শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫

ঐতিহাসিক জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস আজ

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:৩১ এএম

বাংলাদেশের রাজনীতিতে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন আজ। আজ ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে সিপাহি-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লব ঘটেছিল, যা দেশের তৎকালীন রাজনীতির গতিধারা পালটে দিয়ে দেশ ও জাতিকে নতুন পরিচয়ে অভিষিক্ত করেছিল।

বিএনপিসহ সমমনা দলগুলো ৭ নভেম্বরকে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস হিসাবে পালন করে আসছে। এ উপলক্ষ্যে এবারও ১০ দিনের কর্মসূচি পালন করবে বিএনপি। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর পৃথক বাণী দিয়েছেন।

মহান জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির দশ দিনের কর্মসূচি পালন শুরু হয়েছে। আজ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সারা দেশে দলীয় কার্যালয়গুলোতে দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। সকাল ১০টায় দলের জাতীয় নেতাদেরসহ সব পর্যায়ের নেতাকর্মী শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুস্পস্তবক অর্পণ ও ফাতেহা পাঠ করবেন। ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির উদ্যোগে বেলা ৩টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে র‌্যালি বের হবে।

এছাড়াও সারা দেশে বিএনপির উদ্যোগে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। দিবসটি উপলক্ষ্যে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন স্ব স্ব উদ্যোগে আলোচনা সভা ও অন্যান্য কর্মসূচি পালন করবে। এরমধ্যে শ্রমিক দলের উদ্যেগে ৫ নভেম্বর আলোচনা সভা হয়। আগামীকাল ছাত্রদলের উদ্যোগে আলোচনা সভা, ওলামা দলের উদ্যোগে ৯ নভেম্বর এতিম শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করা হবে। তাঁতীদলের উদ্যোগে ১০ নভেম্বর আলোচনা, কৃষক দলের উদ্যোগে ১১ নভেম্বর আলোচনা সভা ও জাসাসের উদ্যোগে ১৩ নভেম্বর শহীদ মিনারে সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এছাড়া বিএনপির উদ্যোগে ১২ নভেম্বর চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনা সভার আয়োজন করা হবে।

এদিকে এক বিবৃতিতে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সব শাখা ও ছাত্র-জনতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান। দিবসটি উপলক্ষ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, ১২ দলীয় জোটসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোও নানা কর্মসূচি পালন করবে।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পরবর্তী সেনা অভ্যুত্থান ও পালটা অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে যখন চরম নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল, তখন সিপাহি-জনতার মিলিত ঐক্যের বিপ্লব দেশ ও জাতিকে অনাকাঙ্ক্ষিত শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিয়েছিল। এর মধ্য দিয়ে সাময়িক বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন স্বাধীনতার ঘোষক তৎকালীন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পটপরিবর্তনের পর রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রভাবমুক্ত হয়ে শক্তিশালী সত্তা লাভ করে। গণতন্ত্র অর্গলমুক্ত হয়ে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যায়। এই দিন থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্রের যাত্রা শুরু হয়। মানুষের মনে স্বস্তি ফিরে আসে।

সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান তার লেখা ‘কিছু স্মৃতি কিছু কথা’ বইয়ে উল্লেখ করেন, ‘৭ নভেম্বর গোটা দেশজুড়ে সৈনিক-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত এক অভূতপূর্ব উত্থান ঘটে। আর জেনারেল জিয়া সে অভ্যুত্থানের উত্তাল তরঙ্গমালার শৃঙ্গে আরোহণ করে উঠে আসেন জাতীয় নেতৃত্বের পাদপ্রদীপে।’ ৭ নভেম্বরের বিপ্লব সম্পর্কে তদানীন্তন দৈনিক বাংলার রিপোর্টে বলা হয়, ‘সিপাহি ও জনতার মিলিত বিপ্লবে ৪ দিনের দুঃস্বপ্ন শেষ হয়েছে। মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন। ৭ নভেম্বর ভোরে রেডিওতে ভেসে আসে, ‘আমি মেজর জেনারেল জিয়া বলছি।’

জেনারেল জিয়া জাতির উদ্দেশে ঐতিহাসিক ভাষণ দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে যথাস্থানে নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান। ওইদিন রাজধানী ঢাকা ছিল মিছিলের নগরী। পথে পথে সিপাহি-জনতা আলিঙ্গন করে একে অপরকে। সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর ট্যাংকের নলে পরিয়ে দেন ফুলের মালা। এই আনন্দের ঢেউ রাজধানী ছাড়িয়ে দেশের সব শহর-নগর-গ্রামেও পৌঁছে যায়।’

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নেত্রকোনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন পেলেন ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী
নেত্রকোনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের সমর্থন পেলেন ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী
১০ বছরের মধ্যে ক্ষমতায় না গেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব: নাহিদ
১০ বছরের মধ্যে ক্ষমতায় না গেলে রাজনীতি ছেড়ে দেব: নাহিদ
অস্ত্রসহ আটক স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়া এনামুল মোল্লাহ
অস্ত্রসহ আটক স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়া এনামুল মোল্লাহ
জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন তাই রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছি : স্নিগ্ধ
জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন তাই রাজনীতিতে যুক্ত হচ্ছি : স্নিগ্ধ