বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫

মাত্রাতিরিক্ত চাপ এড়াবেন যে ১০ উপায়ে

বৈশাখী ডেস্ক
প্রকাশ : ১৯ অক্টোবর ২০২৫, ০৩:৫৫ পিএম

আমাদের জীবনে হাসি, আনন্দ, কষ্ট, ভালো কিংবা খারাপ সময়—এই সবকিছুরই মোকাবিলা করতে হয়। ব্যক্তিগত, পারিবারিক কিংবা সামাজিক বিভিন্ন কারণে প্রায়ই আমরা মানসিক চাপের মধ্যে থাকি। কিন্তু এই মানসিক চাপ যখন মাত্রাতিরিক্ত হয়ে যায় এবং অনেকদিন ধরে থাকে তখনই সেটা কিছুটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

তবে মানসিক চাপের পেছনে ঠিক কী কী কারণ জড়িয়ে আছে তা আমাদের নিজেদেরই খুঁজে বের করে সমাধান করতে হবে। আসুন জেনে নিন মানসিক চাপ দূর করার সহজ ১০টি উপায় সম্পর্কে।

১. কোথায় আপনার দায়িত্ব শেষ হয় সেটা বুঝুন

কারও পাশে দাঁড়ানো আর তার পুরো জীবন নিজের হাতে তুলে নেওয়া এক জিনিস নয়। কোনো বন্ধু সমস্যায় পড়লে আপনি তাকে সাপোর্ট করবেন। কিন্তু তার সিদ্ধান্ত, ভুল বা আবেগ ঠিক করা আপনার কাজ না।

২. সবাইকে খুশি করার চেষ্টা বন্ধ করুন

সবার মন জেতা দেখতে ভালো শোনালেও আসলে সেটা ক্ষতিকর হতে পারে। সত্যি কথা হলো—আপনি যা-ই করুন না কেন, সবাই আপনাকে ভালোবাসবে না, সবাই একমত হবে না, সবাই আপনাকে অনুমোদন দেবে না। আর এটা একেবারেই স্বাভাবিক।

৩. সব লড়াই লড়তে হবে না

প্রতিটি কথার জবাব দেওয়া দরকার নেই। প্রতিটি মতবিরোধ মেটানোও জরুরি না। অনেক কিছু না বলাই ভালো; যদিও আপনার ভেতরে ইচ্ছে করবে জিততে।

৪. আসক্তি ছাড়ার শক্তি শিখুন

এর অর্থ হল, আপনি কারও প্রতি যত্ন নেবেন, কিন্তু ফলাফলের সঙ্গে বাঁধা পড়বেন না। এটা মানে যত্ন না নেওয়া নয়; বরং ফলাফল আপনার শান্তি নষ্ট করবে না।

৫. 'না' বলতে শিখুন

অনেক সময় আমরা ভাবি 'না' বলা খারাপ কিছু। তাই লম্বা ব্যাখ্যা দিয়ে বোঝাতে চাই যে কেন পারছি না। কিন্তু বেশি ব্যাখ্যা দিলে অন্যরা তর্ক করার সুযোগ পায়—আপনার সীমারেখা ভাঙার পথ পেয়ে যায়।

৬. অপ্রয়োজনীয় তথ্য বর্জন করুন

আপনার মানসিক শক্তি তৈরি হয় আপনার চারপাশ থেকে—কথা, খবর, মিডিয়া, পরিবেশ। যদি সারাদিন নেতিবাচক খবর, গসিপ আর সমালোচনায় ভরা থাকে, তাহলে আপনি অপ্রয়োজনীয় বিষয় নিয়ে ভাবতে শুরু করবেন।

যেভাবে খাবার বাছাই করেন, সেভাবেই মনের খাবার বাছুন। যেসব মানুষ আপনাকে ভালো অনুভব করায় তাদের সঙ্গে সময় কাটান, আর যারা সবসময় নাটক করে তাদের এড়িয়ে চলুন।

৭. সহানুভূতি আর আত্মত্যাগকে গুলিয়ে ফেলবেন না

সহানুভূতি মানে কারও সঙ্গে অনুভব করা; আত্মত্যাগ মানে এতটাই ডুবে যাওয়া যে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেললেন। প্রথমটি সম্পর্ককে গভীর করে, দ্বিতীয়টি আপনাকে ক্লান্ত করে ফেলে।

৮. নিয়ন্ত্রণ ছাড়তে শিখুন

অনেক সময় আমরা অতিরিক্ত যত্ন নিই নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা থেকে। আমরা ভাবি, সবকিছু বা সবাইকে যদি নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাহলে খারাপ কিছু ঘটবে না। কিন্তু নিয়ন্ত্রণ আসলে বেশিরভাগ সময়ই এক ধরনের ভ্রম। যত বেশি আঁকড়ে ধরবেন, তত বেশি হতাশ হবেন।

৯. একা থাকার সময়কে গুরুত্ব দিন

সবসময় সবার জন্য হাজির থাকলে আপনার মানসিক শক্তি খরচ হয়ে যায়। একা থাকার সময় কোনো স্বার্থপরতা নয়—এটাই আপনাকে নতুন করে শক্তি দেয়।

১০. মনে রাখুন—শান্তিই সবচেয়ে দামি।

ধর্মীয় কাজে মনোনিবেশ করা, বাগানে সময় দেওয়া, নতুন রেসিপি রান্না করা ,বই পড়া, ভ্রমণ— যা করতে ভালো লাগে তাই করুন। আপনাকে স্বচ্ছতা দিন। এরপর সম্পর্ক আর দায়িত্বের কাছে আপনি আরও ধৈর্যশীল আর মনোযোগী হয়ে ফিরতে পারবেন।

একটা কথা মনে রাখবেন, খারাপ সময় সবার জীবনে থাকে। সেই খারাপ সময়কে সঙ্গে নিয়েই আমাদের হাসতে জানতে হয়, আনন্দ করতে হয়, জীবনের অজানা পথটুকু চলতে হয়। তাই যে কোনো উপায়েই নিজেকে ভালো রাখতে হবে, নিজেকে ভালোবাসতে হবে। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
বিকেলের নাস্তায় মজাদার পালংশাকের লুচি
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
যেভাবে আয়নার দাগ দূর করবেন
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
গলা ব্যথায় এড়িয়ে যাবেন যেসব খাবার
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা
ইসবগুলের পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা