
		ঘাড় ব্যথার মতো ছোট্ট কিন্তু মারাত্মক সমস্যা খুব কমই আছে। এ ব্যথা যেকোনো বয়সের মানুষেরই হতে পারে। শরীর-মাথার এই সংযোগস্থল অকেজো হয়ে পড়লে সবকিছুই অসহ্যকর লাগে।
প্রায়সময় দেখা যায় ঘুম থেকে উঠেই ঘাড়ে ব্যথা শুরু হয়। ছোটখাটো কারণ বা ঘাড়ের জোড়, পেশী, স্নায়ু, হাড় ও টিস্যু-জনিত বিভিন্ন ব্যাধি থেকেও এটি হতে পারে।
ঘাড় ব্যথা হওয়ার কিছু সাধারণ কারণ হলো,
১. ভুল ভঙ্গি (Posture Problem): মোবাইল বা কম্পিউটার অনেকক্ষণ ব্যবহার করার সময় মাথা নিচু করে রাখলে ঘাড়ের পেশি টান খায়। এছাড়া কুঁজো হয়ে বসলে বা শোয়ার সময় বালিশের উচ্চতা ঠিক না হওয়ার (বেশি বা কম) ফলেও এ সমস্যা দেখা দেয়।
২. পেশীর টান (Muscle Strain): হঠাৎ ভারি কিছু তোলা, ঘাড় বেশি ঘোরানো বা নড়াচড়া করলে ঘাড়ের পেশি টান খেতে পারে।
৩. হাড় ও জোড়ের সমস্যা: বয়স বাড়লে হাড় ক্ষয় (spondylosis) বা ডিস্কের সমস্যা, আর্থ্রাইটিস হলে ঘাড়ের জোড়ায় সমস্যা হয়।
৪. স্নায়ুর চাপ (Nerve compression): ঘাড়ের স্পাইন বা ডিস্ক সরে গিয়ে স্নায়ুতে চাপ খেলে হাত-আঙুলে ঝিনঝিন বা অবশভাবও হতে পারে।
৫. অন্যান্য কারণ: অতিরিক্ত স্ট্রেস বা দুশ্চিন্তায় থাকলে ঘাড়ের পেশী শক্ত হয়ে যায়। কিছু ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গ্যাসের কারণেও ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে।
ঘাড়ে ব্যথা হলে প্রথমে ব্যথার ধরণটা বোঝা জরুরি। হালকা নাকি তীব্র সে অনুসারে ব্যবস্থা নিতে হবে।
হালকা ব্যথা হলে কমানোর জন্য কিছু করণীয় হলো,
১. বিশ্রাম: হালকা ব্যথা হলে নিজেকে ভারী কাজ থেকে একটু বিশ্রাম দিতে হবে। বেশি ঘাড় নাড়াচাড়া করতে হয় এমন কাজে কিছুটা বিরতি নিতে হবে।
২. গরম সেঁক: হালকা গরম পানির ব্যাগ দিয়ে দিনে ২-৩ বার সেঁক দিলে পেশীর টান কমে যায়। তবে তাজা আঘাত বা ফোলাভাব থাকলে প্রথম ২৪ ঘণ্টা ঠান্ডা সেঁক ভালো।
৩. বসার বা হাঁটার সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় রাখুন
৪. মোবাইল বা বই চোখের সমান উচ্চতায় রাখুন।
৫. ঘুমানোর সময় মাঝারি উচ্চতার বালিশ ব্যবহার করুন।
৬. হালকা ব্যায়াম: মাথা ধীরে ডানে–বামে ঘোরান। আস্তে করে সামনে–পেছনে নিন। ব্যথা খুব বেশি হলে ব্যায়াম করবেন না।
৭. ম্যাসাজ: হালকা হাতে ঘাড় ও কাঁধ ম্যাসাজ করলে রক্তসঞ্চালন বাড়ে। ফলে ব্যথা কমে।
সাধারণ ঘাড় ব্যথা বেশিরভাগ সময় বাড়িতেই ঠিক হয়ে যায়। কিন্তু ব্যথা ৭–১০ দিনের পরও না কমলে, হাত–পায়ে ঝিনঝিন বা অবশভাব হলে, আঘাতের পর তীব্র ব্যথা শুরু হলে, মাথা ঘোরা বা দুর্বলতা অনুভব করলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
মন্তব্য করুন