
		অল্প বয়সে চুল পেকে গেলে মনঃকষ্টে ভোগেন অনেকে। চুল পেকে যাওয়া মানুষের জীবনচক্রের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু অনেকের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই চুল পেকে যায়। এটি স্বাভাবিক বয়সজনিত কারণেও হতে পারে, আবার জীবনযাপন, পুষ্টি ও জিনগত কারণেও হতে পারে।
আসুন কী কী কারণে অকালে চুল পাকে জেনে নেই,
মেলানিনের ঘাটতি: চুলের রঙ নির্ভর করে মেলানিন নামক এক ধরনের রঞ্জক পদার্থের ওপর। বয়স বাড়লে বা শরীরে প্রয়োজনীয় ভিটামিন ও মিনারেলের ঘাটতি হলে মেলানিন কমে যায়। ফলে চুল সাদা বা ধূসর হতে শুরু করে।
জেনেটিক কারণ: পরিবারে যদি কারও অল্প বয়সে চুল পাকার প্রবণতা থাকে, তাহলে সেটি বংশগতভাবে হতে পারে।
পুষ্টিহীনতা: ভিটামিন বি১২, ডি, ই, কপার, আয়রন ও জিঙ্ক ঘাটতি থাকলে চুলের রঙ ধরে রাখতে সমস্যা হয়।
অতিরিক্ত মানসিক চাপ: স্ট্রেসের কারণে শরীরে হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট হয় এবং মেলানিন কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ধূমপান ও দূষণ: নিকোটিন ও বাতাসের দূষণ চুলের রঞ্জক কোষে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস তৈরি করে, যা চুল দ্রুত পেকে যায়।
রাসায়নিক ব্যবহার: চুলে অতিরিক্ত ডাই, ব্লিচ, স্প্রে বা হেয়ার জেল ব্যবহারে কোষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
অকাল চুল পাকা রোধে করণীয়
চুল একবার পেকে গেলে তা স্বাভাবিকভাবে আগের রঙে ফিরিয়ে আনা কঠিন। তবে সঠিক ডায়েট ও যত্নে নতুন চুল পাকা অনেকটা রোধ করা সম্ভব। ডায়েটে রাখুন এমন সব খাবার যা চুল পাকা রোধে সহায়ক।
ভিটামিন বি১২ সমৃদ্ধ খাবার: ডিম, মাছ, লাল মাংস, দুধ, দই এসব খাবার স্নায়ু ও রক্তে অক্সিজেন সরবরাহ বাড়ায়, যা চুলের রঙ বজায় রাখে।
আয়রনযুক্ত খাবার: আয়রনযুক্ত খাবার যেমন পালং শাক, কলিজা, মসুর ডাল, বিট, খেজুর চুলের ফলিকল শক্তিশালী করে।
কপারযুক্ত খাবার: বাদাম, বীজ, মাশরুম, ডার্ক চকোলেট মেলানিন উৎপাদনে সহায়তা করে।
জিঙ্ক ও সেলেনিয়াম: ডিম, বাদাম, সী-ফুড চুল পড়া কমায় ও কালো রঙ ধরে রাখে।
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ফল: আঙুর, বেরি, আপেল, কমলা জাতীয় ফল শরীরে ফ্রি র্যাডিক্যাল কমায়, যা মেলানিন কোষকে রক্ষা করে।
ভিটামিন ডি ও ই: এগুলো চুলের জন্য দরকারী। রোদে কিছু সময় থাকা, মাছের তেল, কাজুবাদাম, সূর্যমুখীর বীজ চুলের কোষ পুনর্জীবিত করতে সহায়তা করে।
এছাড়াও পর্যাপ্ত ঘুম নিন, ধূমপান ও অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন, অতিরিক্ত স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণে রাখুন, যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন করুন, চুলে প্রাকৃতিক তেল (আমলকি, নারকেল, কালোজিরা) ব্যবহার করুন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধু খাবার নয়, জীবনযাপনও চুলের স্বাস্থ্যে প্রভাব ফেলে। পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক প্রশান্তি ও নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্যাভ্যাস এই তিনের সমন্বয়ই পারে চুলে প্রাকৃতিক দীপ্তি ফিরিয়ে আনতে। নিজের যত্ন নিন, সুন্দর ও সুস্থ থাকুন।
মন্তব্য করুন