
		ড. পিয়েরদান্তে পিকিওনি, যিনি অনিচ্ছা সত্ত্বেও করেছেন টাইম ট্রাভেল। টাইম ট্রাভেল মানে হলো- সময়ের এক মুহূর্ত থেকে আরেক মুহূর্তে চলে যাওয়া বা বর্তমান থেকে ভবিষ্যৎ অথবা অতীতে ভ্রমণ করা। টাইম ট্রাভেল নিছকই এক সায়েন্স ফিকশন বা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী। বাস্তব জগতে এর কোনো ভিত্তি নেই।
ড. পিয়েরদান্তের জীবনে এই টাইম ট্রাভেলের কারণ হলো ২০১৩ সালে এক গাড়ি দুর্ঘটনা। ওই দুর্ঘটনায় মস্তিষ্কে মারাত্মক আঘাত পান ড. পিয়েরদান্তে। এতে তার স্মৃতি থেকে মুছে যায় পুরো ১২ টি বছর। দুর্ঘটনার ৬ ঘন্টা পর যখন হাসপাতালে তার জ্ঞান ফেরে, তার মনে হয়েছিল তখন ২০০১ সাল, এবং তিনি তার স্ত্রী কিংবা এখনকার প্রাপ্তবয়স্ক ছেলেদের কাউকেই চিনতে পারেননি। এক অজানা আতঙ্কে হতভম্ব হয়ে পড়েছিলেন পিয়েরদান্তে।
ড. পিয়েরদান্তে পিকিওনির ডাক নাম ছিল পিয়ের। জ্ঞান ফেরার পর ভেবেছিলেন স্ত্রীকে দেখবেন যৌবনা, সন্তানদের দেখবেন ছোট ছোট, কিন্তু স্ত্রী যখন ঢুকলেন, তিনি অবাক হয়ে গেলেন। তার মুখে অনেক বলিরেখা ছিল, বয়স যেন অনেক বেশি। পিয়েরকে এটাও মেনে নিতে হয় যে, তার সন্তানেরা বড় হয়ে গিয়েছে, এখন তারা প্রাপ্তবয়স্ক।
তারপর তার স্ত্রী জানালেন একটি হৃদয়বিদারক খবর। যাকে পিয়ের তখনও জীবিত ভাবছিলেন, তার "মা"— তিন বছর আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন।
এত স্মৃতি মুছে যাওয়ায় তিনি তার ডাক্তারি পেশা আর চালিয়ে যেতে পারেননি। এরপর খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেন, আগে কেমন মানুষ ছিলেন তিনি। হাজার হাজার ইমেইল ঘেঁটে জানতে পারলেন, তিনি অতীতে খুব একটা ভালো মানুষ ছিলেন না। এমনকি পিয়েরের সহকর্মীরা তাকে ডাকতো 'প্রিন্স অব বাস্টার্ডস' নামে।
ড. পিয়েরদান্তের এসব অভিজ্ঞতা এতটাই অদ্ভুত ছিল যে, সেই বর্ণনা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ইতালিতে একটি টিভি সিরিজ নির্মিত হয়েছে। যেখানে একজন তরুণ ডাক্তারকে গুলি করা হয় এবং পিয়েরের মতোই তার স্মৃতি থেকে মুছে যায় ১২ বছর।
মন্তব্য করুন