মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপে চ‍্যাম্পিয়ন ভারত

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৭:৩১ এএম

একদম ফাইনালের মতোই উত্তেজনাকর এক ম্যাচ। শেষ ওভারে দরকার ১০ রান, বোলিংয়ে হারিস রউফ—চাপ ছিল ভারতের ওপর। কিন্তু সেই চাপকে তোয়াক্কা না করেই ম্যাচ নিজেদের করে নিলেন তিলক বর্মা ও রিংকু সিং।

প্রথম বলে ২ রান নেওয়ার পর দ্বিতীয় বলেই হারিসকে ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় ভারত। এরপর তিলকের এক রান ও রিংকুর চতুর্থ বলে মিড-অন পার করে মারা দারুণ চারে জয় নিশ্চিত হয় ভারতের। ৫ উইকেটে ফাইনাল জিতল ভারত।

এর মধ্য দিয়েই আবারও এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট উঠল ভারতের মাথায়। এটি তাদের নবম এশিয়া কাপ শিরোপা-যার মধ্যে সাতটি এসেছে ওয়ানডে সংস্করণে এবং দুটি টি–টোয়েন্টিতে।

ম্যাচের মোড় ঘুরেছে একাধিকবার, কিন্তু শেষ হাসি হেসেছে ভারত। খাদের কিনারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে, রীতিমতো পাকিস্তানকে চমকে দিয়ে শিরোপা ঘরে তুলেছে তারা। আর এই জয়ের নায়ক তিলক বর্মা—প্রমাণ করলেন, চাপের মুখে তিনিই ভারতের ভরসা।

দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ এশিয়া কাপ ফাইনালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে নবমবারের মতো এশিয়া কাপের শিরোপা জিতল ভারত। ম্যাচটি ছিল রোমাঞ্চে ভরা এবং শেষ ওভারের আগে পর্যন্ত কেউ নিশ্চিত হতে পারেনি কে হাসবে শেষ হাসি। তবে শেষ হাসিটা আবারও ভারতেরই হয়েছে, যেমনটা হয়ে আসছে গত কয়েকটি দেখায়।

২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে সর্বশেষ পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত। এরপর থেকে আজকের ম্যাচসহ দুই দলের মধ্যকার পরের আটটি ম্যাচেই জয় পেয়েছে ভারত। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রেখেই ফাইনালে প্রথমবার পাকিস্তানের মুখোমুখি হয়ে আবারও জয় তুলে নেয় টিম ইন্ডিয়া। শুরু থেকেই উত্তেজনায় ঠাসা এই ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ১১.২ ওভারেই ১০০ রান তুলে ফেলেছিল। কিন্তু এরপরই ব্যাটিং লাইনআপ ধসে পড়ে, আর ১৪৬ রানেই অলআউট হয় তারা।

জবাবে ব্যাট করতে নেমে ভারতও শুরুতে ব্যাটিং বিপর্যয়ের শিকার হয়। ফাহিম আশরাফ ও শাহিন আফ্রিদির দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ২০ রানের মধ্যেই ভারতের তিন গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার — অভিষেক শর্মা, সূর্যকুমার যাদব ও শুভমান গিল সাজঘরে ফিরে যান। সূর্যকুমার যাদব তার অফফর্ম থেকে বের হতে পারেননি এবারও। ফাইনালসহ এই বছরে তিনি ১১ ম্যাচে করেছেন মাত্র ১০০ রান, যা একজন সিনিয়র ব্যাটারের জন্য হতাশাজনক।

তবে বিপদের সময় সামনে এগিয়ে আসেন তরুণ তিলক ভার্মা। শুরুতে সঞ্জু স্যামসনের সঙ্গে গড়ে তোলেন কার্যকরী একটি জুটি। যদিও স্যামসন ২৪ রানে আউট হয়ে যান, তার আগে হুসাইন তালাতের হাত থেকে পাওয়া জীবনদান ভারতকে ম্যাচে ফেরায়। তিলক এরপর শিবম দুবের সঙ্গে গড়ে তোলেন ম্যাচজয়ী ৬০ রানের জুটি। এই জুটিই ভারতের রান তাড়ার ভিত তৈরি করে দেয়।

শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। তিলক সেই চাপ মাথায় না নিয়ে ঠান্ডা মাথায় একটি চার এবং একটি ছক্কা হাঁকিয়ে ২ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। তার ৪১ বলে ৫১ রানের ইনিংসটি ছিল শান্ত, দায়িত্বশীল এবং জয়ের জন্য যথাযথ।

পাকিস্তানের শুরুটা যতটা আশাব্যঞ্জক ছিল, পরিণতি ঠিক ততটাই হতাশাজনক। তাদের ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়ে ভারতের চাপ প্রয়োগের মুখে। সেই সঙ্গে একাধিক ভুল ফিল্ডিং ও ক্যাচ মিস করাও ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় ভারতের দিকে।

এই জয়ে ভারত শুধু একটি শিরোপাই জেতেনি, বরং আঞ্চলিক শ্রেষ্ঠত্বে নিজের আধিপত্য আরও একবার প্রমাণ করেছে। অন্যদিকে ফাইনালে এসে জিততে না পারার হতাশা এবং ভারতের বিপক্ষে টানা হারের বৃত্ত থেকে বের হতে না পারার বেদনায় ভুগতে হচ্ছে পাকিস্তানকে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিভিতে যেসব খেলা দেখবেন
মঙ্গলবার (৪ নভেম্বর) টিভিতে যেসব খেলা দেখবেন
বিসিবির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন রুবাবা
বিসিবির পরিচালক হিসেবে নিয়োগ পেলেন রুবাবা
প্রথমবার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতলো ভারত
প্রথমবার নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপ জিতলো ভারত
এবারের বিপিএলে দল পাচ্ছে না নোয়াখালী ও খুলনা
এবারের বিপিএলে দল পাচ্ছে না নোয়াখালী ও খুলনা