
		বক্তব্য দেয়ার সময় বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম উত্তপ্ত বক্তব্য দেন। পরে তার মন্তব্যে অনুতপ্ত হয়ে রবিবার (১২ অক্টোবর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে একটি পোস্ট করেন।
সারজিস লেখেন, প্রত্যেকবারই প্রোগ্রামের আগে তাদেরকে প্রোগ্রাম সম্পর্কে বলে রাখা হয়। প্রোগ্রামের পরেও ভদ্র ভাষায় বলা হয়েছে। কিন্তু তারপরও যখন একই চিত্র দেখা যায় তখন তাদের সাথে সুশীলতা প্রদর্শন করা প্রয়োজন মনে করিনা। তবে ক্ষোভ ঝাড়তে গিয়ে যে উপমা ব্যবহার করেছি সেটা করা উচিত হয়নি বলে মনে করি।
তবে তার অভিযোগ ও ক্ষোভ তুলে ধরতে ভোলেননি তিনি। পোস্টের শুরুতে বিস্তারিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, “বিগত এক মাসে পঞ্চগড় জেলায় এনসিপি ৩টি প্রোগ্রাম আয়োজন করেছে। প্রতিটি প্রোগ্রামে যখন আমি বক্তব্য দেওয়া শুরু করি তার এক দুই মিনিট পরে বিদ্যুৎ চলে যায়। প্রথমবার যখন হয়েছিল কিছু বলিনি। মনে হয়েছিল এটা হতেই পারে। দ্বিতীয়বার যখন একই ঘটনা ঘটে তখনও কিছু বলিনি কিন্তু তাদের ইনটেনশন নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। গতকাল আবার একই ঘটনা।”
“প্রোগ্রামের আগে-পরে নয়, অন্য কারো বক্তব্যের সময় নয়। ঠিক আমি যখন কথা বলা শুরু করি তখন আবার বিদ্যুৎ চলে যায়। কথা বলা শেষ হলে বিদ্যুৎ চলে আসে। সকল মিডিয়া এটার সাক্ষী।”
তিনদিন ভিন্ন সময়ে প্রোগ্রামগুলো হওয়ার পরও একই ঘটনা ঘটায় একে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দাবি করেন। তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন সেক্টরের কিছু কর্মকর্তা কিংবা অন্য দলের দালালিমূলক আচরণ করে থাকে, একজনকে ডিস্টার্ব করতে পারলে তাদের রাজনৈতিক সফলতা মনে করে।
সবশেষে তাদের ১০ ঘন্টা ধরে লং মার্চে পঞ্চগড় জেলার ১৫০ কিলোমিটার অতিক্রম করার কার্যক্রমের দিকেও যেন সংবাদমাধ্যম নজর ফেরায়, সে আশা রাখেন তিনি।
প্রসঙ্গত, গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে পঞ্চগড় শহরে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, সিন্ডিকেট ও দুর্নীতিসহ সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে পঞ্চগড় থেকে বাংলাবান্ধা পর্যন্ত লংমার্চ শেষ করে সমাপ্ত বক্তব্যের সময় তিনি ক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন, 'এর আগেও পঞ্চগড়ে এনসিপির প্রোগ্রাম চলাকালে বিদ্যুৎ গেছে। নেসকোর যে মালিক তাকে এবং তার বাপকে জবাব দিতে হবে, প্রোগ্রাম চলাকালে, এটা হয় কেন?'
তিনি আরও বলেছেন, 'এক দিন হইতো, দুই দিন হইতো কিচ্ছু বলতাম না, তিন দিনের তিন দিনই এটা হইছে। যারা এটা করছে, তারা হচ্ছে রাজনৈতিক... (শব্দটি প্রকাশযোগ্য নয়)। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নেব তাদের কলিজা কত বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।'
সারজিস আলম এসময় নিজের নাম উল্লেখ করে বলেন, 'আমি সারজিস আলম এখানে ঘোষণা দিয়ে যাচ্ছি, এরপর থেকে কোনো প্রতিষ্ঠান পঞ্চগড়ে যদি রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ করে, ওই প্রতিষ্ঠান এই পঞ্চগড়ে থাকবে না, এটা আমার নিজের কমিটমেন্ট।....আমরা স্পষ্ট করে বলি, পঞ্চগড়ের মাটিতে এই ধরনের ক্ষমতার অপব্যবহার করা, দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, সিন্ডিকেট পরিচালনাকারী, দখলদার, মাদক ব্যবসায়ীদের আমরা যত দিন বেঁচে আছি, তাদের আর শান্তির ঘুম হবে না। শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাদের আমরা আপাদমস্তক দেখে নেব, তাদের কলিজা কত বড় হয়ে গেছে।'
মন্তব্য করুন