
		প্রতিটি বাড়ির হৃদয় হলো রান্নাঘর, যেখানে সুস্বাদু খাবার এবং অনেক অনেক স্মৃতি তৈরি হয়। তবে আমাদেরই ভুল কিছু অভ্যাস আপনার রান্নাঘর সব সময় অগোছালো ও অপরিষ্কার রাখে। এর প্রভাব পরতে পারে আপনার রান্নাবান্নায়ও। আপনার শখের রান্নাঘর পরিষ্কার ও গোছানো রাখার জন্য আপনাকে এড়িয়ে চলতে হবে কিছু কাজ। চলুন জেনে নেওয়া যাক-
নিয়মিত ক্যাবিনেট গোছানো রান্নাঘর খুব সহজেই বিশৃঙ্ক্ষল হয়ে যায়। নানা ধরনের বাসন-কোসন ও সরঞ্জামে গাদাগাদি করে রাখবেন না। এজন্য আপনাকে নিয়মিত ক্যাবিনেট গোছাতে হবে। ক্যাবিনেটের নির্দিষ্ট তাকের নির্দিষ্ট স্থানে প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো রাখবেন।
রান্নার পর পরিষ্কার করা রান্না করার সময় যত সাবধানতা অবলম্বন করুন না কেন, খাবারের অংশ ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়বেই। এরপর রান্নার হাঁড়ি এবং খাবারের বিভিন্ন পাত্রও অপরিষ্কার হবেই। তাই রান্না শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবহৃত বাসন-কোসন ধুয়ে পরিষ্কার করে রাখুন।
অপ্রয়োজনীয় রান্নার যন্ত্রপাতি সরিয়ে রাখা
এমন যন্ত্র হয়ত কেনা হয়েছে, যেগুলোর ব্যবহার খুবই কম। যেমন- স্যাণ্ডউইচ মেকার, বড় বেইকিং মোল্ড, রুটি মেইকার, কফি মেশিন, চকলেট ফাউন্টেন জুসার/ ব্লেন্ডার (বড়), এয়ার ফ্রায়ার। এগুলো প্রতিদিনের রান্নায় দরকার হয় না। তাই শেলফের ওপর নয়, বরং ওপরের আলমারি বা স্টোর রুমে রাখা উচিত।
বেইকিং সরঞ্জামগুলোও মৌসুম অনুযায়ী রাখা
যারা বেইকিং ভালোবাসেন, তাদের রান্নাঘরের আলমারিতে নানান আকৃতির কেক মোল্ড, কুকি কাটার, বেইকিং প্যান বা টিন জমে থাকে। গরম বা শীতের সময় যদি বেইকিং কম করেন, তাহলে ওই সময়ের জন্য এসব সরঞ্জাম তুলে রাখা ভালো।
ময়লা-আবর্জনা ব্যবস্থাপনা
রান্নাঘরে ময়লা-আবর্জনা জমলে দ্রুত দুর্গন্ধ ছড়ায়। তাই সবসময় ঢাকনাযুক্ত ডাস্টবিন ব্যবহার করুন এবং প্রতিদিন ময়লা বাইরে ফেলে দিন। ডাস্টবিন সপ্তাহে অন্তত দুইবার ব্লিচ বা জীবাণুনাশক দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে পোকামাকড় বা মাছির উপদ্রবও কমে যাবে।
বারবিকিউ জিনিস গুছিয়ে রাখা
শীতের সময়ে বাইরে রান্নার ধারা এখন জনপ্রিয়। বারবিকিউ পার্টি, হাঁস পার্টি, গ্রিল পার্টি, শীতের পিঠা পার্টি অনেকেই বাড়ির ছাদে করে থাকেন। এছাড়াও শীতের দিনে বাইরে পিকনিক করতেও পছন্দ করেন অনেকে। তখন বারবিকিউ টুলস, পিকনিক প্লেট, প্লাস্টিক গ্লাসের প্রয়োজন হয়, যা বছরের অন্য সময়ে তেমন দরকার হয় না। এগুলো গুছিয়ে রাখতে হবে। এতে রান্নাঘরের তাক ও ড্রয়ারে যথেষ্ট জায়গা খালি হবে।
কম ব্যবহৃত জিনিস রাখুন ‘দ্বিতীয় সারির’ জায়গায়
যেসব জিনিস মাঝে মাঝে ব্যবহার করা হয় সেগুলো রান্নাঘরের পাশে থাকা আলমারি বা ডাইনিংয়ের স্টোরেজে রাখুন। যেমন- উৎসবের সার্ভিং পাত্র সেগুলো আরও দূরের জায়গায় যেমন স্টোররুমে রাখা যায়।
লেবেল লাগানো, যাতে খুঁজে পাওয়া সহজ হয়
সব জিনিস প্যাকেট করার সময় বাক্সের বাইরে স্পষ্টভাবে লেবেল লাগানো উচিত। যেমন- বেইকিং সরঞ্জাম, উৎসবের পাত্র, আউটডোর ডিনার সেট ইত্যাদি। এতে পরের মৌসুমে খুঁজে বের করতে সময় নষ্ট হবে না।
বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা
রান্নাঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা না থাকলে সেখানে গরম, ধোঁয়া ও দুর্গন্ধ তৈরি হয়। তাই রান্নাঘরে জানালা বা এক্সহস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন। এতে রান্নার সময় তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকবে এবং জায়গাটি সতেজ থাকবে।
রান্নাঘর পরিষ্কার রাখা মানে শুধু সৌন্দর্য নয়, এটি পরিবারের স্বাস্থ্য রক্ষারও অংশ। একটু সচেতনতা ও নিয়মিত যত্ন নিলেই আপনার রান্নাঘর হবে সবার প্রিয় জায়গা। পরিষ্কার ও সাজানো রান্নাঘর যেমন মন ভালো রাখে, তেমনি এটি পুরো বাড়িতে এনে দেয় প্রশান্তির অনুভূতি।
মন্তব্য করুন