মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

চাঁদাবাজি-দুর্নীতিতে অপ্রতিরোধ্য ছিলেন শাজাহান খান

নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ০৩:০৬ এএম

মাদারীপুর সংবাদদাতা: এক সময়ে ছিল টিনের ঘর। কিন্তু গেল ১৬ বছরে টিনের ঘর থেকে গড়েছেন ১০ তলা বাসভবনসহ নামে বেনামে অঢেল সম্পত্তি। এমনকি সারাদেশের পরিবহন নিয়ন্ত্রণ করে চাদাঁবাজি করতে তৈরি করেছেন নিজস্ব সিন্ডিকেট। বলছি মাদারীপুর ০২ আসনের সাবেক এমপি শাজাহান খানের কথা। সরকারি জমি দখল করে ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

শাজাহান খান একসময় ছাত্রলীগের নেতা থাকলেও পরে জাসদের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে যোগ দেন আওয়ামী লীগে। এরপর আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি। দ্রুতগতিতে ঘুরতে থাকে ভাগ্যের চাকা। তৈরি হয় ক্ষমতার বলয়। একে একে নিয়ন্ত্রণ নিতে থাকেন মাদারীপুর জেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের। প্রভাব বাড়তে থাকে তার পরিবার ও স্বজনদের। ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর তিনি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী শাজাহান খান ছিলেন দেনাদার। বর্তমানে তিনি বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক। ওই নির্বাচনের হলফনামা অনুযায়ী শাজাহান খানের মাসিক আয় ছিল ৫৭ হাজার ৮৬ টাকা। তার স্ত্রীর শিক্ষকতা পেশা থেকে মাসে আয় হতো ৫ হাজার ২০০ টাকা। তখন তাদের স্বামী-স্ত্রীর হাতে নগদ কোনো টাকা ছিল না। বরং ঋণ ছিল ৪২ লাখ টাকার বেশি।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য শাজাহান খান ও তার স্ত্রীর সম্পদ গত ১৬ বছরে বেড়েছে অস্বাভাবিক হারে। মাদারীপুর শহরে তার দৃশ্যমান সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে ১০ তলা একটি বাসভবন, ছয়তলা একটি হোটেল, আছে একটি ফুড ভিলেজ, মার্কেট। মাদারীপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজের জমি দখল করে সেখানে গড়ে তুলেছেন চারতলা ভবন। একই শহরে তার ২টি পেট্রল পাম্প রয়েছে। চারতলা ভবনে নিজের বাবার নামে গড়েছেন আসমত আলী খান হাসপাতাল।

ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের কালকিনি এলাকায় সরকারি জমি দখল করে নির্মাণাধীন রয়েছে একটি তেলের পাম্প। সার্বিক পরিবহন, সার্বিক ফিলিং স্টেশন, সার্বিক কনস্ট্রাকশন ফার্ম, সার্বিক রিয়েল এস্টেট, সার্বিক ইটভাটা, সার্বিক প্রেসসহ নানাবিধ ব্যবসা-বাণিজ্য। সব কিছুই করেছেন দলীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে।

মাদারীপুর শহরের একাধিক ব্যক্তির জমি দখলের অভিযোগ রয়েছে তার পরিবারের বিরুদ্ধে। শুধু জমি দখল নয় এলজিইডি, সড়ক বিভাগ, গণপূর্ত বিভাগ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সব সরকারি দপ্তরের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি।

চাঁদাবাজি ও দুর্নীতির মাধ্যমে গড়ে তোলা বিপুল সম্পদের মালিক শাজাহান খানের বিচার দাবি করেন সচেতন মহল।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘অধিকৃত অঞ্চল’ হিসেবে উপস্থাপন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন
সরকারের বিবৃতি / পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘অধিকৃত অঞ্চল’ হিসেবে উপস্থাপন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন
জলবায়ু তহবিলের ৮৯১ প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি
জলবায়ু তহবিলের ৮৯১ প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি
ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ তিন দল: ইসি সচিব
ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ তিন দল: ইসি সচিব
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে