
অফিসের টার্গেট, সংসারের ঝক্কি কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের হাহাকার—এইসব মিলে আমাদের জীবনে চাপের যেন শেষ নেই। অথচ এই মানসিক চাপই আমাদের হৃদ্পিণ্ডের ওপর ফেলতে পারে মারাত্মক প্রভাব। তাই সময় এসেছে চাপের সঙ্গে আপোস না করে সেটিকে জয় করার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কিছু সহজ অভ্যাস হৃদ্পিণ্ড রাখতে পারে সুস্থ।
চাপ সামলানোর প্রথম ধাপ, জীবনকে সহজভাবে নেওয়া। ছোট ছোট আনন্দের দিকে মন দিন। প্রতিদিন অন্তত একবার আকাশের দিকে তাকান, মেঘের ভেলা দেখুন, কিংবা বৃষ্টিতে একটু ভিজে নিন। অতীত কিংবা ভবিষ্যতের চিন্তা কমিয়ে দিন। বর্তমানকে উপভোগ করুন এবং নিজের ত্রুটিগুলো সহজভাবে মেনে নিন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, হাসি চাপ কমাতে দারুণ কাজ করে। হাসলে শরীরে কর্টিসলসহ চাপ-সম্পর্কিত হরমোনের মাত্রা কমে। তাই কাজের ব্যস্ততায় হাসি ভুলে গেলে চলবে না। হাসির জন্য হাস্যরসাত্মক বই পড়তে পারেন, কমেডি সিনেমা দেখতে পারেন, তবে অতিরিক্ত রিল দেখার বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ রিল অনেকসময় চাপ আরও বাড়িয়ে তোলে।
চাপ কমাতে বিরতি নেওয়াও জরুরি। প্রযুক্তির যুগে আমরা সবসময় অনলাইনে যুক্ত থাকি। তাই রোজ কিছুটা সময় ডিজিটাল স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন। অন্তত ১০–১৫ মিনিটের জন্য হলেও মুঠোফোন, টেলিভিশনের পর্দা থেকে দূরে থাকুন। ঘুমের আগে ও ঘুম থেকে উঠেই ফোন না দেখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তাদের মতে, শরীরচর্চা শুধু শরীর নয়, মনকেও ভালো রাখে। নিয়মিত ব্যায়াম হৃদ্পিণ্ড সুস্থ রাখে, কমায় মানসিক চাপ। পাশাপাশি ধ্যান বা প্রার্থনাও মানসিক শান্তি আনে। শ্বাসের ব্যায়াম করতে পারেন, এতে মন হালকা হয়।
আরও এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রশান্তির উৎস খুঁজে নেওয়া। পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানো, প্রকৃতির মধ্যে ঘুরতে যাওয়া, ভালো বই পড়া কিংবা বৃক্ষরোপণ—যা মনকে শান্তি দেয়, তাই করতে বলেন বিশেষজ্ঞরা। এমনকি সমাজসেবা, যেমন পথের প্রাণীদের খাবার দেওয়া বা বৃদ্ধাশ্রমে সময় কাটানোতেও মিলে মানসিক তৃপ্তি।
সুস্থ হৃদ্পিণ্ডের জন্য শরীরের যত্নের পাশাপাশি মনও ভালো রাখতে হবে। তাই চাপের সঙ্গে লড়াই করতে এগিয়ে আসুন নিজের জন্যই।
মন্তব্য করুন