
		লাতিন আমেরিকার দেশ বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন রানঅফ বা দ্বিতীয় দফায় গড়িয়েছে। দেশটিতে প্রথম দফার ভোট হয় গত রোববার ১৭ আগস্ট। এদিন ভোটের প্রাথমিক ফলাফলে দেখা গেছে ৩২ দশমিক ১৫ শতাংশ ভোট পেয়ে এগিয়ে আছেন মধ্যডানপন্থী সিনেটর রদ্রিগো পাজো। অপর দিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোর্হে ‘তুতো’ কুইরোগা রামিরেজ পেয়েছেন ২৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ ভোট। এছাড়া ধনকুবের ব্যবসায়ী মধ্যডানপন্থী স্যামুয়েল দোরিয়া মেদিনা প্রায় ২০ শতাংশ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন।
বলিভিয়া এক প্রজন্মের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। নির্বাচনে বিষয়টি প্রাধান্য পাচ্ছে। ২০০৫ সালে ইভো মোরালেস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে বলিভিয়ায় সমাজতান্ত্রিক শাসনের যাত্রা শুরু হয়। রোববারের ভোটের মাধ্যমে ২০ বছরের সমাজতান্ত্রিক শাসনের যবনিকাপাত হতে চলেছে। কোনো প্রার্থী ৪০ শতাংশের বেশি ভোট না পাওয়ায় এবং দ্বিতীয় স্থানে থাকা প্রার্থীর চেয়ে ভোটের ব্যবধান ১০ শতাংশের কম হওয়ায় ভোট দ্বিতীয় দফায় গড়িয়েছে। আগামী ১৯ অক্টোবর এ ভোট হবে। নির্বাচনের সাত দিনের মধ্যে ফলাফল ঘোষণা করা হবে।
চমক দেখালেন রদ্রিগো পাজ: এদিকে স্থানীয় সময় রোববারের ভোটে চমক দেখিয়ে এগিয়ে গেছেন বলিভিয়ার মধ্যপন্থী প্রার্থী সেনেটর রদ্রিগো পাজ। তবে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় আগামী১৯ অক্টোবর তাকে লড়তে হবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ও ডানপন্থী নেতা হোর্হে ‘তুতো’ কুইরোগার বিপক্ষে।৯১% ভোট গণনা শেষে রদ্রিগো পাজ পেয়েছেন ৩২.৮% ভোট।
অন্যদিকে, কুইরোগা পেয়েছেন ২৬.৪%। তবে, প্রেসিডেন্ট হতে হলে প্রার্থীকে ৫০% বা অন্তত ৪০% ভোট এবং নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে ১০ শতাংশ পয়েন্ট এগিয়ে থাকতে হয়। প্রত্যাশিত ফলাফল না আসায় নিশ্চিত হলো রান-অফ। ফলাফলে বড় ধাক্কা খেলো ক্ষমতাসীন ‘মুভমেন্ট টুওয়ার্ড সোশ্যালিজম’ (এমএএস) দল, যারা প্রায় ২০ বছর ধরে বলিভিয়ার রাজনীতিতে প্রভাবশালী।
দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এভো মোরালেস একসময় লাতিন আমেরিকার ‘পিংক টাইড’ আন্দোলনের প্রতীক ছিলেন। কিন্তু এবারের সরকারি এমএএস প্রার্থী এদুয়ার্দো দেল কাস্তিয়ো ভোট পেলেন মাত্র ৩.২%। আরেক তরুণ বামপন্থী নেতা, সিনেট সভাপতি আন্দ্রিনিকো রদ্রিগেজ পেলেন ৮% ভোট।
অপ্রত্যাশিতভাবে এগিয়ে আসা রদ্রিগো পাজকে বিশ্লেষকরা বলছেন-বলিভিয়ানরা পুরোপুরি ডানপন্থী শিবিরে ফিরতে চান না। ডানপন্থীদের প্রস্তাবিত কৌশল-লিথিয়াম বিদেশি কোম্পানিকে বিক্রি ও আইএমএফ থেকে ঋণ নেয়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে সমালোচনা করেছেন।
প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ব্যবসায়ী স্যামুয়েল দোরিয়া মেদিনা চতুর্থবারের মতো ব্যর্থ হলেন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আমি চেয়েছিলাম বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট হিসেবে সেবা করতে। তা সম্ভব হয়নি, তবে কোনো অনুতাপ নেই। এই ভোটের ফলাফলে এখন প্রশ্ন-১২ কোটি মানুষের দেশটি কোন পথে যাবে, যখন তারা তীব্র জ্বালানি সংকট, দ্বিগুণ অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি এবং মার্কিন ডলারের ঘাটতিতে ভুগছে।
মন্তব্য করুন