
		ফেনীর পরশুরামবাসীর কাছে গরীবের হোটেল নামে খ্যাত ‘ইচ্ছেমতো দামের হোটেল’; এখানে ইচ্ছেমতো ভাত, সবজি, ডাল দিয়ে খাবার শেষে নির্ধারিত বক্সে ইচ্ছে মতো টাকা পরিশোধ করার সুযোগ রয়েছে। হোটেলের ক্যাশে কেউ না থাকলেও একটি বক্সে পছন্দমতো টাকা রেখে দেন কাস্টমাররা।
চলতি বছরেরর ১ আগস্ট থেকে চালু হওয়া ফেনী-বিলোনিয়া সড়কের পরশুরাম দক্ষিণ বাজারে চৌমুড়ি সংলগ্ন রাস্তার পাশে অবস্থিত এই হোটেলটি। এখানে দুপুরের খাবারে প্রতিদিন একটি তরকারি থাকে। হোটেল কর্তৃপক্ষ একেক দিন একেক তরকারি রান্না করেন। সপ্তাহে একদিন ডিম, একদিন মুরগির মাংস, একদিন মাছ রান্না করেন। সপ্তাহে প্রতি শুক্রবার বিরানী রান্না করেন।
ক্যাশিয়ার বিহীন কাউন্টারে রাখা একটি বক্সে ইচ্ছেমতো রেখে দেন টাকা। যে হোটেলের নাম ‘ইচ্ছে মতো দামের হোটেল’। হোটেল স্টাফদের দেখা নেই, ক্যাশ কাউন্টারের হাঁকডাক কিংবা বেলের ক্রিং ক্রিংও নেই; নেই সু-সজ্জিত টেবিলে খাওয়ার ধুম। হোটেল বলতে যে পাঁচমিশালি কথার হট্টগোল, সেসবের কিছুই নেই সেখানে।
প্রতিদিন বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য মানুষ হোটেলে দুপুরে খাবারের জন্য ভিড় করেন। ইতোমধ্যেই পরশুরামবাসীর কাছে গরীবের হোটেল নামে পরিচিতি পেয়েছে। তবে দিন দিন কাস্টমার বেড়ে যাওয়া হোটেল কর্তৃপক্ষ খাবার সরবরাহ দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
হোটেল মালিকের নাম নুর আহাম্মদ। তিনি একজন সরকারি চাকুরীজীবী; বাড়ি ফুলগাজী উপজেলায়। হোটেলটি পরিচালনা করেন তার ভাতিজা মীর হোসেন এবং আবুল কালাম।
হোটেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিন দেড়শ জনের জন্য খাবার রান্না করা হয়। দেড়শ জনের কাছে খাবার বিক্রি করে সর্বনিম্ন উদ্বোধনের দিন থেকে ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২০০ টাকা পেয়েছেন।
তিনি জানান, দুপুর হলেই নানা জায়গা থেকে এই হোটেলে এসে বসে পড়েন ছিন্নমূল মানুষ। একবেলা ভালো পরিবেশে ভালো খাবার খেয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন তারা। দোয়া করেন দু’হাত তুলে হোটেল মালিকের জন্য।
কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, বরং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের আশায় এমন উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে হোটেল মালিক বলছেন, ‘দেশে ও বিদেশে সচ্ছল ব্যক্তিদের সহযোগীতায় এটি পরিচালনা করা হচ্ছে। যে কেউ চাইলে এই হোটেলে অসহায়দের খাবারের জন্য সহযোগিতা করতে পারবে।
মালিক নুর আহাম্মদ এই মানবিক কাজে নিজেদের পরিচয় দিতে রাজি হননি। হোটেল মালিক নুর আহমেদের এমন উদ্যোগ প্রশংসা কুড়িয়েছে সব মহলে।
                    
মন্তব্য করুন