
পটুয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা রাঙ্গাবালী দক্ষিণাঞ্চলের তরমুজ উৎপাদনের অন্যতম এলাকা। গুণগতমান ও স্বাদের জন্য দেশজুড়ে চাহিদা বাড়ায় নতুন কৃষকরাও যুক্ত এ ফল চাষে হচ্ছেন। একদিকে আমন ধান কাটছেন, অন্যদিকে পলিব্যাগে মাটি ভরে তরমুজের দানা বুনছেন রাঙ্গাবালীর কৃষকরা। ক্ষেতের পাশে, রাস্তার ধারে, এমনকি বাড়ির উঠোনেও চারা তৈরির ব্যস্ততা দেখা গেছে। আগে ভাগে পলিব্যাগে চারা তৈরি করায় অনেক কৃষকের চারাগাছ রোপণের জন্য প্রস্তুত।
পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে-আগাম তরমুজ রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং অধিক মুনাফার আশায় এ বছর আগাম চাষে ঝুঁকেছেন তারা।
কৃষকরা বলছেন -এ বছর হারভেস্টার মেশিনে ধান কাটায় শ্রমিক সংকট নেই। ধান কাটার সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার টিলার ও ট্রলির সাহায্যে জমি তৈরি করে ফেলছেন তরমুজের দানা রোপণের জন্য। তবে সরকারি সহায়তা না পাওয়ায় ক্ষোভও রয়েছে তাদের মাঝে। রাঙ্গাবালী কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ বছর ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষাবাদ হচ্ছে।
ছোটবাইশদিয়া ইউনিয়নের তরমুজ চাষী লিমন মুন্সির (৩৫)কাছে জানতে চাইলে তিনি বৈশাখী প্রতিবেদককে জানান -প্রথমে পলিব্যাগে জৈব সার ও মাটি মিক্স করে আটি দেয়ার ৩-৪ দিন পরে চারা গজায় পরে চারাকে বিভিন্ন রোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষার জন্য ভাল মানের কীটনাশক ব্যাবহার করা হয়,এর পরে ১২-১৪ দিন পরে মাটিতে রোপন করা হয়।মাটিতে রোপনের পরে চারাকে সুস্থ রাখার জন্য অধিক যত্ন নেয়া হয় এবং পোকার আক্রমণ থেকে চারাকে বাঁচানের জন্য কীটনাশক প্রয়োগ করা হয়। চারা রোপনের ৬০ দিন পরে ক্ষেতে ফল আসবে এবং তা ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন যায়গায় বিক্রি হবে।
আরেক চাষী নিশাত (৩৮) জানান, লবণাক্ততার কারণে আমরা পলিব্যাগ পদ্ধতি বেছে নিয়েছি। চারা বড় হলে মাটিতে দেবো। পরিবেশের কথা ভেবে সব পলিব্যাগ এক জায়গায় জমা করে পুড়িয়ে ফেলি, যেন পরিবেশের কোনো ক্ষতি না হয়।।
রাঙ্গাবালী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, রাঙ্গাবালীতে তরমুজ চাষের পরিমাণ এবার বেড়েছে। আমরা নিয়মিত মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি। আবহাওয়া ভালো থাকলে ফলন খুব ভালো হবে বলে আশা করছি। আগাম রোপণ করা অনেক কৃষক জানুয়ারির শেষের দিকেই তরমুজ বাজারজাত করতে পারবেন।
মন্তব্য করুন