মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

ইউরিক অ্যাসিড বাড়লে যা করবেন

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৩:৪৭ পিএম

যদি এমন হয় ইদানিং আপনার গাঁটে হঠাৎ করেই রাতে বা সকালে তীব্র ব্যথা অনুভব হচ্ছে এবং ফুলে গেছে। বিশেষ করে পায়ের বুড়ো আঙুল, হাঁটু, গোড়ালি বা কব্জিতে হঠাৎ তীব্র ব্যথা অনুভূত হচ্ছে। ব্যাথার জায়গায় ফোলা, লালচে ভাব ও গরম মনে হচ্ছে।

সকালে ঘুম থেকে উঠলে অস্বস্তি হচ্ছে ,জয়েন্ট শক্ত মনে আছে বলে মনে হচ্ছে। শরীর ভারি লাগছে , শক্তি কমে গেছে, ক্লান্ত ও অসুস্থ লাগছে। ঘন প্রস্রাবের চাপ আসছে এবং প্রস্রাবে জ্বালা হচ্ছে। সাথে কোমরে ব্যথা হতে পারে। এসব কিসের লক্ষণ, বলুন তো? শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেড়ে গেলে সাধানত এসব লক্ষণ প্রকাশ পায়।

যখন শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হয়, তখন তাকে হাইপারইউরিকেমিয়া বলা হয়। এটি বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ হতে পারে। শরীরের জন্য ইউরিক অ্যাসিড (uric acid) খুবই জরুরি হলেও, এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা নানা জটিল রোগের কারণ হতে পারে। ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখাটা খুবই জরুরি। আর এর প্রথম ধাপ হলো খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আনা।

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার কারণ- ১. খাদ্যাভ্যাস: উচ্চ-পুরিনযুক্ত খাবার বেশি খেলে। ২. কিডনির কার্যক্ষমতা হ্রাস: কিডনি ঠিকমতো ইউরিক অ্যাসিড ফিল্টার করতে না পারলে। ৩. ডিহাইড্রেশন: শরীরে পর্যাপ্ত পানি না থাকলে। ৪. জিনগত কারণ: পারিবারিকভাবে এই প্রবণতা থাকতে পারে।

ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার ৩ লক্ষণ- ১. গেঁটেবাত: পায়ের আঙুল, হাঁটু বা কব্জির মতো জয়েন্টে তীব্র ব্যথা এবং ফোলা। ২. কিডনি পাথর: কিডনিতে পাথর তৈরি হতে পারে। ৩. ত্বকের নিচে পিণ্ড: ইউরিক অ্যাসিড জমে গিয়ে ছোট পিণ্ড বা টোফি তৈরি হতে পারে।

নিয়ন্ত্রণের উপায়-

১. খাবারে পরিবর্তন: পুরিনযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন (লাল মাংস, সামুদ্রিক খাবার)। ফলমূল, শাকসবজি, এবং লো-ফ্যাট দুগ্ধজাত খাবার খান।

২. পর্যাপ্ত পানি পান করুন: এটি কিডনিকে ইউরিক অ্যাসিড পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। ৩. ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন: অতিরিক্ত ওজন ইউরিক অ্যাসিড বাড়ানোর ঝুঁকি বাড়ায়। ওজন নিয়ন্ত্রণ:সুস্থ ওজন বজায় রাখা ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।

নিয়মিত ব্যায়াম:শারীরিক কার্যকলাপ ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে। পানি পান করুন:পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করলে শরীর থেকে ইউরিক অ্যাসিড বের হয়ে যায়।

ইউরিক অ্যাসিড বাড়াতে পারে যেসব খাবার ১. খেজুর: খেজুরে পিউরিন কম হলেও, ফ্রুক্টোজ যথেষ্ট। মিষ্টি খেতে ভাল লাগলেও, ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের জন্য এটি হতে পারে বিপদের ঘণ্টা।

২. সোনালি কিশমিশ : ড্রাই ফ্রুটসের মধ্যে সবচেয়ে বিপজ্জনক হিসাবে চিহ্নিত হচ্ছে কিশমিশ। আঙুর থেকে তৈরি এই শুকনো ফলের মধ্যে থাকে উচ্চমাত্রার ফ্রুক্টোজ এবং কিছু পিউরিনও। গেঁটে বাতের রোগীদের এটি একেবারেই এড়িয়ে চলা উচিত ।

৩. আপেল:‘দিনে একটা আপেল চিকিৎসককে দূরে রাখে’-এই প্রবাদ সত্য হলেও, ইউরিক অ্যাসিডের রোগীদের ক্ষেত্রে এ কথা মানানসই নয়। নিয়মিত আপেল খেলে ফ্রুক্টোজের মাত্রা অতিরিক্ত হয়ে যেতে পারে।

৪ তেঁতুলের রস: তেঁতুল শরীর ঠান্ডা রাখলেও, তেঁতুলের রসে থাকা অতিরিক্ত প্রাকৃতিক চিনি ফ্রুক্টোজের আধিক্য রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা হঠাৎ বাড়িয়ে দিতে পারে। ৫. সবেদা:এই ফলটিও ফ্রুক্টোজ সমৃদ্ধ। তাই ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবেদা থেকে দূরে থাকাই বুদ্ধিমানের কাজ।

যদি আপনার ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা থাকে, তবে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। তারা পরীক্ষার মাধ্যমে এর মাত্রা নির্ধারণ এবং চিকিৎসা ব্যবস্থা দিতে পারবেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা