
		ইসলামে দোয়া বা প্রার্থনার গুরুত্ব অপরিসীম। দোয়া মানুষের সঙ্গে স্রষ্টার প্রত্যক্ষ যোগাযোগের এক মাধ্যম। আল্লাহ তায়ালা নিজেই কুরআনে ঘোষণা করেছেন— “তোমাদের প্রভু বলেন, আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের সাড়া দেব।” (সূরা গাফির, আয়াত ৬০)। তবে কিছু বিশেষ সময় আছে, যখন বান্দার দোয়া আল্লাহ কখনোই ফিরিয়ে দেন না। সেই সময়গুলোতে দোয়া করলে তা কবুল হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে হাদিসে উল্লেখ পাওয়া যায়।
১. তাহাজ্জুদের শেষ তৃতীয়াংশে রাতের শেষ প্রহরে, অর্থাৎ ফজরের আগে যখন মানুষ গভীর নিদ্রায় থাকে, তখন আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীর নিকটতম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলেন— “কে আছো আমার কাছে প্রার্থনাকারী, আমি তার দোয়া কবুল করব?” (সহিহ বুখারি)। তাই এই সময় দোয়া আল্লাহ কখনোই ফিরিয়ে দেন না।
২. আজান ও একামতের মধ্যবর্তী সময় নবী করিম (সা.) বলেছেন, “আজান ও একামতের মধ্যবর্তী সময়ের দোয়া কখনো প্রত্যাখ্যান হয় না।” (আবু দাউদ)। এ সময়ে দোয়া করলে তা বিশেষভাবে কবুল হওয়ার আশা রাখা যায়।
৩. জুমার দিনের বিশেষ মুহূর্তে জুমার দিনে এমন একটি সময় আছে, যখন দোয়া নিশ্চয়ই কবুল হয়। অধিকাংশ আলেমের মতে, এ সময়টি আসরের পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত। এ সময়ে আন্তরিকভাবে দোয়া করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ।
৪. রোজাদারের ইফতারের সময় রোজা রেখে ইফতারের ঠিক আগে বান্দার দোয়া কখনোই বিফল হয় না। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, “রোজাদারের দোয়া ইফতারের সময় প্রত্যাখ্যাত হয় না।” (তিরমিজি)।
৫. বিপদে-আপদে ও কষ্টের সময় যখন মানুষ দুঃখ-কষ্টে, বিপদে পড়ে কান্নার সঙ্গে দোয়া করে, তখন আল্লাহ সেই দোয়া বিশেষভাবে গ্রহণ করেন। কারণ, সে মুহূর্তে দোয়া আসে হৃদয়ের গভীর থেকে।
৬. সিজদার মধ্যে রাসুল (সা.) বলেছেন, “বান্দা যখন সিজদায় থাকে, তখন সে তার প্রভুর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থায় থাকে। তাই সিজদায় বেশি দোয়া করো।” (মুসলিম)।
দোয়া আল্লাহর দরবারে আমাদের অস্তিত্ব প্রকাশের শ্রেষ্ঠ উপায়। তাই শুধু বিশেষ সময়েই নয়, প্রতিটি মুহূর্তেই বান্দার উচিত আন্তরিকভাবে দোয়া করা। কারণ, আল্লাহ সর্বদা শুনছেন, আর তাঁর দরজা কখনোই বন্ধ হয় না।
মন্তব্য করুন