মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

চলে গেলেন ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক: প্রধান উপদেষ্টার শোক

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৭ এএম
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০২:৩২ পিএম

দেশের বিশিষ্ট ভাষাসংগ্রামী আহমদ রফিক আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ১০-১২ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। চিকিৎসকের বরাত দিয়ে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ইসমাইল সাদী বলেন বৃহস্পতিবার ‘আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন আহমদ রফিক’।

এদিকে ভাষা সৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক ও রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ আহমদ রফিকের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শোকবার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আহমদ রফিক ছিলেন আমাদের ভাষা আন্দোলনের এক অগ্রগণ্য সাক্ষী ও সংগ্রামী কণ্ঠস্বর। একই সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন অনন্যসাধারণ কবি, প্রাবন্ধিক, গবেষক ও রবীন্দ্রতত্ত্বচর্চার দিশারী। শতাধিক গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনার মাধ্যমে তিনি বাংলা সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করেছেন। রবীন্দ্রচর্চার ক্ষেত্রে তার অবদান দুই বাংলায় সমানভাবে শ্রদ্ধার আসন পেয়েছে। কলকাতার টেগর রিসার্চ ইনস্টিটিউট তাকে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি দিয়ে সম্মানিত করেছে, যা তার বিদগ্ধতার স্বীকৃতি।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, দেশের সংস্কৃতি ও মুক্তচিন্তার জগতে আহমদ রফিকের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। দৃষ্টিশক্তি ও শারীরিক অসুস্থতা সত্ত্বেও তিনি শেষ দিন পর্যন্ত জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে গেছেন। তিনি মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন এবং বলেন, আহমদ রফিকের জীবন ও কর্ম আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে তাকে স্মরণ করবে। প্রধান উপদেষ্টা শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজন, শুভানুধ্যায়ী ও সাহিত্য-সংস্কৃতিমনা জনগণের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাত ১০-১২ মিনিটে মারা যান ভাষা সৈনিক আহমদ রফিক। জানা গেছে, কিডনির সমস্যার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে একাধিকবার মাইল্ড স্ট্রোকে আক্রান্ত হোন তিনি। গত ১১ সেপ্টেম্বর সকালে ল্যাবএইড হাসপাতাল থেকে পান্থপথের হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। এরপর তাঁর শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় গত রোববার তাঁকে বারডেমে ভর্তি করা হয়। গত মঙ্গলবার রাতে আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ইসমাইল সাদী জানিয়েছিলেন, তাঁর কিডনির সমস্যা রয়েছে। এ ছাড়া কয়েকটি ‘মাইল্ড স্ট্রোক’ হয়েছে।

আহমদ রফিক ১৯২৯ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি লেখালেখি, গবেষণা ও সংস্কৃতিচর্চায় জীবনের দীর্ঘ সময় কাটিয়েছেন। পেয়েছেন একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা। ভাষা আন্দোলন ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিষয়ে গবেষণা করেছেন আহমদ রফিক। তাঁর কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস, গবেষণা মিলিয়ে লিখিত ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক।

রবীন্দ্রবিশেষজ্ঞ হিসেবে তিনি দুই বাংলায় অগ্রগণ্য। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু পুরস্কার ও পদক পেয়েছেন আহমদ রফিক। রাজধানীর নিউ ইস্কাটনে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। আহমদ রফিকের স্ত্রী মারা গেছেন ২০০৬ সালে। তিনি নিঃসন্তান ছিলেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘অধিকৃত অঞ্চল’ হিসেবে উপস্থাপন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন
সরকারের বিবৃতি / পার্বত্য চট্টগ্রামকে ‘অধিকৃত অঞ্চল’ হিসেবে উপস্থাপন সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন
জলবায়ু তহবিলের ৮৯১ প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি
জলবায়ু তহবিলের ৮৯১ প্রকল্পে ২১১০ কোটি টাকার বেশি দুর্নীতি: টিআইবি
ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ তিন দল: ইসি সচিব
ইসির নিবন্ধন পাচ্ছে এনসিপিসহ তিন দল: ইসি সচিব
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে 
‎আগামী সাপ্তাহে ফ্যাসিস্ট খুনি শেখ হাসিনার বিচার হবে