মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫

পদ্মায় দেখা মিলল বিলুপ্ত মিঠা পানির কুমিরের

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:০৬ এএম

রাজশাহীর পদ্মায় ছোট-বড় একাধিক কুমিরের দেখা মিলেছে। এর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক একটি কুমিরের ছবি তুলেছেন এক দম্পতি। আর ছোট একাধিক কুমির দেখেছেন নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেরা। তারা অবশ্য ছবি তুলতে পারেননি। এ অবস্থায় নদীতে গোসল করা থেকে বিরত থাকতে এলাকায় মাইকিংসহ নানা নির্দেশনা সম্বলিত লিফলেট বিতরণ করেছে বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ।

পদ্মার চরে ১৬ অক্টোবর বিকালে পাখির ছবি তুলতে যান এক দম্পতি। তারা পাখির বদলে কুমিরের ছবি নিয়ে বাড়ি ফেরেন। ষাটবিঘা চরের রাজু আহাম্মেদ গরু চরাতে গিয়ে প্রথম কুমিরটি দেখতে পান। ওই দম্পতি যে কুমিরের ছবি তোলেন, সেটি প্রকৃতি সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থাগুলোর জোট আইইউসিএন বাংলাদেশে বিলুপ্ত শ্রেণির হিসাবে ঘোষণা করেছে। নতুন করে এ কুমিরের দেখা পাওয়া গেছে।

ইমরুল কায়েস-উম্মে খাদিজা দুজনই পেশায় আলোকচিত্রী। তারা সেদিন পদ্মার চরে লাল মুনিয়া পাখির ছবি তুলতে যান। সেখানে যাওয়ার পর রাজশাহী বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির মোবাইল ফোনে কল করেন ইমরুল কায়েসকে। তিনি জানান, চরে গরু চরাতে গিয়ে একটি ছেলে কুমির দেখতে পেয়েছেন। তারপরই শুরু হয় নদীতে কুমির খোঁজার অভিযান। একপর্যায়ে দেখা মেলে।

আইইউসিএনের মুখ্য গবেষক এবিএম সারোয়ার আলম (সীমান্ত দীপু) জানান, ২০১৫ সালে বাংলাদেশে মিঠাপানির কুমিরকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। এরপর পাবনা জেলায় একটি কুমিরের সন্ধান মেলে, পরে দেশের আরও দুটি স্থানে দেখা যায় একই প্রজাতির কুমির। বর্তমানে এ দুটি কুমিরকে সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজননকেন্দ্রে সংরক্ষণ করা হয়েছে।

পদ্মায় প্রাপ্তবয়স্ক কুমিরটিকে বিরক্ত না করতে রাজশাহী বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পক্ষ থেকে নগরীর শ্রীরামপুরে জেলেদের মধ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

জেলেরা জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তারাও ভারতীয় সীমান্ত লাগোয়া চরমাজারদিয়াড় এলাকায় পদ্মা নদীতে কুমির দেখেছেন। তবে তাদের দেখা কুমির ছবিতে আসা কুমিরটির মতো বড় নয়, সেটি ছোট।

রাজশাহী বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক কুমিরটির সঙ্গী থাকতে পারে। আবার জেলেরা ছোট কুমির দেখার দাবি করছেন। তাহলে বোঝা যায় যে, কুমির আছে। এখন আমাদেরই সচেতন থাকতে হবে। জলজ প্রাণী জলেই থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। তাদের বিরক্ত করা যাবে না। তবে কুমিরের ছবি তোলা আলোকচিত্রী ইমরুল কায়েস আশঙ্কা করছেন, কুমিরটি খুঁজে ধরে নিয়ে যেতে পারে আইইউসিএন। কিন্তু তিনি চান, কুমিরটি উন্মুক্তভাবেই নদীতে থাকুক। তাহলে এর প্রজনন হবে।

বাংলাদেশ সরকারের বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী, কুমিরকে বিরক্ত করা, রোদ পোহানোর সময় ঢিল ছোড়া, তাড়ানোর চেষ্টা করা, ধরা, মারা, ক্রয়-বিক্রয়, পাচার করা, পরিবহণ করা, হত্যা ইত্যাদি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যার সর্বোচ্চ শাস্তি পাঁচ বছর কারাদণ্ড অথবা ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শেরপু‌রে মসজিদে ঢুকে ভাংচুর, গ্রেফতার ২
শেরপু‌রে মসজিদে ঢুকে ভাংচুর, গ্রেফতার ২
হবিগঞ্জে দুই বাসে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৩০
হবিগঞ্জে দুই বাসে মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৩, আহত ৩০
নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৬
নোয়াখালীতে ট্রাক-অটোরিকশা সংঘর্ষে নিহত ৬
জামায়াত নেতাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় মামলা
জামায়াত নেতাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ায় মামলা