
		জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড় চলছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে। বিএনপির আপত্তির পরও এতে বেশ কিছু বিষয় স্থান পাচ্ছে। তবে শতভাগ ঐক্য হওয়া বিষয়গুলো নিয়েই সিদ্ধান্তের পরামর্শ বিএনপির। আইনি ভিত্তি না থাকলে সনদে সই না করার সিদ্ধান্ত জামায়াতে ইসলামীর। আর গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সনদ বাস্তবায়নের দাবি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি)।
রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে ঐকমত্য তৈরির লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা শুরু করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এখন পর্যন্ত মোটা দাগে নির্বাচন কমিশন গঠনে সর্বসম্মতভাবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐক্য হয়েছে।
এছাড়া জাতীয় সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের নিয়োগ কমিটি না মানার শর্তে প্রধানমন্ত্রীর ১০ বছরের মেয়াদে রাজি বিএনপি। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার মতো বিষয়ে সবাই একমত হলেও এসবের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে রয়েছে মুখোমুখি অবস্থান।
তবে চলতি মাসেই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে দ্রুত বেগে এগোচ্ছে ঐকমত্য কমিশন। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন না কিংবা জ্যেষ্ঠতম বিচারকই প্রধান বিচারপতি হবেন, এমন নানা সিদ্ধান্তে বিএনপির আপত্তির পরও বৈঠকে উপস্থিত সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের মতামতে সিদ্ধান্তে পৌঁছাচ্ছে কমিশন। যদিও এসব সিদ্ধান্তে 'নোট অব ডিসেন্ট' থাকছে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘সংস্কার কোন প্রক্রিয়ায় বাস্তবায়ন হবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সনদে মৌলিক সংস্কার অন্তর্ভুক্তকরণ এবং এর আইনগত ভিত্তি থাকলেই আমরা সনদে স্বাক্ষর করব।’
এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি কী হবে, এটা নিয়ে বড় ধরনের বিতর্ক রয়ে গেছে। সেই জায়গা থেকে অধিকাংশ দলের মতামত গণভোটের। আমার গণপরিষদ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সংস্কার বাস্তবায়নের প্রস্তাব করেছি।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘দ্বিমত বা ভিন্নমত সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিয়ে শতভাগ ঐকমত্য তৈরি হওয়া বিষয় নিয়েই সনদ তৈরির পক্ষে বিএনপি। কমিশন চাপিয়ে দিলে গণতান্ত্রিক পথ রুদ্ধ হবে।’
ঐকমত্য কমিশনের অন্যতম সদস্য বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘সব বিষয়ে সর্বসম্মতভাবে একমত হওয়া সম্ভব নয়। রাষ্ট্র মেরামতে স্বৈরাচারী কাঠামোর পরিবর্তনে চেষ্টা করছে কমিশন। লক্ষ্য, চলতি মাসেই জাতীয় সনদ।’
মন্তব্য করুন