
তীব্র চুলকানি, অসহ্য জ্বালা-যন্ত্রণা এবং ত্বকের মারাত্মক ছোঁয়াচে রোগ— যেন এক ধরনের আতঙ্কের নাম স্ক্যাবিস। একটি অতি পরিচিত, কিন্তু অবহেলিত রোগ এটি। শুধু শারীরিক নয়, মানসিক অস্থিরতা ও সামাজিক দূরত্বেরও জন্ম দেয় এ রোগ।
স্ক্যাবিস নিয়ে একটা ভুল ধারনা হলো অপরিচ্ছন্ন থাকলেই বুঝি এই রোগ হয়। আসলে পরিচ্ছন্ন মানুষরাও স্ক্যাবিসে আক্রান্ত হতে পারেন। স্ক্যাবিস কোনো ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া নয়— বরং এটি এমন একটি পরজীবী যা মানুষের ত্বকে গর্ত করে বাসা বাঁধে। ‘Sarcoptes scabiei’ নামক এক ধরনের মাইটের কারণে হয় এ রোগ। একজন আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসলেই এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে তাই পরিবারের সবাই একসাথে আক্রান্ত হতে পারে।
রোগের লক্ষণ:
১. অস্বাভাবিক চুলকানি, যা রাতে বেশি হয়।
২. হাতের আঙুলের ফাঁকে, কবজি, কোমর, স্তন, নাভি ও যৌনাঙ্গে লাল দানা বা ফুসকুড়ি।
৩. বারবার ইনফেকশন হলে ত্বকে ঘা বা পুঁজও হতে পারে।
চিকিৎসা ও প্রতিরোধ:
১. রোগ নিশ্চিত করে উপযুক্ত স্ক্যাবিস নিরোধক ওষুধ ব্যবহার করতে হবে
২. একইসাথে পরিবারের সবাইকে চিকিৎসা নিতে হবে
৩. ঘর, বিছানা, কাপড়– সব কিছু গরম পানিতে ধুয়ে রোদে শুকাতে হবে
৪. চুলকানি চলে যাওয়ার পরও কিছুদিন চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বন্ধ করা উচিৎ নয়।
সতর্কতা: নিজে নিজে বা ওষুধের দোকানদার কে বলে চুল্কানির ঔষধ ব্যবহার করবেন না। অবশ্যই একজন রেজিস্টার্ড MBBS ডাক্তারের শরনাপন্ন হতে হবে।
এটা কোনো লজ্জার রোগ নয়, বরং চিকিৎসাযোগ্য, প্রতিরোধযোগ্য একটি সাধারণ স্কিন কন্ডিশন যা যত্মের সাথে মোকাবিলা করতে হবে। স্ক্যাবিস যেমন দ্রুত ছড়ায়, তেমনি সময়মতো চিকিৎসা নিলে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা যায়। আমরা যদি সচেতন হই, লজ্জা বা দ্বিধা না করি, তাহলে এই সাধারণ রোগটিও আর কারো কষ্ট বা সামাজিক দুরত্বের কারণ হবে না।
মনে রাখবেন আপনি সচেতন হলেই, আপনার পরিবার এবং সমাজ থাকবে নিরাপদ।
মন্তব্য করুন