
		আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিশ্ব বাঘ দিবস। ‘মানুষ-বাঘের সুরেলা সহাবস্থান’ প্রতিপাদ্য সামনে রেখে বাঘের বংশবৃদ্ধির অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে দিবসটি। বাঘের প্রাকৃতিক আবাস রক্ষা এবং বাঘ সংরক্ষণের জন্য মানুষের সচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে প্রতি বছরের এই দিনে বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হয়।
বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের প্রাণ রয়েল বেঙ্গল টাইগার। এই বাঘ শুধু বনজ ইকোসিস্টেমের ভারসাম্যই রক্ষা করে না, পর্যটকদের অন্যতম আকর্ষণও। গত দেড় বছরে সুন্দরবনের বিভিন্ন এলাকায় তিন থেকে চারবার সরাসরি বাঘের দেখা পেয়েছেন পর্যটকরা। কেউ কেউ ধরে ফেলেছেন ক্যামেরাতেও।
বন বিভাগ বলছে, গত পাঁচ বছরে করা দুটি আলাদা জরিপের মধ্যে দেখা গেছে; দেশে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, প্রকল্পভিত্তিক কার্যক্রম এবং বাঘ হত্যায় জিরো টলারেন্স নীতির কারণে এ সাফল্য এসেছে।
তবে এই অর্জনের পেছনে রয়েছে অনেক প্রতিকূলতা ও লড়াই। একসময় সুন্দরবনে বাঘ কমে গিয়েছিল গুপ্ত শিকারি, বনদস্যুদের উৎপাত, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং অভয়ারণ্যে অনিয়ন্ত্রিত চলাচলের কারণে। তবে অবস্থার পরিবর্তনে বন বিভাগ বাঘ রক্ষা প্রকল্প গ্রহণ, আইনশৃঙ্খলা জোরদার, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নেয় বিভিন্ন উদ্যোগ।
২০১৮ সালে বন বিভাগের জরিপে সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা ধরা পড়েছিল ১১৪টি। এরপর ২০২৩ সালে খুলনা, সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট রেঞ্জের ৬৩৯টি গ্রিডে বসানো হয় ক্যামেরা ট্র্যাপ। সম্প্রতি প্রকাশিত ২০২৪ সালের প্রতিবেদনে দেখা যায়, বাঘের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাঘের বাসস্থান, খাদ্যের সংস্থান ও প্রজনন সক্ষমতা নিশ্চিত করাও জরুরি। বন বিভাগের মতে, বাঘ ও মানুষের দ্বন্দ্ব কমাতে নেয়া হয়েছে নানা পদক্ষেপ।
খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব কমাতে আমরা 'ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম' গঠন করেছি। পাশাপাশি খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার ৭৪ কিলোমিটার এলাকায় ফেন্সিং স্থাপন করা হচ্ছে। অপরাধীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছি আমরা। বাঘের সুপেয় পানি ও আবাসস্থল নিশ্চিত করার চেষ্টাও চলছে।
মন্তব্য করুন