মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫
মা ইলিশ রক্ষায় নিষেধাজ্ঞা

বাংলাদেশী জলসীমায় ভারতীয় জেলেদের অবাধ বিচরণের দাবি

বৈশাখী প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৪:০৮ পিএম

ইলিশের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে আগামী ২৫ অক্টোবর। তবে বাংলাদেশে নিষেধাজ্ঞার এই সুযোগে থেমে নেই প্রতিবেশী দেশ ভারতের জেলেরা। তারা বাংলাদেশী জলসীমায় ঢুকে প্রতিনিয়ত মাছ ধরে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশী জেলেদের। তাই বাংলাদেশী জলসীমায় প্রশাসনিক টহল জোরদার করার দাবি জেলেদের।

তারা বলছেন, প্রতিবছর নিষেধাজ্ঞার সময় ভারতের জেলেদের বাংলাদেশের জলসীমায় অবাধ বিচরণ দেখা যায়। কিন্তু প্রশাসনের তেমন উদ্যোগ না করায় তারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে থেকে যায়।

বাংলাদেশে মা ইলিশ রক্ষায় বিজ্ঞানভিত্তিক প্রজনন সময় বিবেচনা করে প্রতিবছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমাকে ভিত্তি ধরে ২২ দিন ইলিশসহ সব ধরনের মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় হয়। কেননা এই সময় সাগরের নোনা পানি থেকে নদীর মিঠা পানিতে এসে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। কিন্তু একই সময় পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের জলসীমায় নিষেধাজ্ঞা না থাকায় ভারতের জেলেরা মাছ ধরার সুযোগ নিচ্ছে। ফলে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বাংলাদেশের মৎস্য সম্পদ।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এক সাগরে দুই নীতি বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরী। তাই ভারত ও বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা এক হওয়া দরকার।

এবিষয়ে জানতে চাইলে এক জেলে জিয়ান বলেন, মা ইলিশ রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার ২২ দিনের অবরোধ দিয়েছে।কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশ ১১ দিন অবরোধ দিয়েছে। তাদের অবরোধ শেষ হলে আমাদের দেশে এসে মাছ ধরে নিয়ে যায় প্রশাসন কিছুই বলে না,আর আমরা সাগরে যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করি তারা কোন আর্থিক সহায়তা পাইনা কারন মেম্বার চেয়ারম্যানরা তাদের দলবলকে দেয়ার পরে আর অবশিষ্ট থাকেনা, আমরা গেলে আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়, যারা প্রকৃত জেলেনা না তারা ঠিকই পায়, অবরোধের সময় সরকারের পক্ষ থেকে অনেক কিছুই দেয়া হয় কিন্তু আমরা তার সিটে ফোটাও পাইনা, সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ আমরা যেটা পাব আমাদের সেটা দিলেই হবে অন্য কিছু আর চাই না।

জেলে লালচান জানান, ১৭ বছর জেলে পেশায় কাজ করছি। সবসময় মা ইলিশ রক্ষায় সরকারের নিষেধাজ্ঞা মেনে এসেছি। গতবছর তেমন একটা মাছ পড়েনি এ বছর ভালো মাছ পেয়েছি। সরকারিভাবে এখন পর্যন্ত কোন আর্থিক সহায়তা পাইনি।

বিশেষজ্ঞ মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের দেশে মা ইলিশ রক্ষা করার জন্য ২২ দিনের অবরোধ চলমান রয়েছে ঠিক। পাশাপাশি দেশ ভারতে হচ্ছে ১১ দিন। ১২ তারিখ যদি অবরোধ শেষ হয়, তাহলে তারা ১৩ তম দিন থেকে মাছ ধরবে। ভারতের সাথে মিল রেখে অবরোধ দিলে উভয় দেশের জন্য ভাল হবে। এর আগেও দেখেছি ৬৫ দিনের অবরোধ সমন্বয় করে ৫৮ দিন করা হয়েছিল।

রাঙ্গাবালী ফিশারিজ অফিসার, শাহাদাত হোসেন বলেন, ইলিশ প্রজনন মৌসুমে মা ইলিশ সংরক্ষণ ২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে মোট ২২ দিন উপজেলা মৎস্য দপ্তর বাংলাদেশ কোস্টগার্ড, পুলিশ এবং নৌ পুলিশের সহযোগিতায় এ অভিযান চলমান থাকবে। এ সময়ে ইলিশ আহরণ পুরোপুরি নিষিদ্ধ। যারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ শিকার করবে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের জলসীমায় ৯৯ শতাংশ মা ইলিশ বিচরণ করে এবং ডিম দেয়। এ সময়টাতে মা ইলিশের বাড়তি বিচরণ থাকায় নিষেধাজ্ঞার সময়সীমাটা একটু বেশি। জেলেদের দুশ্চিন্তার কিছু নেই। রাঙ্গাবালীতে ১৬,৯০৮ জন নিবন্ধিত জেলে রয়েছে এর মধ্যে ১৩ হাজার জেলেকে ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হয়, আর আর যারা অনিবন্ধিত জেলে তাদেরকেও নিবন্ধনের ভেতরে নিয়ে আসা হবে এবং তারা সরকারী সহায়তাও পাবে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শেরপু‌রে মসজিদে ঢুকে ভাংচুর, গ্রেফতার ২
শেরপু‌রে মসজিদে ঢুকে ভাংচুর, গ্রেফতার ২
হবিগঞ্জে দুই বাসে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৩০
হবিগঞ্জে দুই বাসে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৩০
নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৬
নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৬
জামায়াত নেতাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় মামলা
জামায়াত নেতাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় মামলা