
		কলা আমাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকার একটি পরিচিত ফল। অনেকেই পাকা কলা খেতে পছন্দ করেন, তবে কাঁচা কলাও উপকারিতার দিক থেকে কোনো অংশে কম নয়। কাঁচকলা রান্না করে তরকারি হিসেবে খাওয়া যায়, আবার ভর্তা, ভাজি বা চপ-কাটলেট হিসেবেও উপভোগ করা যায়।
চলুন জেনে নিই কাঁচকলার কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতার কথা:
প্রিবায়োটিক গুণ
কাঁচকলায় থাকে প্রতিরোধী স্টার্চ, যা অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোর জন্য প্রিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে। এতে হজমের প্রক্রিয়া উন্নত হয়, পুষ্টি শোষণ সহজ হয় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, পেটফাঁপা এমনকি আইবিএস সমস্যাও নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়াবেটিসবান্ধব
এক কাপ সেদ্ধ কাঁচকলায় প্রায় ৩.৬ গ্রাম আঁশ বা ফাইবার থাকে। এটি জটিল শর্করায় সমৃদ্ধ হওয়ায় রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। কাঁচকলার গ্লাইসেমিক সূচক মাত্র ৩০, যা ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য উপকারী।
হজমে সহায়ক
প্রাচীনকাল থেকেই ডায়রিয়া, পেটের সংক্রমণ, বদহজম ও আলসারের মতো সমস্যায় কাঁচকলা ব্যবহার হয়ে আসছে। এতে থাকা পেকটিন ও প্রতিরোধী স্টার্চ সহজে হজমযোগ্য করে তোলে খাবারকে।
হৃদ্যন্ত্র ও স্নায়ুর যত্নে
এক কাপ সেদ্ধ কাঁচকলায় থাকে প্রায় ৫৩১ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, খারাপ কোলেস্টেরল কমানো এবং হৃদ্রোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি হ্রাসে সহায়তা করে। এটি স্নায়ুতন্ত্রের কার্যকারিতাও উন্নত করে।
ভিটামিন ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ
কাঁচকলা ভিটামিন বি৬-এর দারুণ উৎস। প্রতিদিনের চাহিদার প্রায় ৩৯ শতাংশ পূরণ হয় এক কাপ সেদ্ধ কাঁচকলা থেকে। ভিটামিন বি৬ হিমোগ্লোবিন তৈরিসহ শতাধিক এনজাইম বিক্রিয়ায় অংশ নেয়। পাশাপাশি এতে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন সি ও অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, যা দেহের প্রদাহ কমায়।
গ্লুটেনমুক্ত ও মস্তিষ্কের সহায়ক
যারা গ্লুটেন অসহিষ্ণুতায় ভুগছেন, তাঁদের জন্য কাঁচকলা গ্লুটেনমুক্ত বিকল্প হিসেবে আদর্শ। এটি গুঁড়া করে গ্লুটেনমুক্ত আটা হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ বৃদ্ধিতে এবং স্নায়ুবিক রোগের ঝুঁকি কমাতে এটি সহায়তা করে।
সম্ভাব্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
যদিও কাঁচকলার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া খুব বেশি নয়, তবে অতিরিক্ত খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে:
সঠিক পরিমাণে কাঁচকলা খাওয়া শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। তবে যেকোনো খাবারের মতোই, পরিমিতিতে থাকা আর নিজের শারীরিক অবস্থান অনুযায়ী সচেতন থাকা গুরুত্বপূর্ণ।
মন্তব্য করুন