বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

ফ্যাটি লিভার কী ও কিভাবে রক্ষা করবেন নিজেকে?

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৪:৫৬ পিএম

লিভার বা যকৃৎ মানব শরীরের হজম, পুষ্টি সংশ্লেষণ এবং বিপাকীয় ফাংশনে প্রধান ভূমিকা পালন করে। পেটের উপরের ডান চতুর্ভুজ অংশে অবস্থিত এ অঙ্গ আপনার শরীরের বাকি অংশে পাঠানোর আগে পরিপাকতন্ত্র থেকে আসা রক্তকে ফিল্টার করে। এর আরেকটি কাজ হলো রাসায়নিক পদার্থ থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করা এবং ওষুধকে বিপাক করা।

তবে আমাদের ফ্যাট সমৃদ্ধ ডায়েট এবং অলস জীবনযাত্রার কারণেই কিন্তু এই অঙ্গের ক্ষতি হচ্ছে। এমনকি লিভারে জমছে ফ্যাট। আর এই সমস্যার নামই হলো ফ্যাটি লিভার।

পুরো বিশ্বেই ফ্যাটি লিভারে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর ফলে লিভার সিরোসিস আর ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যাও দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে এভাবে বাড়তে থাকলে ভবিষ্যতে আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার সম্ভাবনা রয়েছে। আর বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট ধরলে দেখা যাবে নন-অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজই বেশি হচ্ছে। এর প্রধান কারণ হিসেবে চিকিৎসকরা বলছেন স্থূলতা, অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন ও কায়িক পরিশ্রমের অভাব, ব্যায়াম না করা। নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ (এনএএফএলডি) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে লিভার রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে একটি। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে অতিরিক্ত চর্বি লিভারে জমা হয়।

ফ্যাটি লিভার থেকে মুক্তি পেতে স্বাস্থ্যকর খাবার খান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। প্রক্রিয়াজাত খাবার, অতিরিক্ত চিনি, ভাজা খাবার এবং অ্যালকোহল এড়িয়ে চলুন। এর পরিবর্তে ফলমূল, শাকসবজি, গোটা শস্য, স্বাস্থ্যকর চর্বি (যেমন বাদাম ও মাছ), এবং চর্বিহীন প্রোটিন (যেমন মাছ, মটরশুঁটি, এবং বাদাম) সমৃদ্ধ খাবার খান। সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিটের জন্য মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করুন, যেমন brisk walk বা সাঁতার।

কী খাবেন

ফল ও শাকসবজি: প্রচুর পরিমাণে ফল ও শাকসবজি খান, কারণ এগুলোতে ফাইবার ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা লিভারকে সুরক্ষা দেয়।

গোটা শস্য: সাদা রুটি, সাদা পাস্তা ও সাদা চালের পরিবর্তে বাদামী চাল, ওটস, এবং গোটা শস্যের পাস্তা খান।

স্বাস্থ্যকর চর্বি: মাছ, বাদাম, এবং অলিভ অয়েলের মতো স্বাস্থ্যকর চর্বি গ্রহণ করুন।

চর্বিহীন প্রোটিন: মাছ, চিকেন, মটরশুঁটি ও বাদাম থেকে প্রোটিন গ্রহণ করুন।

কী এড়িয়ে চলবেন?

প্রক্রিয়াজাত খাবার: প্রক্রিয়াজাত খাবার ও পানীয়, যেমন মিষ্টি পানীয় ও জুস, পরিহার করুন।

অ্যালকোহল: মদ্যপান লিভারের জন্য ক্ষতিকর, তাই এটি এড়িয়ে চলুন।

চিনি ও ফাস্ট ফুড: অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এবং ভাজা খাবার থেকে দূরে থাকুন।

পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট: সাদা চাল, সাদা রুটি ও পাস্তা লিভারে চর্বি বাড়াতে পারে, তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন।

ব্যায়াম

নিয়মিত অনুশীলন: সপ্তাহে অন্তত পাঁচ দিন ৩০ মিনিটের জন্য মাঝারি ধরনের শারীরিক কার্যকলাপ করুন।

অ্যারোবিক ও রেজিস্ট্যান্স ট্রেনিং: হাঁটা, সাঁতার কাটা, বা নাচ করার মতো অ্যারোবিক ব্যায়াম এবং পেশী তৈরির ব্যায়াম করা যেতে পারে।

ফ্যাটি লিভারের ঘরোয়া প্রতিকার হলো পুদিনা, লেমনগ্রাস এবং আদা থেকে তৈরির সংমিশ্রণ। এই উপাদানগুলোতে লিভার-প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং এগুলো হজমে সাহায্য করে। এগুলো ফ্যাটি লিভার রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বেশ কার্যকরী।

ঠিক সময়ে চিহ্নিত করা না গেলে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণ হতে পারে। ফ্যাটি লিভার নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য খাবারের তালিকা এবং জীবনযাপনের ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে। সেইসঙ্গে কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও আপনাকে এই কাজে সাহায্য করতে পারে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা