গলবারের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
রাজ্যের উত্তরকাশীর জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত আর্য চারজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করে জানান, আকস্মিক বন্যার এক বিশাল ঢেউ এলাকাটি ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। বর্তমানে জীবন ও সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। উদ্ধার অভিযান পরিচালনার জন্য সেনাবাহিনী, জাতীয় দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনী ও রাজ্য দুর্যোগ মোকাবেলা বাহিনীর সদস্যদের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে।
উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর ধামি এক্সে (সাবেক টুইটার) লিখেছেন, ‘উত্তরকাশীর ধরালী এলাকায় বৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর অত্যন্ত দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। এসডিআরএফ, এনডিআরএফ, জেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট অন্য দলগুলো যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে। এ বিষয়ে আমি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি এবং নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সবার নিরাপত্তার জন্য আমি ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি।
এদিকে ওই এলাকায় বন্যার পানির তোড়ে ভেসে গেছে অসংখ্য বাড়িঘর। এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেখা গেছে, আকস্মিক বন্যায় সড়কের ওপর থাকা মানুষজনসহ সবকিছু ভেসে যাচ্ছে। ভয় ও আতঙ্কে মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে দৌড়াচ্ছে। ভিডিওতে আতঙ্কিত এক ব্যক্তিকে ‘বাপ রে বাপ’ বলতে শোনা যায়। চোখের সামনে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ দেখে তিনি এমন কথা বলেন। স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে পাহাড়ি গ্রাম ধরালীতে মেঘ বিস্ফোরণের কারণে আকস্মিক বন্যা দেখা দেয়। এ সময় তীব্র স্রোতের কারণে অসংখ্য বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ও ভেসে গেছে। গঙ্গোত্রী যাওয়ার পথে ধরালী একটি যাত্রাবিরতি স্থান। সেখানে অনেক হোটেল, রেস্তোরাঁ এবং থাকার জায়গা রয়েছে। বন্যায় সেখানেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন ভিডিওতে দেখা গেছে, তীব্র স্রোতের সঙ্গে কাদামাটি ভরা পানি পাহাড় বেয়ে নদীর তীরে থাকা বাড়িঘরের দিকে ধেয়ে যাচ্ছে।
সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উত্তরাখন্ডের মাতলি এলাকায় অবস্থানরত ইন্দো-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) ১২তম ব্যাটালিয়নের ১৬ সদস্যের একটি দল ধরালী পৌঁছেছে। একই ব্যাটালিয়নের ইউনিটকে দ্রুত ওই এলাকায় পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের নদীর তীর থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানিয়েছে সরকার। পাশাপাশি শিশু ও গবাদিপশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন