
		রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ির মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণ। সোমবার বেলা সোয়া ১টা, ক্লাস ছুটির পর বাড়ি ফেরার অপেক্ষা কোমলমতি খুদে শিক্ষার্থীদের। বাইরে ছিলেন অভিভাবকরা। আবার কোনো কোনো শিক্ষার্থী প্রস্তুতি নিচ্ছিল কোচিংয়ে বসার।
অন্যান্য দিনের মতোই কোলাহলপূর্ণ ছিল হঠাৎ প্রতিষ্ঠানটির একাডেমিক ভবনে আকাশ থেকে আছড়ে পড়ল বিমানবাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান। বিদ্যুৎগতিতে ঢুকে পড়ল জুনিয়র শিক্ষার্থীদের ক্লাসভবনে। বিস্ফোরিত হলো বিমানটি। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে উঠল পুরো এলাকা। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগে মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ল আগুনের লেলিহান শিখা। ওই আগুনে জলসে গেছে বিপুলসংখ্যক কোমলমতি শিক্ষার্থীর দেহ। পুড়ে অঙ্গার হয়েছে কেউ কেউ।
ভবনের ভেতরে পড়েছিল অনেকের ছিন্নবিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। এরপর হতাহতদের নিয়ে ছুটেছে সবাই রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে। এ খবর নিমেষেই ছড়িয়ে পড়ল সারা দেশে। চোখের পানি ধরে রাখতে পারেননি কেউ। শুধু অভিভাবক ও শিশুদের স্বজন নয়, কান্নার রোল পড়ে ঘরে ঘরে। স্কুল প্রাঙ্গণ ও হাসপাতালগুলোতে হতাহতের স্বজনের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে আকাশবাতাস। শোকে স্তব্ধ হয়ে পড়ে গোটা দেশ।
এ ঘটনায় এ পর্যন্ত বিমানটির পাইলটসহ ২২ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১৬৯ জন। এদের মধ্যে অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। হতাহতদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। হঠাৎ এত সংখ্যক মানুষের সেবা দিতে হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসকরা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছিল। পাশাপাশি ঘাটতি দেখা গেছে রক্ত ও চিকিৎসাসামগ্রীর।
তবে স্বেচ্ছায় রক্ত দিতে হাসপাতালগুলোতে ছুটে গেছেন বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। এদিকে যেসব পোড়া লাশ শনাক্ত করা যাচ্ছে না, সেগুলো ডিএনএ পরীক্ষার পর স্বজনের কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনায় রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা, উপদেষ্টাগণ, প্রধান বিচারপতি শোক জানিয়েছেন। পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতারা শোক জানিয়েছেন। এছাড়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানসহ জাতিসংঘ গভীর শোক প্রকাশ করেছে। আর রাষ্ট্রীয়ভাবে আজ শোক পালনের কথা জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। আগামী তিন দিনের জন্য জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়েছে।
এদিকে আইএসপিআর জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে ঢাকা সিএমএইচে ১২ জন, বার্ন ইনস্টিটিউটে দুজন, কুর্মিটোলা জেনারেল হসপিটালে দুজন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড কার্ডিয়াক সেন্টারে দুজন, ঢাকা মেডিকেলে এক, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে একজনের লাশ আছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের সবার পরিচয় জানা যায়নি।
তবে শনাক্ত হওয়ায় গতকাল রাতেই আটটি লাশ অভিভাবকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তারা হলো-ফাতেমা আক্তার (৯), সামিউল করিম (৯), রজনী ইসলাম (৩৭), মেহনাজ আফরিন হুরাইরা (৯), শারিয়া আক্তার (১৩), নুসরাত জাহান আনিকা (১০), সাদ সালাউদ্দিন (৯) এবং সায়মা আক্তার (৯)।
এদিকে রাত ১০টা ১০ মিনিটে বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে মৃত্যুবরণ করেন মাইলস্টোন স্কুলের কো-অডিনেটর মেহেরীন চৌধুরী। স্কুলটির একাধিক শিক্ষক জানান, দুর্ঘটনার পর মেহেরীন চৌধুরীর শরীরে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় নিজের জীবন বাজি রেখে তার আদরের শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে মরিয়া হয়ে উঠেছিলেন। শরীরের দগ্ধ আগুন নিয়েই তিনি শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে লাগলেন। এক এক করে অনেক শিশুকে রুম থেকে বেরও করেন। এক পর্যায়ে তিনি লুটিয়ে পড়েন। তাকে যখন বার্ন ইউনিটে আনা হয় তখন তার শরীর শতভাগ পোড়া ছিল। জরুরি বিভাগ থেকে দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করা হয় তাকে। ওখানে তাকে লাইফ সার্পোর্টে রাখা হয়।
এছাড়া সোমবার রাত ১০টা ১৭ মিনিটের দিকে শামীম আব্দুল্লাহ নামে ১৪ বছরের আরেক শিক্ষার্থীর মৃতু হয় আইসিইউতে। তাকেও লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। তার শরীর ৯০ শতাংশ পোড়া ছিল। তার বড় ভাই জাহিদ আইসিইউর সামনে বিলাপ করছিল। পাশেই মা, আর বোন আর্তনাদ করতে করতে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছিল। বুক থাপড়িয়ে মা জুলেখা বেগম বলছিলেন, তার ছেলে রোববার রাতেও তার শরীর টিপে দিয়েছিল। মাকে বলছিল, মায়ের সেবা করে জান্নাতে যেতে চায়। মায়ের সঙ্গে সবসময় থাকতে চায়। মাকে কখনো হারাতে চায় না। এমনটা বলতে বলতে মা মাটিতে লুটিতে পড়ছিলেন। বলছিলেন, ছেলেকে কবর দেবেন না, বুকে জড়িয়ে ধরে শুইয়ে থাকবেন।
আইএসপিআর আরও জানায়, এফটি-সেভেন বিজিআই যুদ্ধবিমানটি নিয়মিত প্রশিক্ষণের অংশ হিসাবে সোমবার বেলা ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলাস্থ বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর ঘাঁটি থেকে উড্ডয়নের কিছু সময় পর বিধ্বস্ত হয়। দুর্ঘটনা মোকাবেলা এবং বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে ওই বিমানের বৈমানিক ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মো. তৌকির ইসলাম বিমানটিকে ঘনবসতি এলাকা থেকে জনবিরল এলাকায় নিয়ে যাওয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বিমানটি ঢাকার দিয়াবাড়িতে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের দোতলা একটি ভবনে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় বিধ্বস্ত হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিমান বিধ্বস্তের খবর ছড়িয়ে পড়ার মুহূর্তেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটে আসেন শত শত অভিভাবক, আশপাশের মানুষ ও উদ্ধারকর্মীরা। যে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার্থীদের কোলাহলে কিছুটা সময় আগেও মুখরিত ছিল, মুহূর্তেই সেখানে নেমে আসে ভয়, আতঙ্ক ও শোকময় পরিবেশ। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের গগনবিদারী চিৎকারে পুরো পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে। সন্তানের খোঁজে পাগলের মতো এদিক-ওদিক ছুটতে থাকেন অভিভাবকরা। আকস্মিক এমন ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েন শিক্ষক ও কলেজ কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও। ঘটনার পরপরই উদ্ধার অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী, বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস, র্যাবসহ বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা।
মাইলস্টোন কলেজ থেকে বের হয়ে আসতে থাকে আহতদের মিছিল। তাদের নিয়ে একের পর এক অ্যাম্বুলেন্স ছুটে চলে সাইরেন বাজিয়ে, সেগুলোকে পাহারা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যায় সামরিক যান। বাঁশি বাজিয়ে ভিড় সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন সেনাবাহিনীর সদস্য ও শিক্ষার্থীরাও। সামরিক হেলিকপ্টার দিয়েও আহতদের উদ্ধার করতে দেখা গেছে।
শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, ভবনে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ায় সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই আগুনে অনেকেই ভস্মীভূত হয়ে গেছেন। এমনকি অনেকের চেহারাও চেনা যায়নি। কুর্মিটোলা হাসপাতালের একজন চিকিৎসক জানান, গতকাল বিকাল ৫টা পর্যন্ত ওই হাসপাতালে তিনজনকে আনা হয়। তাদের মধ্যে দুজনের শরীর এতটাই পুড়ে গেছে যে, তাদের লাশ শনাক্ত করার কোনো উপায় নেই। আরেকজন মুসতাইন মুনামকে (১৩) আহত অবস্থায় এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাকে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে। ওই চিকিৎসক আরও জানান, বিভিন্ন হাসপাতালে রক্তের সংকট শুনে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনেক শিক্ষার্থী এ হাসপাতালে আহতদের স্বেচ্ছায় রক্ত দেওয়ার জন্য এসেছেন। কিন্তু রোগীর চাপ না থাকায় তাদের থেকে রক্ত নেওয়া হয়নি।
আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, আহত সবাইকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারসহ অ্যাম্বুলেন্সের সহায়তায় সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) এবং নিকটস্থ হাসপাতালে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্থানান্তর করা হয়। আহতদের মধ্যে কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে ৮ জন, বার্ন ইনস্টিটিউটের ৭০ জন, ঢাকা সিএমএইচে ১৪ জন, উত্তরার লুবনা জেনারেল হাসপাতাল ও কার্ডিয়াক সেন্টারে ১১ জন, উত্তরা আধুনিক হসপিটালে ৬০ জন এবং উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে একজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানানো হয়। ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মাইলস্টোন স্কুলের যে ভবনের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়, সেটি দোতলা। ওই ভবনে দুটি তলা মিলিয়ে ১৬টি ক্লাসরুম আছে। আর ৪টি শিক্ষকদের রুম। প্রাথমিকের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হতো এই ভবনে। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির শ্রেণিকক্ষের সামনে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। শিক্ষার্থীরা আরও জানিয়েছে, ছুটির পর ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীরাও ছিল ওই ভবনে।
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সায়েম জানান, ১টার কিছু পর ক্লাসে থাকাবস্থায় বিকট শব্দ পান। তখন তিনি পাশের চার নম্বর ভবনের শ্রেণিকক্ষে ছিলেন। দৌড়ে এসে দেখেন আগুন জ্বলছে হায়দার আলী ভবনে। তারা (শিক্ষার্থী) ফায়ার এক্সটিংগুইশার নিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুনের এত তীব্রতা ছিল যে তারা কাছে যেতে পারেননি।
কিছু শিক্ষার্থী আগুন গায়ে নিয়ে বের হয়ে আসে। কিছু শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে আটকা পড়ে। এই শিক্ষার্থী বলেন, প্রধান ফটকের ভেতর বিমানটি ঢুকে যাওয়ায় সেখান দিয়ে শিক্ষার্থীরা বের হতে পারেনি। কারণ, চারপাশ লোহার গ্রিল দিয়ে আটকানো ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ভবনটিতে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয়। স্কুল ১টার মধ্যে ছুটি হয়ে যায়। ছুটি হয়েও ছিল, কিছু শিক্ষার্থী বের হয়েছিল, কিছু বের হওয়ার অপেক্ষায় ছিল। অনেকে আবার স্যারদের কাছে কোচিংয়ের জন্য অপেক্ষা করছিল। তখনই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি প্রধান ফটকের গেট ভেঙে এসে কক্ষের ভেতরে ঢুকে যায়। সেখানে আগুন ছড়িয়ে পড়লে তাতে আক্রান্ত হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তারা আরও জানান, আগুনের তীব্রতা পুরো ভবনটি কালচে হয়ে গেছে। ভবনের সামনে গাছ পুড়েছে। উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া কয়েকজন সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।
দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী সাদমান তানভীর বলেন, আমরা যখন ক্লাসে ছিলাম, তখন বিস্ফোরণের মতো একটা শব্দ হয়েছে। আমরা কেউ বুঝতে পারিনি প্রথমে। তারপর হঠাৎ যখন সবাই দৌড়াদৌড়ি, ছোটাছুটি করল, তারপর স্যার এলেন। দেখি ১ নম্বর বিল্ডিংয়ে বিমানের কিছু অংশ ব্লাস্ট হইছে। যে কারণে পুরো বিল্ডিংয়ে আগুন ধরে গেছে। তারপর আমরা বের হয়েছি। তারপর দেখি ফায়ার সার্ভিস।
তিনি বলেন, পাশেই ফায়ার সার্ভিস আর পাশেই আর্মি ক্যাম্পও ছিল। যে কারণে সবাই দ্রুত চলে আসছে। আগুন নেভাতে বেশি সময় লাগেনি; কিন্তু ভেতরে অনেক মানুষ ছিল। ছোট বাচ্চারা ছিল। ওদের বের করতে অনেক সময় লাগে। মাইলস্টোনের দুর্ঘটনাকবলিত এলাকা পরিদর্শনের সময় বিকাল পৌনে ৫টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ জাহেদ কামাল বলেন, বিমানবাহিনীর একটি ফাইটার এয়ারক্র্যাফট বেলা ১টার দিকে মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উত্তরা শাখার দোতলা স্কুল ভবনে ক্র্যাশ ল্যান্ডিং করেছে। এই দোতলা ভবনের প্রথম তলায় ছিল তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির বাচ্চাদের ক্লাস। দ্বিতীয় তলায় ছিল দ্বিতীয় ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস। তার সঙ্গে ছিল প্রিন্সিপালের (অধ্যক্ষের) অফিস মিটিং রুম। একটা কোচিংয়ের ক্লাস চলমান ছিল। ক্র্যাশ ল্যান্ডিং যখন হয়, তখন স্কুল ছুটি হয়ে গিয়েছিল এবং ওই সময় যে জায়গায় টিচার্স রুমের সঙ্গে যে ল্যান্ডিং হয়, আঘাত করে, ওই জায়গায় বাচ্চারা জড়ো হয়েছিল এবং তাদের সঙ্গে হয়তো কিছু অভিভাবকও ছিল। তিনি জানান, ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিট উদ্ধারকাজ চালায়।
বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আহতদের দ্রুত চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় হেলিকপ্টার ও মেট্রোরেল। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পাশেই মেট্রোরেলের স্টেশন। ঘটনার পরপরই মেট্রোরেলের নারীদের কামরার পাশের কামরাটি হতাহতদের জন্য রিজার্ভ ঘোষণা করে পুলিশ।
সরেজমিন আরও দেখা যায়, বেলা ২টা ৪৮ মিনিটে বিমানবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার মাইলস্টোন মাঠের খালি জায়গায় অবতরণ করে। এ সময় স্ট্রেচারে করে একজনকে হেলিকপ্টারে উঠিয়ে দিতে দেখা গেছে। ৩টা ২০ মিনিটে অপর একটি হেলিকপ্টার দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে আরও একজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে উদ্ধারকৃতদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে বিকাল থেকে হল ছেড়েছেন মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। একাদশ শ্রেণির ছাত্র নাবিদুল ইসলাম থাকেন ৪ নম্বর ভবনের হোস্টেলের ৫০১ নম্বর রুমে। তিনি জানান, তার হোস্টেলের সবাই চলে যাচ্ছে। গ্রামের বাড়ি রাজবাড়ী হাওয়ায় উত্তরা মামার বাসায় যাচ্ছেন। এ শিক্ষার্থী বলেন, এমন পরিস্থিতিতে অন্য শিক্ষার্থীরাও হল ছেড়ে আত্মীয়দের বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
মন্তব্য করুন